স্নেহাশীষ চট্টোপাধ্যায়, রিপোর্টার : ভবানীপুরে এখনই নির্বাচন না করলে সাংবিধানিক সঙ্কট তৈরি হতে পারে বলে লেখা মুখ্যসচিবের বক্তব্যকে হাতিয়ার করে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল কমিশন। কিন্তু তার কোনো ব্যাখ্যা শুক্রবার হাইকোর্টে দিতে পারল না নির্বাচন কমিশন। বৃহস্পতিবার নির্দেশ দেওয়া হলেও এদিন তারা ভুলে ভরা এবং ত্রুটিপূর্ণ হলফনামা জমা দেওয়ায় তা গ্রহণ করেনি আদালত। একই সঙ্গে সেখানে আদালতে তোলা প্রশ্নের কোন জবাব না থাকায় বিরক্ত হাইকোর্ট শুনানি শেষ হলেও রায়দান স্থগিত রেখেছে।
তবে এই মামলায় হাইকোর্ট আরও একটি নতুন প্রশ্ন উস্কে দিয়েছে, যার শুনানি আগামীতে চলবে বলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে। আদালতের বক্তব্য, সারা ভারতবর্ষে ভোটে জেতার পর সেই আসন অন্যের জন্য ছেড়ে দেওয়া বা নতুন করে ভোট করানোর পরিস্থিতি তৈরির প্রবণতা রয়েছে। এর জন্য জনসাধারণের টাকা খরচ করতে হচ্ছে। আদালতের প্রশ্ন, এমন ক্ষেত্রে নতুন করে ভোটের খরচ কেন জনগণের টাকায় হবে? আগামী দিনে বৃহত্তর স্বার্থে এই শুনানি হবে বলেও জানিয়েছে হাইকোর্ট।
গত১৩”ই সেপ্টেম্বরে মামলার শুনানিতে ভবানীপুর উপ নির্বাচন নিয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিব হরেকৃষ্ণ দ্রিবেদী কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন কে দেওয়া চিঠির যৌক্তিকতা নিয়ে জনস্বার্থ মামলায় তীব্র বিরোধীতা করলেন রাজ্য সরকার। হাইকোর্টে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে রাজ্য সরকারের পক্ষে এডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত জানিয়েছিলেন নির্বাচনের দিন ঘোষণা হয়ে যাওয়ার পর তার যাবতীয় দায়িত্ব কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের ওপর বর্তায়। সেখানে আদালত কোনভাবেই হস্তক্ষেপ করতে পারে না ,এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের একাধিক রায় রয়েছে। উত্তরে মামলাকারীর পক্ষের আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যের দাবি এমন কোন সাংবিধানিক সংকট দেখা দেয়নি যাতে করে রাজ্যের মুখ্য সচিবকে চিঠি দিয়ে নির্বাচন কমিশনকে জানাতে হবে শুধুমাত্র ভবানীপুর কেন্দ্রে উপ নির্বাচন করার জন্য।
রাজ্যের মুখ্য সচিবের দেওয়া নির্বাচন কমিশনকে চিঠিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম উল্লেখ করা রয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভবানীপুর কেন্দ্র থেকে উপনির্বাচনে লড়াই করবেন সুতরাং ছয় মাসের মধ্যেই সেখানে উপনির্বাচন করা না হলে সেক্ষেত্রে সাংবিধানিক সংকট দেখা দিতে পারে । যদিও মামলাকারীর পক্ষের আর এক আইনজীবী সায়ন ভট্টাচার্যের একটি দাবি করেন মুখ্যসচিব হরেকৃষ্ণ দ্বিবেদী কোন ব্যক্তির নাম নির্দিষ্ট করে কোন রকম চিঠি তারাকেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন কে দিতে পারেন না , তাই এই মামলায় শুনানি দ্রুত প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
মামলাকারী এবং রাজ্যের এডভোকেট জেনারেল এর উদ্দেশ্যে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বলেন নির্বাচনে নির্ঘণ্ট ও প্রকাশ হয়ে যাওয়ার এত দেরিতে কেন আপনারা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন ? আদালতের করণীয় কি? নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে মামলাকারী সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরে জানান নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়ে যাবার পরেই আমরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।