কলকাতা: বিপর্যয় যেন পিছু ছাড়ছে না বৌবাজারের। সোমবার দিনভর উত্তেজনা থাকার পর মঙ্গলবার ফের ভেঙে পড়ল বাড়ি। ১৩এ দুর্গা পিতুরি লেন বাড়িটি মঙ্গলবার সকালে হঠাৎ-ই ধসে পড়ে। দাঁড়িয়ে রয়েছে শুধু একতলার কলাপসিবল গেট। বাকি গোটা বাড়িটাই ভেঙে পড়েছে রাস্তার উপর। বাড়িটি থাকতেন শীল পরিবার। আর কিছুদিন পরেই সেই পরিবারের মেয়ে তৃষা শীলের বিয়ে। রবিবার দুপুরের পর থেকেই সেই স্বপ্নে যেন কে জল ঢেলে দিয়েছে। মেট্রো টানেল খোঁড়ার সময় মাটির নীচে ধসের কারণে ফাটল ধরে শীল বাড়িতে।
এরপরেই তাদের ঠিকানা হয় সেন্ট্রল এভিনিউ-এর ব্রডওয়ে হোটেলে। ওই হোটেলের ৩৬ নম্বর রুমের অস্থায়ী বাসিন্দা এখন শীল পরিবার। মঙ্গলবার দুপুরে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন করে বাড়ি থেকে জরুরি জিনিসপত্র নিয়ে আসার কথা ছিল শীল পরিবারের।
সব হিসেব বদলে মঙ্গলবার দুপুরেই ভেঙে পড়ল শীল বাড়ি। বাড়িতে ছিল একটি ছাপাখানা। সেটিও প্রায় ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। আগামী বছর ২২ জানুয়ারি শীল পরিবারের মেয়ের বিয়ের জন্য যা কেনাকাটা হয়েছিল তাও চলে গিয়েছে ধ্বংস স্তুপের মধ্যে।
বিয়ের শাড়ি, ধুতি, প্রণামী বাবদ প্রায় সাড়ে ১০ লাখ টাকা কেনাকাটা হয়েছে। যার সবটাই রয়েছে ১৩এ দুর্গা পিতুরি লেনের বাড়িতে। বাড়ির আলমারি মধ্যে রয়েছে বিয়ের সব গয়না। প্রায় ১২ লাখ টাকার গয়না রয়েছে আলমারিতে। কোনওভাবে একটু বাড়িতে ঢুকে সেই জিনিসগুলো নিয়ে আসার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাবেন তাঁরা। বিয়ে উপলক্ষ্যে লাখ লাখ টাকা খরচ করে বাড়ি রঙ করেছিলেন শীল পরিবার।
কিন্তু এই সবই এখন ধ্বংসস্তুপের নীচে। শীল পরিবারের সদস্যরা জানেন না কবে বাড়ি ফিরতে পারবেন তারা। শুধু শীল পরিবারের বাড়ি নয়, বৌবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার গার্ডরেলের উল্টো দিকে একবস্ত্রে দাঁড়িয়ে উৎকন্ঠার প্রহর গুনছেন এরমক একাধিক পরিবারের সদস্যরা। একে ধস তার উপর বৃষ্টি, ফলে উত্তর কলকাতার এই এলাকার পুরনো বাড়িগুলির অবস্থা ক্রমশ বিপদের দিকেই এগোচ্ছে।