ওয়েব ডেস্ক: সিংহাসনগতা নিত্যং পদ্মাশ্রিতকরদ্বয়া
শুভাদাস্তু সদা দেবী স্কন্দমাতা যশস্বিনী।।
দেবী স্কন্দমাতা
দেবী ভগবতীর পঞ্চম রূপ দেবী স্কন্দমাতা। নবরাত্রির পঞ্চম দিনে পুজিতা হন দেবী । স্কন্দমাতা অর্থাৎ স্কন্দের মা , স্কন্দ হলেন দেব সেনাপতি কার্ত্তিক। আর তিনি কার্ত্তিকের জননী রূপেই পূজিতা হন। তাই তিনি স্কন্দমাতা নামে।
কার্ত্তিক জননী বেশে জগদম্বার রূপের বিশেষত্ব রয়েছে, তিনি চতুর্ভুজা উপরের দুই হস্তে ধারন করেছেন পদ্ম ফুল …নীচের দুই হাত এক হস্তে তিনি স্কন্দকে রক্ষা করছেন অপর হস্তে বরমুদ্রা। দেবী পদ্মাসনা সিংহের উপর বিরাজিতা। দেবীর কোলে যে স্কন্দ বা কার্ত্তিক বিরাজিত তিনি আমাদের বাংলায় পূজিত কার্তিকের থেকে আলাদা এইরূপটি কার্তিকের ষড়ানন মূর্তি। শিশু ষড়ানন কার্ত্তিক দেবী মায়ের কোলে নির্ভয়ে নির্বিঘ্নে বসে আছেন।
দেবীর কথা আমরা পাই স্কন্দ পুরাণে । দেবী সতীর দেহত্যাগের পর জকহ্ন দেবী আদিশক্তি পার্বতী রূপে পুনরায় জন্মগ্রহন করেন তখন প্রথমে শৈল্যপুত্রী রূপে প্রকাশিত হয় পরবর্তী সময়ে ব্রক্ষচারিনী রূপে প্রকাশিত হয়ে শিবকে তুষ্ট করেন ও পতিরূপে প্রাপ্ত করেন । দেবী পার্বতী ও শিবের অংশ স্কন্দ ষড়ানন কুমার কার্ত্তিক জন্মগ্রহন করেন তারকাসুরের বধের জন্য। পৌরাণিক গল্পে পাওয়া যায় কার্ত্তিকের শৈশব কালে যখন তিনি ক্রীড়া মগ্ন ছিলেন তখন অকস্মাৎ তারকাসুর তার সৈন্যদের নিয়ে কুমারকে বধের জন্য উদ্ধত হয় । ভগবতী পার্বতী কার্ত্তিকে রক্ষার্থে এই বিশাল প্রচণ্ড রূপ ধারন করেন ও সমস্ত অসুর সৈন্য বধ করেন ।দেবীর আশীর্বাদে কার্ত্তিক তারকাসুর বধ করেন।
দেবীর এই রূপ দেখলে যেমন বোঝা যায় তিনি ভীষণা অসুর বিনাশে উদ্যত ঠিক তেমনই তাঁর করুণাময়ী মমতাময়ী রূপটি প্রকাশিত হয়। তিনি জগত সংসারকে বার্তা দিচ্ছেন যেমন স্কন্দকে তিনি রক্ষা করছেন ঠিক তেমন ভাবেই সৃষ্টির প্রতিটি জীব মায়ের সন্তান তিনি তাদেরকেও সমান ভাবে রক্ষা করছেন ও অশুভ শক্তি নাশ করছেন। এই রূপটি থেকে আরও একটি কথা প্রকাশিত সন্তান যেমন সবচেয়ে বেশী নিরাপদ তাঁর মায়ের কোলে বা ক্রোড়ে মা যেমন তার সমস্ত শক্তি দিয়ে আমাদের মানুষ করেন রক্ষা করেন দেবী ভগবতী জগত জননী মাও ঠিক তেমন ভাবেই আমাদের রক্ষা করে চলেছেন ও অভয় দান করছেন। তিনি অভয় দিচ্ছেন সকল বিপদ থেকে তিনি আমাদের সর্বদা রক্ষা করবেন , তিনি যে রক্ষাকত্রী। এই রূপটি তারই প্রকাশ। তাঁর শরণাপন্ন হলেই আমরা সবথেকে বেশী নিরাপদ।