Date : 2024-03-29

রাত পোহালেই দুয়ারে রেশন। আপাতত পাইলট প্রজেক্ট হিসাবে

সঞ্জু সুর, রিপোর্টার : অবশেষে অপেক্ষার অবসান। বুধবার থেকেই আপনার দুয়ারে রেশন পৌঁছে যাচ্ছে। তবে আপাতত পাইলট প্রজেক্ট হিসাবে প্রকল্পের কাজ শুরু করা হচ্ছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে নভেম্বর মাস থেকেই পুরোদমে চালু হয়ে যাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আরো একটি স্বপ্নের প্রকল্প।

১২ আগষ্ট নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলন করার সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন ভাইফোঁটার দিন থেকে অর্থাৎ ৬ নভেম্বর থেকে রাজ্যে দুয়ারে রেশন প্রকল্প পুরো দমে চালু হয়ে যাবে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এরপরেই খাদ্য দফতরের মন্ত্রী রথীন বিশ্বাস ও দফতরের সচিব পারভেজ সিদ্দিকী-র নেতৃত্বে বৈঠক করেন খাদ্য দফতরের আধিকারিকরা।

এই বিষয়ে পরামর্শ নেওয়া হয় মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে গঠিত উচ্চ পর্যায়ের কমিটির কাছ থেকেও। কিভাবে রাজ্যের প্রায় ১০ কোটি ৩৩ লক্ষ মানুষের দুয়ারে রেশন পৌঁছে দেওয়া যাবে, তাই নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক হয় খাদ্য দফতর ও নবান্নে। এত বিশাল পরিমান মানুষের কাছে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া যথেষ্ট কষ্টসাধ্য কাজ। খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে রেশন ডিলারদের ভূমিকা কি হবে, এই বিষয়টাও মাথায় রাখতে হয়েছিলো। কারণ এত সংখ্যক রেশন ডিলারদের বাদ দিয়ে এই বিপুল কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকাঠামো খাদ্য দফতরের নিজের ছিলো না। সেই সময়েই ঠিক হয় নভেম্বর মাসে সম্পূর্ণভাবে এই প্রকল্প চালু করার আগে পাইলট প্রজেক্ট হিসাবে দুয়ারে রেশন চালু করে দেখে নিতে হবে কোথায় কি খামতি আছে বা কোথাও কোনো সমস্যা হচ্ছে কিনা।

সেই মোতাবেক বুধবার থেকে পাইলট প্রজেক্ট হিসাবে রাজ্যের প্রতিটি জেলাতেই দুয়ারে রেশন চালু হচ্ছে। তবে বুধবার প্রতিটি জেলাতে চালু হলেও, প্রতিটি রেশন ডিলারের মাধ্যমেই বাড়ি বাড়ি রেশন পৌঁছে দেওয়া হবে না। যেহেতু পাইলট প্রজেক্ট তাই রাজ্যের মোট ২০ হাজার ৭০০ রেশন ডিলারের ১৫ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ৩,১৪৪ টি রেশন ডিলারকে বেছে নেওয়া হয়েছে। রাজ্যের উত্তর থেকে দক্ষিণ, প্রতিটি জেলা থেকেই রেশন ডিলার বাছা হয়েছে। খাদ্য দফতরের অনুমান ডিলার পিছু সাড়ে চার হাজার ইউনিট বা গ্রাহক হলে, এই পাইলট প্রজেক্টের মাধ্যমেই প্রায় এক কোটি একচল্লিশ লক্ষ মানুষের দুয়ারে রেশন পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে। এক নজরে দেখে নিই কোন জেলায় ক’জন ডিলার পাইলট প্রজেক্টের অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে।
উত্তর ২৪ পরগনা – ১৭১
ব্যারাকপুর সাব ডিভিশন- ৯৬
বর্ধমান – ২৪৬
মূর্শিদাবাদ -২০৯
দক্ষিণ ২৪ পরগনা – ২০১
বাঁকুড়া – ১৯১
নদীয়া – ১৮৪
পঃ মেদিনীপুর – ১৭২
পুরুলিয়া – ১৬৭
হুগলী – ১৪৮
পূর্ব মেদিনীপুর – ১৩৬
মালদহ – ১১৩
উঃ দিনাজপুর – ১০৫
হাওড়া – ১০৩
কোচবিহার – ৯২
আলিপুরদুয়ার – ৬৯
সহ কালিম্পং জেলাতেও ৩০ টি ডিলারের মাধ্যমে এই খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হবে।
খাদ্য সামগ্রী বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে আপাতত রেশন ডিলাররা নিজেরাই গাড়ির ব্যবস্থা করে নেবে। এরজন্য খাদ্য দফতর ডিলারদের আলাদা করে কোনো খরচ দেবে না। তবে খাদ্য সামগ্রী বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার জন্য ইউনিট পিছু ৭৫ পয়সা করে কমিশন দেওয়া হবে। আপাতত একমাস এই ব্যবস্থা চালু থাকবে। খাদ্য দফতর সূত্রে খবর, এক মাস পর দুর্গাপূজার পর পুরো বিষয়টি নিয়ে রিভিউ মিটিং করা হবে। তারপরেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।