Date : 2024-04-26

#দেবীকুষ্মাণ্ডা: নবরাত্রী ব্রতর চতুর্থ রাতে সমস্ত কষ্ট হরণ করেন তিনি…

ওয়েব ডেস্ক: সুরাসম্পূর্ণকলশং রুধিরাপ্লুতমেব চ |
দধানা হস্তপদ্মাভ্য়াং কূষ্মাণ্ডা শুভদাস্তু মে ||


দেবী কুষ্মান্ডা

জগজ্জননীর পূর্ণ প্রকাশ দেবী কুষ্মাণ্ডার মধ্যে। তিনি মাতৃরূপের পূর্ণ প্রকাশ। সমগ্র ব্রহ্মাণ্ডের জননী। সন্তানকে রক্ষা করেন সমগ্র জাগতিক কষ্ট থেকে মুক্ত করেন। তিনি জগৎ প্রতিপালিকা শক্তি। দেবীকে শুধুমাত্র মালপোয়া ভোগ দিলেই সন্তুষ্ট হন।

নবরাত্রীতে দেবী দুর্গার যে চতুর্থ রূপের বন্দনা করা হয় তিনি হলেন দেবী কুষ্মান্ডা। ইনি অষ্টভূজা এবং বাঘের উপর সমাসীন। চতুর্থীতে দেবীর এই রূপের আরাধনা করা হয়। ইনি ব্যাধি থেকে মুক্ত করে ইহলৌকিক পরলৌকিক সমৃদ্ধি দেন।
তন্ত্রে দেবী প্রসঙ্গে যে শ্লোক আছে- “সুরাসর্মপ্ন কলসং রুধিরাপ্লুতমেব চ। দধানাহস্তপদ্মাভ্যাং কুষ্মাণ্ডা শুভদাত্ত মে।।” যদিও তার সঙ্গে এই দেবীর শরীরের সবটা মেলে না। তবে দেবীর নামের অর্থটি খুব সুন্দর ব্যাখ্যা করলেন। ‘উষ্মা’ শব্দের মানে তাপ। ‘কু’ মানে কুৎসিত-কষ্টদায়ক তাপ যাকে প্রকারন্তরে বলা হয় ‘ত্রিতাপ’। আধিভৌতিক – আধিদৈবিক ও আধ্যাত্মিক এই ত্রিতাপই জীবের দুঃখের কারণ। সর্বপ্রকার বন্ধনের কারণ এই ত্রিতাপ জ্বালা। জীব সদা জর্জরিত থাকে এই ত্রিতাপে।

এর হাত থেকে নিষ্কৃতি লাভই জীবের চরমকাম্য। এই ত্রিতাপ ‘কুষ্মা’ যিনি উদরে ধারণ করেন বা জীবের সকল প্রকার রোগ, জ্বালা, ব্যধী গ্রাস করেন, তিনিই দেবী কুষ্মাণ্ডা। ভিন্ন অর্থে বলা হয়, যখন সমগ্র মহাশুন্য অন্ধকারাচ্ছন্ন ছিল, কোথাও কোন বিন্দুর চিহ্ন ছিল না তখন দেবী আদিশক্তি নিজগুনে ব্রহ্মাণ্ড প্রসব করেন নিজ উদর হতে। ব্রহ্মাণ্ড প্রসবকালে তিনি আনন্দিত ও মৃদু হাস্যময়ী হয়ে তাঁর প্রীতি প্রকাশ করেন, এই দেবী হলেন কোটি কোটি ব্রহ্মান্ড প্রসবিনী দেবী কুষ্মান্ডা। সন্তানকে রক্ষা করতে জননী তার সমস্ত দুঃখ নিজে হরণ করেন। যেমন মহাদেব সমুদ্র মন্থনের সময় সমস্ত হলাহল পান করে নীলকণ্ঠ হয়েছেন, তেমনি জগজ্জননী দুর্গা আদ্যাশক্তি জগতের সর্বপ্রকার জ্বালা-যন্ত্রণার হাত থেকে সন্তানদের সর্বদা রক্ষা করতে করুণায় দ্রবীভূত হয়ে স্বেচ্ছায় সব তাপ নিজের শরীরে গ্রহণ করেন। দূরিতবারিণী-‘ত্রিতাপহারিণী’ সেই মায়ের নাম তাই দেবী কুষ্মাণ্ডা। কুষ্মাণ্ডা বলে তাঁর পরিচিত শুধুমাত্র বছরের দু দিন, শরৎ ও বসন্তের শুক্লা চতুর্থীর দিন। এই দেবী দুর্গা কাশীর দক্ষিণ দিকের রক্ষয়ত্রী।