Date : 2024-04-27

অস্ট্রেলিয়ার দর্পচূর্ণ গাব্বায়, নয়া ইতিহাস লিখল তরুণ ভারতীয় দল

বিশ্বের বাকি প্রান্তে যাই হোক ব্রিসবেনে অস্ট্রেলিয়াকে হারানো না মুমকিন। তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে প্রবাদে পরিণত হয়েছিল গাব্বায় অস্ট্রেলিয়দের দাপট। ৩২ বছর পরে গাব্বায় অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে সেই ঐতিহাসিক প্রবাদকে হিমঘরে পাঠিয়ে দিল ভারতীয় দল। পঞ্চম দিনে ৩২৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে আপাত অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখাল ভারতীয় তরুণরা। স্টিভ স্মিথ, টিম পেইনদের চোখের সামনে দিয়ে শুধু টেস্ট নয়, সিরিজটাই জিতে নিলেন অজিঙ্কা রাহানেরা। তাও এমন এক টিম নিয়ে যার অধিকাংশই অনভিজ্ঞ। চোট আঘাত যে টিমকে মিনি হাসপাতাল বানিয়ে দিয়েছিল। তাও জিতল ভারত। বলা ভালো টেস্ট ক্রিকেটের জয় হল।

খেলার শেষ দিনে ভারতকে করতে হত ৩২৪ রান। হাতে ছিল ১০ উইকেট। কিন্তু শুরুতেই রোহিত শর্মাকে ফিরিয়ে দিয়ে ভারতীয় শিবিরে কাঁপন ধরিয়ে দেন প্যাট কামিন্স। দ্বিতীয় উইকেটে পার্টনারশিপ গড়ে তোলেন শুভমান গিল ও চেতেশ্বর পুজারা। দুজনে মিলে একশোর বেশি রানের পার্টনারশিপ গড়েন। ব্যক্তিগত ৯১ রানে শুভমানকে ফিরিয়ে দিয়ে জুটি ভাঙেন লিয়। তরুণ শুভমানের ইনিংস সাজানো ছিল আটটি চার ও দুটি ছয়ে। তৃতীয় উইকেটে অধিনায়ক অজিঙ্কা রাহানেকে নিয়ে ফের পার্টনারশিপ গড়ার চেষ্টা পুজারার। কিন্তু ব্যক্তিগত ২৪ রানে রাহানেকে ফিরিয়ে ফের ধাক্কা দেন কামিন্স। ১৬৭ রানের মাথায় তৃতীয় উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে ভারত। কিন্তু পুজারাকে সঙ্গী করে ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলতে শুরু করে দেন ঋষভ পন্থ। তাঁর প্রতিভার প্রতি সুবিচার করেই অস্ট্রেলিয় বোলারদের পিটতে শুরু করেন ঋষভ। দ্রুত গতিতে রান উঠতে শুরু করে দেয়। অন্যদিকে উইকেট কামড়ে পড়ে ছিলেন চেতেশ্বর পুজারা। ভারত দুশোর গণ্ডী পার করে দিতেই অশনি সঙ্কেত দেখতে শুরু করে অস্ট্রেলিয়া। বোলিংয়ে আরও ঝাঁঝ বাড়ানে থাকেন বোলাররা। বেশ কয়েকবার বুকে, হাতে, হেলমেটে খান পুজারা ও ঋষভ। সাফল্যও মেলে। কামিন্সের বলে ব্যক্তিগত ৫৬ রানে আউট হন পুজারা। ২১১ বলের ধৈর্যশীল এই ইনিংস আসলে কামিন্স, হেজলউডদের বোলিংয়ের বিষ অনেকটাই শুষে নেয়। এরপর দ্রুত সাজঘরে ফিরে যান ময়াঙ্ক আগরওয়াল। মনে হচ্ছিল ম্যাচে ফের জাকিয়ে বসছে অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু ষষ্ঠ উইকেটে ওয়াশিংটন সুন্দরকে সঙ্গী করে ৫৩ রানের যে পার্টনারশিপ গড়ে তোলেন পন্থ, সেখানেই স্পষ্ট হয়ে যায়, শেষবেলায় নাটকীয় কিছু হতে চলেছে। বিশেষ করে পন্থ। শেষবেলায় টি-২০ মেজাজে খেলতে শুরু করে দেন তিনি। ৯টি চার ও একটি ছক্কা সহযোগে ছিন্নভিন্ন করে দেন বিপক্ষের বোলারদের। ভারতের ৩২৫ রানের মাথায় শার্দূল ঠাকুরকে ফেরালেও ম্যাচ ততক্ষণে ভারতের দিকে ঢলে পড়েছে। শেষপর্যন্ত হাতে তিন উইকেট রেখেই জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ভারত। ১৩৮ বলে ম্যাচ জেতানো ৮৯ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন পন্থ। তাঁকেই ম্যাচের সেরা বেছে নিতে তাই দেরি হয়নি।