Date : 2024-04-25

মাটি কামড়ে আন্দোলনে কৃষকরা, টুইট যুদ্ধে দেশি-বিদেশি তারকারা

কৃষক আইন প্রত্যাহার নিয়ে কৃষক-কেন্দ্র তরজা অব্যাহত। সেই আন্দোলনের রেশ এবার সোশ্যাল মিডিয়াতেও। কৃষক আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে বিদেশি তারকারা টুইট করতেই জাতীয়তাবাদের ধুয়ো তুলে আসরে নেমেছে মোদী সরকার। বিদেশিদের ‘ঠান্ডা’ করতে এবং কার্যত সরকারের পাশে দাঁড়াতে টুইট, রিটুইট করেছেন দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের সেলিব্রিটিরা। সেই তালিকায় যেমন লতা মঙ্গেশকরের মতো ব্যক্তিত্ব রয়েছেন, তেমনই রয়েছেন সচিন তেন্ডুলকর, অক্ষয় কুমার, বিরাট কোহলি, অজয় দেবগণের মতো তারকারা। কৃষক আন্দোলনের পক্ষে বিদেশিদের সরব হওয়া ভালোভাবে নেননি তাঁরা। ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় ভারতীয়রাই বুঝে নিতে পারবে বলে বুঝিয়ে দিয়েছেন তাঁরা। যদিও সরকার বিরুদ্ধ স্বর শোনা গিয়েছে অভিনেত্রী তাপসী পান্নুর গলায়। তাপসীকে জবাব দিতে আবার কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন কঙ্গনা রানাউত।

তিন কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে নভেম্বর থেকে চলছে কৃষক আন্দোলন। বরফ গলেনি বেশ কয়েকদফার কেন্দ্র-কৃষক প্রতিনিধিদের বৈঠকে। প্রজাতন্ত্র দিবসে রাজধানীর বুকে আছড়ে পড়েছে কৃষক আন্দোলনের ঢেউ। এরই মধ্যে আগামী শনিবার জাতীয় সড়কগুলিতে চাক্কা জ্যামের কর্মসূচি নিয়েছেন আন্দোলনরত কৃষকরা। তারই রেশ পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়াতেও। কৃষক আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছেন রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী থেকে শুরু করে বিরোধী দলের নেতারা। টুইট করে সোশ্যাল মিডিয়ায় জড় তোলেন অনেক সেলিব্রিটিও। হ্যাশট্যাগ মোদীপ্ল্যানিংজেনোসাইড নামে একাধিক টুইট করেন সেলিব্রিটি থেকে রাজনৈতিক নেতারা। কড়া হাতে সেইসব প্রতিবাদ দমন করেছে মোদী সরকার। কেন্দ্রীয় তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রকের নির্দেশে বন্ধ করে দেওয়া হয় টুইটার হ্যান্ডলগুলি। কিন্তু ওই টুইটগুলি বাক স্বাধীনতার অঙ্গ এই যুক্তি দিয়েই টুইটার হ্যান্ডলগুলি ফের চালু করেছে টুইটার কর্তৃপক্ষ। এরপর কৃষক আন্দোলনকে সমর্থন করে টুইট করেন মার্কিন পপ তারকা রিহানা, পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ, মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের বোন মিনা হ্যারিস-সহ অনেকে। এরপরই পাল্টা সরব হতে দেখা যায় জাতীয়তাবাদের প্রশ্ন তুলে সরব হন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব থেকে শুরু করে ভারতের বিভিন্ন ক্ষেত্রের নামজাদা কয়েকজন তারকা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের টুইট, ‘কোনও প্রচারেই ভারতের ঐক্য নষ্ট হওয়ার নয়’। এরপর আন্তর্জাতিক জনমতকে কোণঠাসা করতে একে-একে টুইট করেন সচিন তেন্ডুলকর, লতা মঙ্গেশকর, অক্ষয় কুমার, অজয় দেবগন। হ্যাশট্যাগ ইন্ডিয়া ইউনাইটেড, ইন্ডিয়া এগেনস্ট প্রোপাগান্ডা দিয়ে টুইট করে বিদেশি বিরোধিতায় সরব হন তাঁরা। সব টুইটেরই একটাই ভাষা, ভারতের যে কোনও বিষয় ভারতীয়রাই বুঝে নেবে। টুইট-যুদ্ধের অবশ্য এখানেই শেষ নয়। মোদী সরকার ও সরকারের সমর্থকদের বিরোধিতায় এবার বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কৃষক আন্দোলনের পক্ষে হ্যাশট্যাগ ওয়ার্ল্ড সাপোর্টস ইন্ডিয়ান ফার্মারস দিয়ে টুইট করা হচ্ছে। ফলে ভারতের কৃষক আন্দোলন যে আগামীদিনে আন্তর্জাতিক রূপ নিতে পারে সেই সম্ভাবনাই প্রবল হচ্ছে।