ওয়েব ডেস্ক: বন্ধুরা মজা করে “গেছো বাপি” বলে খেপায়। তবে এই “গেছো বাপি” ওরফে ধনঞ্জয় চক্রবর্তীকে এমন একটি অদ্ভুত নামেই বা ডাকারই বা কি কারণ? প্রাথমিক পরিচয়টা দিয়ে নেওয়া ভাল। ইনি হলেন আসলে কলকাতার ঐতিহ্যবহনকারী হলুদ ট্যাক্সির চালক।
তবে ধনঞ্জয়ের পরিচয়পত্রের পৃষ্ঠা এখানেই শেষ নয়। ধনঞ্জয় আজ প্রায় ১৪ বছরেরও বেশি সময় ধরে ট্যাক্সি চালাচ্ছে। তবে অন্যদের ট্যাক্সির সঙ্গে ওনার ট্যাক্সির বিস্তর তফাৎ।
ইনি নিজের ট্যাক্সির ভিতরে এবং ছাদে সাজিয়ে রেখেছেন প্রচুর গাছ। সারা কলকাতা শহরের মানুষই প্রায় তাঁর এই ট্যাক্সির সঙ্গে পরিচিত। কিন্তু এমন একটি ভাবনার কারণ? জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, অনেকেই গাছ লাগান কিন্তু তার যত্ন করেন না।
দিনের পর দিন যেতে যেতে মারা যায় সেই গাছগুলি। কিন্তু তিনি এমনটা চাননা। সেই কারণেই এমন এক অভাবনীয় ভাবনার সম্মুখিন হয়েছেন। এবং ধনঞ্জয় আরও বলেন, তাঁর ট্যাক্সিটি এসি নয়। তাই গাছগুলিই সাহায্য করে গাড়ির ভেতরটিকে ঠান্ডা রাখতে। তাতে যাত্রীদেরও শান্তি অনুভুত হয় গাড়িতে ওঠার পর। তাঁর গাড়ির উপরে একটি ঘাসের বড় ট্রে রাখা, যার ভার ৬৫ কেজি।
সেই ট্রেটিকে নিয়ে গাড়িটি চলার কারণে অনেক বেশি তেলও পোড়ে। কিন্তু সেইসবে তোয়াক্কা করেন না চল্লিশার্ধ ধনঞ্জয়। তিনি মনে করেন কিছু ভালো কাজ করতে গেলে যদি একটু বেশি খরচ হয়েই যায়, তাতে কিছু অন্যায় নেই। তাঁর এই ট্যাক্সির নাম দিয়েছেন, সবুজ রথ।
তবে এই রথটি তাঁর নিজের নয়। অমরিশ সিং এর মালিক। তবে তাঁর এই বিষয়গুলিতে কোনোদিনই কোনও আপত্তি নেই। অমরিশ বাবুকে জিজ্ঞেস করলে জানা যায়, ধনঞ্জয় হল সব থেকে সুরক্ষিত চালক। পরিবেশের এই অবস্থা। সারা দেশের মানুষকে বার্তা দেওয়া হচ্ছে পরিবেশ সচেতনতা নিয়ে। সেই জায়গায় দাড়িয়ে পিছিয়ে নেই ধনঞ্জয় বাবুও।
তিনি নতুন রূপে তাঁর এই ট্যাক্সিকে তুলে ধরেছেন। সারা ট্যাক্সির গায়ে আঁকা হয়েছে পরিবেশ সচেতনতা মূলক কার্টুন। যা দেখে যেন মানুষ নিজেই এই গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের হাত থেকে নিজেদের বাঁচাতে পারে, সেই কারণেই এই চেষ্টা।