Date : 2024-03-29

একদিন আত্মঘাতী হতে চেয়েছিল, আজ এই অটোচালক হাজারেরও বেশি মানুষদের মসিহা…

ওয়েব ডেস্ক: প্রত্যেকটা মানুষই কোনো না কোনো কষ্ট নিজের বুকের মধ্যে চেপে রেখে বেঁচে আছে। কিন্তু দাঁড়িপাল্লায় মাপলে কার কষ্ট কতোটা বেশি আর কেই বা আসলে সুখি তা বোঝা বেশ কঠিন।

চেন্নাইয়ের এক বছর ১৬র কিশোর মুরুগান, দশম শ্রেণীতে ফেল করায় নিজের মনে প্রতিজ্ঞা নিয়েই ফেলে যে এই জীবন সে আর রাখবে না। নিজেকে শেষ করে ফেলাই একমাত্র পথ।

বাড়ি থেকে বেড়িয়ে বাস ধরে সে চলে যায় ৫০০ কিমি দূরে একটি শহর সিরুমুগাইতে (কোয়েম্বাটর)। সেখানেই তার জীবন শেষ করে দেবে বলে ভাবে মুরুগান।

রাত ২টো নাগাদ একজন মানুষের সঙ্গে দেখা হয় ওনার। যিনি নতুন ভাবে জীবনে বেঁচে থাকার আশা জাগায়। সেই ভদ্রলোক ছিলেন একজন মুচি, ও মুরুগানে কাছে একটু খাবারের আশায় সাহায্য চাইছিলেন। ঠিক সেই মুহুর্তে দাঁড়িয়ে মুরুগান বুঝতে পারে যে তার থেকেও অনেক বেশি অসুবিধা ভোগ করে মানুষ বেঁচে আছে প্রতিদিন।

সারাদিন খাবার জোগাড় করতে না পারায় খালি পেটেই ঘুমিয়ে পড়া তার মধ্যে একটি। সেইদিন থেকেই মুরুগান ঠিক করে সেইসব মানুষদের মুখে রুটি তুলে দেবে যারা তা জোগাড় করার ক্ষমতা রাখে না। এতো বছর ধরে দিনের পর দিন নানা রকমের চাকরি করলেও দিনের শেষে সে ঠিক সময় ও টাকা বের করে আনে সেইসব মানুষদের খাবারের জন্য। পরবর্তীকালে ড্রাইভিং লাইসেন্স করিয়ে অটো চালাতে শুরু করে।

যেখান থেকে প্রতি মাসে উপার্জন হয় ৩০০০ টাকা। এই টাকার মধ্যে থেকে বেশিরভাগ অংশ দিয়েই সে কেনে খাবারের সরঞ্জাম। পরে মুরুগানের কিছু বন্ধুও সাহায্য করতে শুরু করে। তারা প্রতি সপ্তাহে ১০০ টাকা দিয়ে সাহায্য করতে শুরু করে। তাদের তৈরি খাবার মুরুগানরা বিতরণ করা শুরু করে বিশেষ শিশুদের জন্য। শুরু করেন একটি সংস্থা।

নাম দেন, নিঝাল মাইয়াম যার অর্থ ঘরহীনদের ছায়া। প্রতি রবিবার তারা প্রায় হাজারজনেরও বেশি মানুষকে খাওয়ায়। সারা সপ্তাহ ধরে টাকা উপার্জন করে ও সপ্তাহের শেষে এমন একটি কাজের সঙ্গে নিজেকে জুড়ে খুবই খুশি মুরুগান। প্রায় ২৫টি এমন পরিবারের দায়িত্ব তুলে নিয়েছে সে নিজের হাতে।