সঞ্জু সুর রিপোর্টার : ২০১১-র সেপ্টেম্বর মাস। সারা দেশের নজর তখন এরাজ্যের ভবানীপুর কেন্দ্রের উপনির্বাচনে। এই প্রথমবার রাজ্য বিধানসভার প্রার্থী হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিয়েছেন তিনি। কিন্তু বিধানসভার সদস্য না হওয়ার কারণে উপনির্বাচনে প্রার্থী হওয়া। রাজ্যের উপনির্বাচনের সঙ্গে সাযুজ্য রেখেই ভোট পড়লো খুবই কম। মাত্র ৪৪.৭৩ শতাংশ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রার্থী, তাও এত কম ভোট পড়া। সেটাও একেবারে নেত্রীর হোম গ্রাউন্ডে। ফলে মার্জিন নিয়ে ইষৎ চিন্তিত ছিলেন তৃণমূলের ছোট,বড়, মেজ প্রায় সব নেতারাই। কিন্তু ভোটের ফল প্রকাশের পর সকলেই আপ্লুত। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুধু জেতেন ই নি। রেকর্ড মার্জিন করলেন তিনি। প্রাপ্ত ভোটের ৭৭.৪৬ শতাংশ ভোট পড়ল মমতার ঝুলিতে। উল্টোদিকে বাম প্রার্থী নন্দিনী মুখোপাধ্যায় পেয়েছিলেন মাত্র ২০.৪৩ শতাংশ ভোট। জয়ের মার্জিন ছিলো ৫৪,২১৩ ভোটের।
কাট টু ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচন। এবার আর উপনির্বাচন নয়। সরাসরি প্রার্থী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উল্টোদিকে বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী আরেক ডাকাবুকো নেত্রী। ২০১১-র উপনির্বাচনের তুলনায় ভোটের হার যথেষ্ট বেশি, প্রায় ৬৬.৮৩ শতাংশ। কিন্তু ১১-র তুলনায় ভোটের হার ও মার্জিন দুটোই কমলো এবার। ২০১১-র তুলনায় প্রায় ৩০ শতাংশ ভোট কম পেয়ে জোটের প্রার্থী দীপা দাশমুন্সি কে হারালেন ২৫,৩০১ ভোটে।
এবার অর্থাৎ ২০২১ এ অবশ্য ভবানীপুর কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী করেছিলো বর্ষীয়ান শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় কে। ৫৭.৭১ শতাংশ ভোট পেয়ে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ২৮,৭৯১ ভোটে হারালেন বিজেপির রুদ্রনীল ঘোষ কে।
চার মাসের মধ্যে সেই ভবানীপুরেই আবার উপনির্বাচন। আবার প্রার্থী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সদ্য বিরোধীদের বিপুল বিরোধীতার মধ্য থেকে জয়লাভ করে তৃতীয় বারের জন্য ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল কংগ্রেস। মুখ্যমন্ত্রী হয়েই নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণে রেকর্ড করে ফেলেছেন মমতা। ইতিমধ্যেই স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড, লক্ষীর ভান্ডার বা কৃষক বন্ধু(নতুন) প্রকল্পের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। বিরোধীরাও ছত্রভঙ্গ। ফলে সবকিছু মিলিয়ে ২১-এর এই উপনির্বাচনে ১১-র ফলাফলকে ছাপিয়ে গিয়ে নতুন রেকর্ড করাই এখন চ্যালেঞ্জ তৃণমূল নেতা কর্মীদের।