ওয়েব ডেস্ক: দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিশেষ অতিথির সন্মানে সফরে গেলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। হিউস্টনের সমাবেশ ছাড়াও নিউইয়ার্কে অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় যোগ দেওয়ার কথা নরেন্দ্র মোদীর। রবিবার রাতে হিউস্টনের এনআরজি স্টেডিয়ামে নরেন্দ্র মোদীকে স্বাগত জানাতে অনাবাসী ভারতীয়সহ প্রায় ৫০ হাজার দর্শক উপস্থিত হন। টেক্সাসের এই মঞ্চে মার্কিন রাষ্ট্রপ্রধান ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে যৌথ বক্তব্য রাখেন তিনি।
২ ঘন্টার এই ঐতিহাসিক সমাবেশে উপস্থিত হয়ে নরেন্দ্র মোদী প্রথমেই কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বিলোপ নিয়ে কথা বলেন। এতেই আনন্দ উচ্ছাসে ফেটে পড়েন দর্শকেরা। এদিন মার্কিন রাষ্ট্রপ্রধান ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভারত মার্কিন বানিজ্যিক সম্পর্ক সহ একাধিক বিষয় নিয়ে যৌথ বিবৃতি দেওয়া হয়। প্রায় ১ ঘন্টা ৪০ মিনিট ধরে দুই রাষ্ট্রপ্রধান যৌথ বিবৃতি দেন। এদিন নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে পৌঁছতেই মোদীর মেগা শো দেখার জন্য তীব্র উচ্ছাস দেখা দেয়। শুধু অনাবাসী ভারতীয়রাই নয় , ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে অভ্যর্থনা জানাতে মার্কিনীদের মুখেও শোনা গেল জয় শ্রী রাম ধ্বনি!
ভার-মার্কিন যৌথ উদ্যোগে রুখে দেওয়া হবে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ। সীমান্তে অনুপ্রবেশ নিয়ে এবার ভারত-মার্কিন যৌথভাবে মোকাবিলা করা হবে। ইতিমধ্যেই ভারত-মার্কিন সেনাবাহিনী যৌথভাবে মহড়া দিয়েছে,এদিনের সভায় সেই কথা ফের একবার তুলে আনেন মার্কিন রাষ্ট্রপ্রধান ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই কথা বলার পরেই উচ্ছসিত হয়ে পরে গোটা স্টেডিয়াম, ঝড় বয়ে যায় হাততালির। একদিকে যখন এনআরসি নিয়ে দেশজুড়ে চাপা আতঙ্ক চলছে তখন ট্রাম্প হাউডি মোদীর মঞ্চ থেকে বলেন, অনুপ্রবেশ যেকোন দেশের নিরাপত্তার পক্ষে ভয়ঙ্কর। তাই সীমান্ত রক্ষায় ভারতের সহায়তায় পাশে থাকবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এমনটাই জানান তিনি। ট্রাম্প বলেন,”দক্ষিণ সীমান্তে অনুপ্রবেশ আটকে দিতে পেরেছি। অনুপ্রবেশকারীরা আমাদের করের টাকায় সমস্ত সুযোগসুবিধা নেয়। এটা চলবে না। বৈধ শরণার্থীরা কর দেন। দেশের নিয়ম-কানুন মেনে চলেন। তাঁরা স্বাগত।”
এদিন নাম না করে নরেন্দ্র মোদীকে পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারী দেন। তিনি বলেন, “সন্ত্রাসবাদ কড়া হাতে দমনের এবার সময় এসেছে।”প্রধানমন্ত্রী বলেন, ”ভারত যা করছে, তাতে কিছু লোকের সমস্যা হচ্ছে, যারা নিজেদের দেশ সামলাতে পারছে না। সন্ত্রাসবাদের সমর্থক। সন্ত্রাসকে কোলেপিঠে মানুষ করে। ওদের পরিচয় গোটা দুনিয়া জানে। আমেরিকায় ৯/১১ বা মুম্বইয়ে ২৬/১১ হামলার চক্রীরা কোথায় পাওয়া যায়? সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে নির্ণায়ক লড়াইয়ের সময় এসে গিয়েছে।”পাকিস্তানের নাম না করে মোদী আরও বলেন, ”ভারতের প্রতি ঘৃণাই ওদের রাজনীতির পুঁজি। ওরা অশান্তি চায়। সন্ত্রাসের সমর্থক।’ এদিন সভামঞ্চ থেকে হঠাৎ-ই নরেন্দ্র মোদী বাংলায় কথা বলেন। তিনি বলেন, “ভারতে সব ভালো আছে” দেশের ভাষাগত বিভিন্নতাকে কুর্ণিশ জানায় এদিন গোটা বিশ্ব।৩৭০ অনুচ্ছেদকেও বিদায় জানিয়েছে ভারত। ওই অনুচ্ছেদের জন্য বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তি সুযোগ তুলছিল। বাকি ভারতীয়দের মতোই অধিকার পেয়েছেন জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখের বাসিন্দারা। মহিলা, শিশু ও দলিতরা সুবিধা পাবেন। অবসান হয়েছে ভেদাভেদের।