Date : 2024-04-26

পশ্চিমবঙ্গ সিনড্রোমে সিঁদুরে মেঘ দেখছে বিজেপি

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য , ইনপুট এডিটর : নরেন্দ্র মোদী অপরাজেয়। ২০১৪ এর আগে নরেন্দ্র দামোদর দাস মোদীকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী ঘোষণা করার পর থেকেই তাঁর ভাবমূর্তি সযত্নে গড়ে তুলেছে আর এস এস। সেই ভাবমূর্তি হলো নরেন্দ্র মোদী অপরাজেয় । ভক্তদের মনে গেঁথে দেওয়া হল “মোদী হ্যায় তোঁ মুমকিন হ্যায়”। পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের আগে পর্যন্ত মোদীর এই ব্যক্তিত্ব নির্মাণের সামনে কুঁকড়ে ছিলেন বিরোধী নেতারা। ব্যতিক্রম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ব্যতিক্রম পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের ফল। এই নির্বাচন জাতীয়স্তরে বার্তা দিয়েছে মোদী- অমিত শাহ অপরাজেয় নয়। তাঁদের শুধু হারানো নয় , গোহারান হারানো যেতে পারে।

এরপরেই জাতীয় স্তরে বিরোধী নেতাদের মুখ ও শরীরের ভাষা বদলে গিয়েছে।এই আক্রমনের মুখে দাঁড়িয়ে মোদীর ভাবমূর্তি নিয়ে চিন্তিত সঙ্ঘ পরিবারকে আসরে নামতে হয়েছে। চাপ যে বেড়েছে তার প্রমান ২০১৪ তে ক্ষমতায় আসার পর এই প্রথম প্রধানমন্ত্রী মোদী নিজের অবস্থান থেকে সরলেন। টিকানীতি বদল করতে বাধ্য হল কেন্দ্র। এই পরিপ্রেক্ষিতেই পশ্চিমবঙ্গে মুকুল রায়ের দলবদলকে দেখতে হবে। এতদিন, দেশের বিভিন্ন রাজ্যে বিরোধী দল ভেঙ্গে তাঁদের এলোমেলো করার কৌশলকে বিজেপি শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিল।

সেই সমীকরণেই বাংলা জিততে অতি বড়,বড়,মাঝারি,ছোট নেতাদের ঝাঁপানোর পাশাপাশি শুরু হয়েছিল তৃণমূলকে ভাঙ্গার খেলা। গুজরাট, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা এই অস্ত্রেই বিরোধীদের দিশাহারা হয়ে পড়াই দস্তুর হয়ে উঠেছে।

পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে এই অস্ত্র ভোঁতা হওয়ার পড়ে এবার মুকুল রায় বিজেপি ছাড়ায় এখন স্রোত উল্টোমুখে।মুকুলকাণ্ডে অন্য বিরোধী দলের মতো এই রাজ্যে বিজেপিরও দিশেহারা অবস্থা। দলের মধ্যে অন্তরকলহের ধোঁয়া পাকিয়ে উঠেছে। পাশাপাশি দলের ভিতরে সন্দেহের তালিকায় বিধায়ক, সাংসদদের নাম জুড়ছে। আর কে তৃণমূলে যেতে পারেন টা মরিয়া হয়ে খুঁজতে শুরু করেছে বিজেপি নেতৃত্ব। মুকুল রায়কে আপাতত রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের “আকার ও আয়তন ” বাড়ানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এই খবরে বিজেপির নাড়ির গতি আরও বেড়েছে।

মুকুল রায়ের হাত ধরে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে গিয়েছেন এমন সাংসদ, বিধায়কের সংখ্যা কম নয়। তাঁদের রাজন “মুকুলদা”র পথে পা বাড়াবেন এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে ব্যস্ত বিজেপি নেতারা।পশ্চিমবঙ্গের এই উল্টোস্রোতের প্রভাব উত্তরপ্রদেশে পড়ার আশঙ্কা শুরু হয়েছে পদ্ম শিবিরে। যদিও উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচন এখনও দূরে। বিজেপির ভয় উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনে কৃষক অসন্তোষ, করোনা মোকাবিলায় যোগী সরকারের ব্যর্থতার সঙ্গে যদি পশ্চিম বঙ্গ সিনড্রোম যোগ হয় তাহলে ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনের আগে বড় ধাক্কা আসবে।