সায়ন্তিকা ব্যানার্জি, রিপোর্টার :ইতিহাস গড়ার মুখে বাংলা। কলকাতায় প্রথম বার ফুসফুস প্রতিস্থাপন হতে চলেছে মুকুন্দপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে। গুজরাটের সুরাটে এক রোগীর মরণোত্তর ফুসফুস দানের পর তার ফুসফুস বাংলার রোগীর শরীরে বসতে চলেছে। কলকাতার ওই রোগী কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিলেন, তার ফুসফুসের অবস্থা ভালো না থাকার জন্য একমো সাপোর্টে রাখা হয় তাকে। গ্রিন করিডোর করে ফুসফুস নিয়ে আসা হবে হাসপাতালে। আজ রাতেই অপারেশন হবে।
মেডিকা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি ওই রোগী করোনায় আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হওয়ার পর ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন। আর তারপরই অবস্থা ক্রমে খারাপ হতে শুরু করে। তারপর গত ১০৩ দিন ধরে একমো সাপোর্টে রাখা হয় ৪৬ বছর বয়সী ওই ব্যক্তিকে। দ্বিতীয়বার করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর নষ্ট হয়ে যায় তাঁর ফুসফুস। ফুসফুস প্রতিস্থাপন ছাড়া রোগীকে বাঁচানোর আর কোনও পথ ছিল না।
অন্যদিকে গুজরাটের সুরাটে এক রোগীর ব্রেন ডেথ হয়ে যাওয়ার পরে তার ফুসফুস দান করার সিদ্ধান্ত নেয় পরিবার। খোঁজ চলে এই মুহুর্তে কার ফুসফুসের দরকার। এবং তার পরেই বাংলার এই রোগীর কথা জানা যায়। সমস্ত পরীক্ষা করার পর চিকিৎসকেরা সিদ্ধান্ত নেন, ফুসফুস প্রতিস্থাপন করার।
তড়িঘড়ি যাবতীয় ব্যবস্থা করা হয়। শল্য চিকিৎসকদের দল উড়ে যান গুজরাটে। সন্ধে ৭.৩০টা নাগাদ ফুসফুস কলকাতায় নিয়ে আসার প্রস্তুতি শুরু হয় এবং কলকাতা বিমানবন্দর থেকে হাসপাতাল পর্যন্ত গ্রিন করিডোর করার ব্যবস্থাও শুরু হয়। প্রস্তুতি শুরু হয় হাসপাতালেও। ২০ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে প্রতিস্থাপনের প্রস্তুতি।
আজ কিছুক্ষণ আগেই ফুসফুস নিয়ে চিকিৎসকরা আসেন বিমানবন্দরে। হাসপাতাল সূত্রে খবর অপারেশন শুরু হবে আজ রাতেই। জটিল এই অপারেশন করতে সময় লাগবে ৬-৮ ঘন্টা।
চিকিৎসকেরা আশাবাদী এই অপারেশনে তারা সফল হবেন। এবং এই অপারেশন সফল হলে তা যে কলকাতা তথা বাংলার চিকিৎসা ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী ঘটনা হয়ে থাকবে তা বলাই বাহুল্য।