Date : 2024-04-20

“এ কি হলো ? কেনো হলো ? কবে হলো ? ঠিক হলো ? ভুল হলো ? বাবুল চলে তৃণমূল

সঞ্জু সুর, রিপোর্টার : “একদিন পাখি উড়ে যাবে যে আকাশে, ফিরবে না সে তো আর…” কিশোর কুমারের একটা বিখ্যাত গানের লাইন। কিশোর ভক্ত বাবুল সুপ্রিয় এই মুহূর্তে ঠিক এই গানটা গুনগুন করছেন কি না জানা নেই, তবে নিশ্চিত করেই বিজেপি-র এরাজ্যের নেতারা বা দিল্লির নেতারা বেশ জোড় গলাতেই এই গানটা গাইছেন।

এই তো মাত্র মাস ছয়েক আগেকার কথা। বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী হিসাবে টালিগঞ্জের এমাথা থেকে ওমাথা ঢুঁড়ে ফেলেছিলেন বাবুল। তৃণমূলের মহারথী অরুপ বিশ্বাস কে অবশ্য হারাতে পারেন নি। তবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভায় রদবদলে নিজের মন্ত্রীত্ব যাওয়ার পর থেকেই কোথায় যেন একটা তাল কেটেছিলো। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অত্যন্ত স্নেহভাজন বাবুল তারপর থেকেই রাজনীতি বিবাগী হয়ে পড়েন। এমনকি ৩১ জুলাই রাজনীতি ছাড়ার কথাও ঘোষণা করে দেন। তারপর থেকে এই দেড় মাসে তাঁকে খুব একটা দেখা যায় নি। দেখা গেল কোথায় ! না, একেবারে ৯ ক্যামাক স্ট্রীটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসে। এক ফুল ছেড়ে বাবুল যোগ দিলেন জোড়া ফুলে।

এই মুহূর্তে এর থেকে বড় রাজনীতির চমক অন্ততঃ বাংলার বুকে আর কি হতে পারে! সামনেই ভবানীপুর কেন্দ্রে ভোট। কিছুদিন আগে এই ভবানীপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থীর সমর্থনে যে স্টার ক্যাম্পেনারের তালিকা প্রকাশ করেছিলো বিজেপি, সেই তালিকায় থাকা বাবুল সুপ্রিয় নিজেই চলে এলেন তৃণমূল শিবিরে। তৃণমূলে যোগ দিয়ে বাবুল জানালেন তিনি সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেবেন। তিনি বাংলার জন্য কাজ করতে চান। তৃণমূলে যোগ দিয়ে প্রথম সাংবাদিক সম্মেলনে বাবুল সুপ্রিয় যা বললেন তা এরকম, “রাজনীতি ছাড়ার কথা মন থেকেই বলেছিলাম।”

“গত চারদিনে যা ঘটার ঘটেছে।”
“অনেক কটাক্ষ আসবে জানি।”
“সব জেনেই আমি তৃণমূলে যোগ দিচ্ছি।”
“বাঙালি হিসাবে বাংলার জন্য কাজ করতে চাই।”

এদিকে বাবুল সুপ্রিয়-র দল ছাড়া প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা ও বাবুল সুপ্রিয়ের খুব কাছের বন্ধু স্বপন দাসগুপ্ত ট্যুইট করে বলেছেন,”বাবুল সুপ্রিয় দলের একজন অ্যাসেট ছিলো। ওর দল ছাড়ার ঘটনা দুঃখজনক।” বাবুল সুপ্রিয় কে ঠিক কি কাজে তৃণমূল ব্যবহার করবে তা সময়েই বলবে। তবে যশবন্ত সিনহা, সুস্মিতা দেবের পর বাবুল সুপ্রিয়র তৃণমূলে যোগদান জাতীয় রাজনীতিতে তৃণমূল কংগ্রেস কে আরো বেশি প্রাসঙ্গিক করে তুলছে বলেই মত তৃণমূলের অনেক শীর্ষ নেতার। পাশাপাশি তাঁরা মনে করেন এইভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক যুগলবন্দী ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির অনেক রাতের ঘুম কাড়বে।