ওয়েব ডেস্ক : উত্তর-পূর্বে কীভাবে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল প্রয়োগ করা হবে?
মিজোরাম, মেঘালয়ের সর্বত্র এবং অসম ও ত্রিপুরা-র কিয়দংশে সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের বিশেষ ক্ষমতা অনুসারে প্রশাসন চলে। এইসব এলাকা ভূমিপুত্রদের এলাকা। ত্রিপুরায় এই এলাকাগুলি ট্রাইবাল এরিয়াজ অটোনমাস ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিলের প্রশাসনিক এক্তিয়ারে পড়ে। তেমনই অসমে রয়েছে সংখ্যাগুরু ভূমিপুত্র এলাকা ডিমা হাসাও, কারবি আংলং আর বোড়োল্যান্ড টেরিটোরিয়াল এরিয়া ডিস্ট্রিক্ট। যেহেতু ষষ্ঠ তফসিলের আওতাভুক্ত এলাকাগুলি ছাড়া অসম ও ত্রিপুরার বাদবাকি জায়গায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের নিয়ম জারি হবে, তাতে ওইসব এলাকায় নাগরিকত্বের পরিচিতি নিয়ে রাজনীতি আরও উত্তপ্ত হতে পারে বলে অনেকেরই মত|
উত্তর-পূর্বে ইনার লাইন পারমিট কী?
ইনার লাইন পারমিট ব্যবস্থা বা আইএলপি ব্রিটিশ রাজের আমলে বৈধতা পায়| ১৮৭৩ সালের বেঙ্গল ইস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার রেগুলেশন অনুসারে এই পারমিট চালু হয়| ব্রিটিশ রাজের বাণিজ্য বাড়া্তেই এই স্পেশাল পারমিটের ব্যবস্থা হয়েছিল| অরুণাচল প্রদেশ, নাগাল্যান্ড ও মিজোরামে ভারতের নাগরিক সহ যে কোনও বহিরাগতেরই ইনার লাইন পারমিট লাগে| শুধুমাত্র ওখানকার ভূমিপুত্ররাই এই তিন রাজ্যে থাকতে পারেন, জমি কিনতে পারেন, কাজ পেতে পারেন| আগে থেকে এইসব বিধিনিষেধ ছিল বলেই ওইসব রাজ্য নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের অন্তর্গত হয়নি| উত্তর-পূর্বে শুধুমাত্র মণিপুর ইনার লাইন পারমিট ও ষষ্ঠ তফসিলের বাইরে ছিল| সোমবার কেন্দ্র আইএলপি-র আওতায় মণিপুরকেও এনেছে|
ভারতে এনআরসি তা্হলে সত্যিই হবে?
অসমের মতো সর্বভারতীয় স্তরে নাগরিকত্ব নথিভুক্ত করতে চাইছে কেন্দ্রের সরকার| কিন্তু অসমেই সেই কাজে যারপরনাই গাফিলতি ও স্বেচ্ছাচারের অভিযোগ উঠেছে| এমনকী, যারা অনুপ্রবেশকারী নয়, ভারতেরই নাগরিক তাদেরও নাম বাদ গিয়েছে| লোকসভার বিরোধী এমপি-রা এ ব্যাপারেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন| নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল বহিরাগত হিন্দু, শিখ, পারসি, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানদের আপনা থেকেই নাগরিকত্ব দিতে চাইছে, কিন্তু এই বিল আইনে পরিণত হলে এদেশেরই বাসিন্দা বহু মুসলমান নাগরিকের অধিকার খর্ব হতে পারে বলে বিরোধী জনপ্রতিনিধিরা ভয় পাচ্ছেন|