Date : 2024-04-26

জঙ্গলে ঘেরা জার্মানির বুকে এক টুকরো সোভিয়েত

ওয়েব ডেস্ক : জঙ্গলের মধ্যে বিশাল হলুদ রংয়ের একটি বিশাল বাড়ি।যার গার্ড হিসেবে সামনেই রয়েছে লেলিনের মূর্তি।এমন ভাবেই দীর্ঘ ২৫ টা বছর ধরে পরিতক্ত্য অবস্থায় পড়ে রয়েছে পূর্ব জার্মানির জঙ্গল ঘেরা বিশালাকারের এই বাড়িটি।পাশে রয়েছে আরও কয়েকটি বাড়ি। যা আদতে একসময় ছিল প্রায় ৪০ হাজার সৈন্যের বাস।পূর্ব জার্মানিতে যুদ্ধের সময় গভীর জঙ্গলে তৈরি করা হয়েছিল সৈন্যদের থাকার জন্য বিশালাকারের বাড়ি।যা এখন প্রায় খাঁ খা করছে।ঠাণ্ডা যুদ্ধের ছায়ায় পূর্ব জার্মানির অন্দরে একটুকরো সোভিয়েত ইউনিয়ন গড়েছিলেন রাশিয়ান সেনাবাহিনীর সৈন্যরা।বার্লিন থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে গভীর জঙ্গলে ঘেরা সেই জায়গাটির নাম উন্ডসড্রফ।জার্মান গণপ্রজাতান্ত্রিক দেশের বিভিন্ন অংশে প্রায় ৫ লক্ষের ও বেশি সৈন্য মোতায়েন করা হয়েছিল।পাইন গাছের গভীর জঙ্গলে ঢাকা এই বাড়িটিই ঠাণ্ডা যুদ্ধের সময় ব্যবহত হত হেডকোয়াটার হিসেবে।

জঙ্গলে ঘেরা এই বাড়িটির মধ্যে দোকান থেকে স্কুল এবং আরও নানান ধরনের সুবিধা ছিল।তবে এত কিছু সুবিধার সত্বেও এখানকার সৈন্যের জীবন কিন্তু মোটেই সহজ ছিল না।এখানে মোতায়েন সৈন্যদের ছিল না কোন ছুটি।স্ত্রী বা পরিচিতদের এই জায়গায় আসার ক্ষেত্রে ছিল কঠোর নিষেধাজ্ঞা।তবে উচু পর্যায়ের অফিসারদের ক্ষেত্রে এতো বিধিনিষেধ ছিল না।সৈন্যদের জন্য পড়ার ম্যাগাজিন তো বটেই, মনোরঞ্জনের ক্ষেত্রে রাশিয়া থেকে আসা ব্যালাড বা কোরাস দেখানোর ব্যাবস্থাও ছিল বলসই থিয়েটারে  । ছিল সুইমিং পুলও। ঠাণ্ডা যুদ্ধের সময় থেকে প্রায় ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত কাইজার উইলিয়াম ২, নাৎসি বাহিনী বা সোভিয়েত বাহিনীর এই অঞ্চলই ছিল মূল কেন্দ্র।

পড়ে থাকা সেই বাড়িগুলি এখন শুধুই নীরবতার সাক্ষী বহন করে।১৯৮৯ সালে বার্লিনের প্রাচীর ভাঙার পর সেই বাড়িগুলি থেকে রাশিয়ার সৈন্য সরতে শুরু করে।এবং ১৯৯৪ সালে সর্বশেষ রাশিয়ান সৈন্য এই স্থান থেকে চিরকালের জন্য বিদায় নেয়।দীর্ঘদিন ধরে থাকার পরও মাত্র ১২ ঘণ্টার নোটিশে সৈন্যদের সেখান থেকে সরে যেতে হয়েছিল।তবে এখন জার্মানির এই অংশে স্থানীয় সরকারের সহযোগীতায় তৈরী হয়েছে বাড়ি।রাশিয়ান নিদর্শন গুলি দেখতে প্রতি রবিবার এখানে ভিড় জমে সাধারণ পর্যটকের।।যেখানে জার্মানির বুকে সবার অগোচরে গড়ে উঠেছিল এক টুকরো সোভিয়েত।