Date : 2024-03-29

প্রকৃতির হাতে তৈরি লিভিং রুট ব্রিজ

স্মৃতি বিশ্বাস : এতদিন সাজানো গোছানো ঝাঁ চকচকে কংক্রিটের সেতু দেখছেন। কিন্তু কখনো শুনেছেন কি, জীবন্ত প্রাকৃতিক সেতু। শুধু চোখে দেখা কানে শোনাই নয়, আপনি চাইলে সেই জীবন্ত প্রাকৃতিক সেতু হেঁটে পারাপার করতেও পারেন। তবে এই জীবন্ত সেতু পর্যন্ত পৌঁছতে গেলে আপনাকে গাঁটের কড়ি খরচ করতে হবে বেশ ভালোই । কারণ জীবন্ত সেতুর ঠিকানা সুদূর মেঘালয় । আসুন এবার জীবন্ত সেতুর রহস্যটা ঠিক কী, জেনে নিন।

মেঘালয়ের রাজধানী শিলং-এ আছে একটি ছোট্ট গ্রাম মাওলিনং। ওই গ্রামের ওপর দিয়েই বয়ে গেছে থাইলং নদী। এলাকায় বসবাস করেন খাসি উপজাতির মানুষজন। এই নদীর পাড় মজবুত করার জন্য স্থানীয়রা নদীর পাড় বরাবর ফাইকাস ইলাস্টিকা নামের বিশেষ প্রজাতির রাবার জাতীয় গাছ লাগিয়ে থাকেন। সেই গাছের শিকড় মাটির নীচে থাকলেও শাখা প্রশাখাগুলি মাটির উপর উঠে এসে আড়াআড়িভাবে জড়িয়েই তৈরি হয়েছে জীবন্ত সেতু বা লিভিং রুট ব্রিজ।

যেহেতু শিকড়গুলি বাড়তে থাকে প্রাকৃতিক নিয়মে তাই এর নাম লিভিং রুট ব্রিজ বা জীবন্ত সেতু। নদীর এপার আর ওপারের গাছের শিকড়গুলির মেলবন্ধনেই নদীর ওপর তৈরি হয়েছে সেতু। গোটা সেতুটি তৈরি করতে প্রকৃতি সময় নেয় প্রায় 20 বছর। আর হ্যাঁ, শুধু দেখতে ভালো লাগে বললেই চলবে না, শিকড় জড়িয়ে তৈরি হওয়া এই সেতুকে যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম হিসেবেও ব্যবহার করেন স্থানীয়রা। একসঙ্গে প্রায় 50-60 জন মানুষের ভার বহন করতে সক্ষম জীবন্ত সেতু। এই সেতু একবার পুরো তৈরি হয়ে গেলে একশো বছরেও এর কোন ক্ষয় হয় না। বন্যার সময় জলের তোড়ে কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয় না লিভিং রুট ব্রিজের।

তবে শুধু মাওলিং গ্রামেই নয়, লিভিং রুট ব্রিজ মেঘালয়ের অনেক জায়গাতেই তৈরি করেছে প্রকৃতি, নিজের খেয়ালেই।
তাহলে কী ভাবছেন। কংক্রিটের জঙ্গল থেকে বেড়িয়ে, পাহাড় বৃষ্টি আর সবুজের সমাহারে যদি হারিয়ে যেতে চান কিছুদিন, তাহলে আপনার পারফেক্ট ডেস্টিনেশন হতেই পারে উত্তর পূর্ব ভারতের মেঘালয়। বাড়তি পাওনা প্রকৃতির হাতে তৈরি লিভিং রুট ব্রিজ বা জীবন্ত সেতু।