Date : 2024-04-25

কাবুলে প্রতিবাদ ইয়াসমিনেরই লড়াই

শাহিনা ইয়াসমিন, নিউজ রিপোর্টার : আব্দুল গাফ্ফর খান। মহাত্মা গান্ধীর অহিংস আন্দোলনের ছায়ায় এতোটাই আবৃত ছিলেন যে সীমান্ত গান্ধী নামেই তাঁকে চিনতো লোকে। পাশতুন এই আফগান নেতা, এই উপমহাদেশে হিন্দু-মুসলিম সৌহার্দ্যের পুজারী ছিলেন। শালগাছের মতো দীর্ঘ এই মহামানবের নাতনি ইসায়মিন নিগর খান নিজের পাঁজর জ্বালিয়ে সেই শিখা বহন করে চলেছেন। কলকাতার পার্কসার্কাসে বসে অল ইন্ডিয়া পাখতুন জিরগা-ই-হিন্দের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন এই কন্যা।

আফগানিস্তানের আকাশে ফের ধর্মান্ধ তালিবানি শাসনের কালো মেঘ। আফগানি মহিলা ও শিশুদের পায়ে বেড়ি পড়ানোর পালা শুরু। মেয়েদের ঘরের বাইরে পা রাখা নিয়ে তালিবানি ফতোয়া। ভেসে বেড়াচ্ছে বাতাসে। বোরখা পড়তে হবে।বাড়ির বাইরে বেরোতে হলে পুরুষ সঙ্গী প্রয়োজন। কেড়ে নেওয়া হয়েছে কাজের অধিকার। এই দমবন্ঘধ করা পরিস্থিতি থেকে মুক্তির জন্য ইতিউতি প্রতিবাদে নেমেচেন মেয়েরা। মরু-পাহাড়ে ঘেরা সূদুর আফগানিস্তান থেকে তাঁর কাছেও আসছে সাহায্যের আবেদন। এই পরিস্থিতিতে মন ভালো নেই সীমান্ত গান্ধীর নাতনির।

কাবুল বিমানবন্দরে মা তাঁর শিশু সন্তানকে কাঁটাতারের উপর দিয়ে মার্কিন সেনার দিকে ছুঁড়ে দিচ্ছেন। সন্তানের ভবিষ্যত্ চিন্তায় অসহায় মার এই সমর্পনের দৃশ্য টেলিভিশনের পর্দায় দেখেছে বিশ্ব। অসংখ্য আফগানিই পেরোতে চাইছেন দেশের সীমান্ত। নেট বেয়ে এই আকুল আবেদন আসছে ইয়াসমিন নিগর কানের কাছে। ভারতে বসবাসকারী অনেক আফগান সেখানে গিয়ে আটকে পড়েছেন। তাঁরা ফিরে আসতে মরিয়া।

তালিবানি শাসনের শিকল ভাঙতে চাইছেন আফগানি কন্যারা। নদী, সমুদ্র, পর্বত পেরিয়ে সেই সাহসিকতার দিনলিপি পড়ছে বিশ্ব। সুদূর কলকাতায় বসে সেই সাহসিনীদের কুর্নিশ জানাচ্ছেন ইয়াসমিন।প্রার্থনা করছেন জারি থাকুক প্রতিবাদ, প্রতিরোধ।

ইয়াসমিনের বিশ্বাস দানবীয় শাসন চিরস্থায়ী হতে পারে না। মানুষকে অসুখী রেখে কোনও সরকারই মসনদে টিকতে পারে না। পৃথিবীর ইতিহাসও এই পাশতুন লালনার বিশ্বাসের সঙ্গী।