ওয়েব
ডেস্ক:-“ধনতেরাস”
মানে শুধুই
কেনাকাটা নয়। সোনা রুপো
ঘটি বাটি হাতা চামচ কিনে
গৃহে লক্ষ্মী লাভ হয়। নতুন
চকমকে ধাতুর জিনিসেই নাকি
আকৃষ্ট হন মা লক্ষ্মী। শুধু
এই পর্যন্ত জেনেই উৎসব পালন
করতে ব্যস্ত সকলে। কিছু
বছর আগেও যাকে অবাঙালিদের
উৎসব বলে মনে করা হতো উৎসব
প্রিয় বাঙালি এখন সেই অনুষ্ঠানকেও
আপন করে নিয়েছে। সমালোচকদের
মতে,
দুর্গাপুজো
এখন কর্পোরেট ফেয়ার।
বিজ্ঞাপন আর বানিজ্যের
ভিড়ে মুখ লুকিয়েছে ঐতিহ্য।
উৎসবের
এখন নিত্য নতুন নাম,
“ধনতেরাস”
কথাটি
হিন্দি,
কিন্তু
ফিরে ফিরে বেরায় বাঙালির মুখে।
নেপথ্যে সেই “উৎসব”।
অবশ্যই এর সঙ্গে জড়িত আছে ধর্ম, আর বিশ্বাস। তার সুযোগ নিয়েই একদল ব্যাবসায়ীর মুনাফা লাভের আশা, আর ক্রেতার মনকে শান্তনা দেওয়ার ইচ্ছা পূরণ। যাক্ লক্ষ্মী লাভ হলো তবে।
অনেকেই হয়তো জানেন না ধনতেরাস-এর উৎপত্তি কোথা থেকে। শাস্ত্র মতে,
ধন ত্রয়োদশী = ধনতেরস। এই ধন হল “জীবনধন”।সার্বিক ভাবে সুস্হ সমৃদ্ধ থাকার প্রার্থনা। রোগ থেকে আরোগ্যে যাওয়ার উপাসনা। ঈশ্বর “ধন্বন্তরী” র আরাধনার দিনই ধন্বন্তরী ত্রয়োদশী। প্রদীপ জ্বালান, প্রার্থনা করুন শুধু অর্থলাভের জন্য নয় আরোগ্য লাভের জন্যেও। এই ফলপ্রাপ্তি হলেই আপনাদের ঐশ্বর্য প্রাপ্তি ঘটবে। “রোগ” অর্থনাশ করে, জীবননাশ করে। গহনা রত্ন বাসনপত্র কখনো জীবনের সেরা প্রাপ্তি হতে পারে না।
কার্তিক মাসকে বলা হয় যম-মাস। এই সময় আকাশ প্রদীপ জ্বালান হয়। যম দুয়ারে কাঁটা দিয়ে আমরা ভাইবোনের আয়ু দাবি করি। বায়ুমণ্ডলের পরিবর্তন হতে থাকে। ঋতুসন্ধিতে আসে নানান রোগ জ্বালার প্রকোপ। সাবধানে থাকাই বিধিসম্মত। নাহলে জীবনহানি। সূর্যকে বলা হয় আত্মকারক। সূর্য প্রাণের প্রতীক। এ মাসে সূর্য উত্তর গোলার্ধ ছেড়ে দক্ষিণের দিকে যাত্রা করেন। দিনের চেয়ে রাতের আঁধার ভীষণ হয়ে ওঠে। বিকেল হতেই মন খারাপের শুষ্কতা নিয়ে নেমে আসে আঁধার। তাই রোগের প্রকোপ বাড়ে। আর আঁধারে মানুষের ভরসা ঈশ্বরেই। তাঁকে নিয়েই যে অনেক কল্পনা। শুভ, অশুভ কত কি হিসেব নিকেশ সেরে ফেলি। সেকারণেই “ধনতেরস” উদযাপনের মধ্যদিয়ে আয়ুআরোগ্যকে নিশ্চিত করে জীবনকে অমৃতময় করে তুলতে বলা হয়ে।
আমরা তা ভুলে গিয়ে ব্যবসায়ীদের হাতে আমাদের চেতনাকে বন্ধক দিয়ে প্রার্থনার দিনটিকে পণ্যের দিন বানিয়ে ফেলেছি। মনে রাখা প্রয়োজন জীবনের জন্য বিশ্বাস, বিশ্বাসের কারণে যে জীবন ধারন করা হয় তা অচল।