ওয়েব ডেস্ক: সপ্তমীর সকাল মানেই নবপত্রিকা স্নান। রীতি মেনে শুরু হয় বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসবের। দুর্গাপুজোর একটি বিশেষ অঙ্গ নবপত্রিকা। আক্ষরিক অর্থে নবপত্রিকা মানে নতুন পত্র অথবা নয়টি পাতা। তবে দুর্গাপুজোর সঙ্গে জড়িত নবপত্রিকা মানে নটি উদ্ভিদ চারা। এই নটি উদ্ভিদ চারাকে দেবী দুর্গার নয়টি রূপ হিসাবে পুজো করা হয়। এই এক একটি চারাকে কি কি দেবী রূপে পূজা করা হয় জেনে নিন,
কলাবউয়ের মধ্যে থাকা এই নয়টি চারা বৃক্ষ আসলে দেবীর ৯টি রূপ। সেই নয়টি রূপের আরাধনা পদ্ধতিও আলাদা। আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের ৯টি রাত জুড়ে এই নয় দেবীর আরাধনা করা হয়।
কদলী বা রম্ভা- ব্রহ্মণী
কচু- কালিকা
হরিদ্রা বা হলুদ- উমা
জয়ন্তী- কার্তিকী
বিল্ব- শিবা
অশোক- শোকরহিতা
মান-চামুণ্ডা
ধান-লক্ষ্মী
এই নয়টি বৃক্ষকে শ্বেত অপরাজিতা মূল দিয়ে একজোড়া বেলের সঙ্গে বেঁধে তৈরি করা হয় নবপত্রিকা। তবে বাঙালির কাছে নবপত্রিকা মানে কলাবউ। বাঙালির রূপক প্রথমে নবপত্রিকা থেকে কলাবউ হয়েছে পড়ে সেই কলাবউ গনেশের বউ হতেও বেশিদিন সময় নেয়নি। কিন্তু এই নবপত্রিকার মধ্যেই একত্রে বাস করেন মা দুর্গা। মহাসপ্তমীর দিন থেকে এই নয়টি রূপকে নবপত্রিকার মধ্যে আহ্বান করা হয় এবং এই কলাবউ বা নবপত্রিকার মধ্যেই বাকি তিনদিনের পুজো চলতে থাকে। সপ্তমীর দিন ব্রাহ্মণের উপস্থিতিতে মন্ত্রচ্চারণের মাধ্যমে কলাবউকে গঙ্গাস্নান করানো হয়।
এরপর নতুন তাঁতবস্ত্র পড়িয়ে নিয়ে আসা হয় পুজো মণ্ডপে। এখানেই শেষ নয়, মণ্ডপে প্রবেশের পর দর্পনে দেবীর মহাস্নান হয়, আর তারপরেই নবপত্রিকায় সামনে দেবী চামুণ্ডার আহ্বান করা হয়। তবে নবপত্রিকা অন্য কোন দেবীকে আলাদা ভাবে আহ্বন করা হয় না। পুরাণ গবেষকদের কথায়, এই শারদীয়া তিথিতে আসলে শস্য দেবীর আরাধনা করা হয়। আর শস্যদেবীকে আদিমাতা অথবা প্রকৃতি বা পৃথিবী রূপে কল্পনা করা হয়। তাই দুর্গাপুজা প্রকারান্তরে ধরিত্রী বা বসুন্ধরার আরাধনা।