Date : 2024-03-29

কৌশিকী অমাবস্যায় ৪ লক্ষ বার নাম জপেই নাকি দেখা মেলে মা তারার….

ওয়েব ডেস্ক: ভাদ্র মাসের ঘোর কালো রাত্রীতেই তারাপীঠ মহাশ্মশান হয়ে উঠেছিল মায়াময়। ভাদ্র অমাবস্যার রাতে এই মহাশ্মশানেই তারা মা দর্শন দিয়েছিলেন তাঁর প্রিয় পুত্র তন্ত্রসাধক বামদেবকে। মা,মা ধ্বনিতে আত্মহারা হয়ে সাধক বামাক্ষ্যাপা এই শ্মশানেই জ্যোর্তিময়ীর আহ্বান করে সিদ্ধিলাভ করেছিলেন। তারাপীঠে আগত মা তারার ভক্তদের বিশ্বাস কৌশিকী অমাবস্যার নিশিথেই তিনি ছুটে আসেন ভক্তের মনবাঞ্ছা পূরণ করতে।

যদিও হিন্দু পুরাণ অনুসারে কৌশিকী অমাবস্যার মাহাত্ম্য অন্যরকম। মার্কেণ্ডেয় পুরাণ অনুযায়ী শুম্ভ-নিশুম্ভকে বধের জন্য ‘দেবী দুর্গা’ যখন ক্রোধান্বিত হন তখন তাঁর ভ্রূকুটি যুগল থেকে ‘কৌশিকী দেবী’ আবির্ভূতা হন এবং অসুর ভাতৃদ্বয় শুম্ভ ও নিশুম্ভকে বধ করেন।

সেই থেকেই এই কৌশিকী দেবী ‘কালী’ তথা ‘মহাকালী’ রূপে পূজিতা হন। হিন্দু ধর্ম মতে এই অমাবস্যা তিথি নক্ষত্রেই কৌশিকী দেবী আবির্ভূতা হন। আর সেই কারণেই এই অমাবস্যা তিথি নক্ষত্রের নামকরণ হয় কৌশিকী অমাবস্যা। আবার কথিত আছে, কোষ কথাটি থেকে এসেছে কৌশি।

দেবী কালিকা তাঁর কৃষ্ণবর্ণ ত্যাগ করে এই অমাবস্যা তিথিতেই আলোকজ্জ্বল রূপ ধারন করেন। তাই দেবী কৌশিকী হলেন আলোর প্রতীক স্বরূপ। এই অমাবস্যার নিশিথকে আলোর আরাধনা করা হয়। শক্তির অন্যতম প্রতীক হল আলো। দেবী আদ্যাশক্তি মহামায়াকে সৃষ্টির আদিশক্তি আলোকশক্তি রূপে আরাধনা করা হয়ে থাকে। আগামী ২৯ আগস্ট সন্ধা ৭টা ৩৮ মিনিটে অমাবস্যার নিশি পূজা শুরু হবে তারাপীঠে। এই উপলক্ষ্যে তারাপীঠে প্রায় ৫ লক্ষ ভক্ত সমাবেশ ঘটে।

শোনা যায়, কৌশিকী অমাবস্যাতেই তারাপীঠ মহাশ্মশানের শ্বেতশিমূল বৃক্ষের নিচে তারা মায়ের অরাধনায় সাধক বামাক্ষ্যাপা সিদ্ধি লাভ করেছিলেন। সেই কারণে এই তারাপীঠকে ‘সিদ্ধিপীঠ’ও বলা হয়ে থাকে। তন্ত্র মতে মা তারাকে রাজভোগ, রাজবেশ অর্পন করার পর, মদ্য, মাংস, মৎস, মুদ্রা ও মৈথুন এই পঞ্চ ‘ম’কার উৎসর্গ করা হয়।

জয় মা তারা ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে আকাশ, বাতাস। এই দিনে কুশের আসনে উপবেশন করার সময় মা তারাকে যিনি আহ্বান করবেন তিনি তাঁর দর্শন পাবেন এমন কথা প্রচলিত রয়েছে। কলিযুগে ৪ লক্ষ ৮৬ হাজার বার মা তারার জপ করলেই তিনি ভক্তের মনোবাঞ্ছা পূরণ করেন। তাই এই দিনে মা তারার দ্বারে মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে অসংখ্য সাধক উপস্থিত হন।