Date : 2024-04-20

৩০ বছর পর কোজাগরী পূর্ণিমায় দুর্লভ যোগ, এই কাজগুলি ভুলেও করবেন না…

ওয়েব ডেস্ক: উমা ফিরেছেন দিন চারেক আগেই। ফিরে যায়নি আশ্বিনের শরৎ পূর্ণিমা। কথিত আছে এই সময় মাঠে পাকা ধান উঠত। পূর্ণিমার চন্দ্রালোকে সেই পাকা ধানের গন্ধে ইঁদুরের উপদ্রব বাড়ত। তাই রাত জেগে কৃষকরা পাহারা দিতেন ফসল ভর্তি পাকা ধানের ক্ষেত। রাত জেগে দীর্ঘ পরিশ্রম করেই ঘরে তুলতেন সোনার ফসল। তবেই হতো উপার্জন। কোজাগরী কথার উৎপত্তি সেখান থেকেই। “কো” অর্থাৎ ‘কে’, “জাগরী” অর্থাৎ ‘জেগে আছো’, কথিত আছে যিনি শরৎ পূর্ণিমার রাত্রি জাগেন মা লক্ষ্মী আসেন তাঁর গৃহে। এই বছর শরৎ পূর্ণিমায় রয়েছে দুর্লভ যোগ। জ্যোতিষ শাস্ত্র অনুসারে চন্দ্রের উপর দৃষ্টি থাকছে বৃহস্পতির। এই যোগকে “গজকেশরী” যোগ বলা হয়। এই মাহেন্দ্রক্ষণে ধনদেবীর আরাধনা অত্যন্ত শুভ। লক্ষ্মী দেবী হলেন ধন-সম্পদ ও ঐশ্বর্যের অধিষ্ঠাত্রী দেবী। সম্পদ কখনও স্থির থাকে না লেন দেন না হলে কি চলবে? ‘বানিজ্যে বসতে লক্ষ্মী’ তাই তাঁর আরেক নাম চঞ্চলা। এত কিছুর চক্করে পড়ে আনেকেই ভুলে যান লক্ষ্মী পূজার নিয়ম কানুন। সাধ্য মতো পুজো করতে গিয়ে অনেকেই নিজের মতো নিয়ম করে নেন কিন্তু এর ফলে হতে পারে হিতে বিপরীত।

জেনে নিন কোন কোন কাজ একেবারেই করবেন না লক্ষ্মী পূজার দিন,

তুলসী:- তুলসীকে মা লক্ষ্মীর সতীন মানা হয়। শিলায় আটকে পড়ার কারণে শ্রী বিষ্ণুর সঙ্গে বিয়ে হয় তুলসীর। তাই লক্ষ্মী পূজায় কখনই তুলসীর ব্যবহার করা উচিত নয়।

প্রদীপ:- লক্ষ্মী পূজায় কখনওই সরিষার তেলের প্রদীপ জ্বালাবেন না। বদলে তিল, তিসি অথবা ঘিয়ের প্রদীপ জ্বালাবেন।

ঘন্টা বাদ্য:- মা লক্ষ্মীর আর এক নাম চঞ্চলা। তিনি শব্দ বাদ্য পছন্দ করেন না। তাই লক্ষ্মী পুজায় কাঁসর বা ঘন্টা বাজালে অশান্তি নেমে আসবে সংসারে।

ধুপ দ্বীপ:- লক্ষ্মী দেবীর আরাধনা করার সময় ধুপ-দ্বীপ বাঁ দিকে রাখবেন। আর প্রসাদ ও নৈবিদ্য রাখবেন ডান দিকে।

পুষ্প:- লক্ষ্মী পুজোয় অবশ্যই অন্তত একটি পদ্মফুল অর্পন করবেন, যার রঙ অবশ্যই যেন লাল হয়। আর লাল রঙের দোপাটি ফুলে দেবেন অঞ্জলী।

ধানের ঝাঁপি :- নতুন পাকা ধান ও ধানের ছড়া ছাড়া লক্ষ্মী পূজা হয় না। শস্য ফসল সঙ্গে তিনি আনেন সাংসারিক সুখ ও সমৃদ্ধি, তাই অবশ্যই পাকা ধান পূর্ণ কলস বা বেতের ঝাঁপি দেবেন মা লক্ষ্মীকে। সঙ্গে সংসারিক জীবনে সুখ ও সমৃদ্ধি বৃদ্ধির জন্য অবশ্যই দেবেন আলতা ও সিন্দুর ও এক জন সধবা স্ত্রীর সাজের সামগ্রি। এই জিনিস ছাড়া লক্ষ্মী পূজা অসম্পূর্ণ।

ফসল কাটার আগে লক্ষ্মী পুজোর প্রতিটি রীতি নিয়মের সঙ্গে জড়িয়ে থাকে শস্যর পূজা। বিশেষত শরৎকাল নতুন ধান তোলার সময়। তাই গ্রাম বাংলার কৃষকদের কাছে শরৎ পূর্ণিমার বিশেষ মাহাত্ম্য রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের বাইরে আবার কোজাগরী লক্ষ্মী পূজার বিশেষ প্রচলন নেই। বাঙালির ঘরে সাদা আলপনা ছাড়া লক্ষ্মী পুজো অসম্পূর্ণ। নতুন চাল বেটে আলপনা দেওয়া হয়, আর নতুন ধানের ছড়া, নতুন ফল, সব্জি দিয়েই আরাধনা করা হয় দেবীর।