Date : 2024-04-25

জোর সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পে। বাজেটে ব্যয় সংকোচনের নির্দেশ অর্থ দফতরের।

সঞ্জু সুর, রিপোর্টার : আগামী অর্থ বর্ষের জন্য এখন থেকেই বাজেট তৈরীর নির্দেশ দিলো রাজ্য অর্থ দফতর। মূলতঃ সংশোধিত বাজেট তৈরীর নির্দেশ‌ই দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি প্রায় দেড় বছর আগে থেকেই সব দফতরকে ২০২২-২৩ আর্থিক বছরের বাজেট এস্টিমেট তৈরির নির্দেশ দিলেন রাজ্য অর্থ দফতরের সচিব মনোজ পন্থ।রাজ্য বাজেটে বিভিন্ন দফতরের খরচের জন্য একটা আগাম বরাদ্দ ধরা হয়। সেই বাজেট বরাদ্দ থেকেই খরচ করে বিভিন্ন দফতরগুলো। অনেক ক্ষেত্রেই বাজেট অতিরিক্ত খরচ হয়ে যায়। কিন্তু কোভিডের কারণে গত বছর থেকেই বাজেট অতিরিক্ত খরচে রাশ টানে রাজ্য সরকার। সেই মর্মে বিভিন্ন দফতরকে নির্দেশ ও পাঠায় অর্থ দফতর। এমনকি কোনও দফতর বরাদ্দ অর্থ খরচ করতে না পারলে সেই অর্থ রাজ্য কোষাগারে ফেরৎ পাঠানোর নির্দেশ ও দেওয়া হয়েছিলো।

সোমবার রাজ্যের অর্থ দফতরের পক্ষ থেকে যে মেমো ইস্যু করা হয়েছে তার দুটি ভাগ রয়েছে। এক, ২০২১-২২ আর্থিক বছরের জন্য ‘সংশোধিত বাজেট’ তৈরী করতে বলা হয়েছে। দুই, ২০২২-২৩ আর্থিক বছরের জন্য এখন থেকেই ‘বাজেট এস্টিমেট’ তৈরির নির্দেশ ও দিয়েছেন অর্থ সচিব মনোজ পন্থ। অর্থ দফতরের জারি করা মেমো তে একটা বিষয় নির্দিষ্ট করে বলা হয়েছে। সেটা হলো ব্যয় সংকোচন। কিন্তু কেন ব্যয় সংকোচনের পথে হাঁটতে চাইছে রাজ্য সরকার ? একটা বিষয় তো অবশ্যই কোভিডের কারণে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে খরচ অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি লকডাউনের ফলে থমকে যাওয়া অর্থনীতির কারণে রাজ্যের কোষাগারে টান পড়ছে। এর সঙ্গে অবশ্যই রয়েছে বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প।

বিধানসভা নির্বাচনের আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে প্রতিশ্রুতিগুলো দিয়েছিলেন, ক্ষমতায় এসে সেগুলো বাস্তবায়নের পথে রয়েছে রাজ্য। ইতিমধ্যেই ‘নতুন কৃষক বন্ধু’ প্রকল্প, ‘স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড’ চালু হয়েছে। চালু হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর অন্যতম স্বপ্নের ‘লক্ষীর ভান্ডার’ প্রকল্পে আবেদন নেওয়ার কাজ। নবান্ন সূত্রে খবর, দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে ইতিমধ্যেই যে তিন কোটির বেশি মানুষ এসেছেন তার মধ্যে ‘লক্ষীর ভান্ডার’ প্রকল্পেই প্রায় দুই কোটি আবেদন জমা পড়েছে। এই প্রকল্পের কথা মাথায় রেখেই বাজেটে প্রায় এগারো হাজার কোটি টাকা আলাদা করে ধরে রাখা হয়েছিলো। কিন্তু যে বিপুল পরিমানে মানুষ এই প্রকল্পে আবেদন করেছে তাতে এই প্রকল্পের খরচ সতেরো থেকে আঠারো হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে। এছাড়াও প্রায় প্রতি বছরই আমফান বা ইয়াশের মতো ঘূর্ণিঝড়ের ফলে ক্ষয়ক্ষতির কথাও মাথায় রাখতে হচ্ছে। এইসব বিভিন্ন কারণেই সব দফতরের বাজেটের ক্ষেত্রে ব্যয় সংকোচ করতে চাইছে রাজ্য। যাতে সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প গুলো চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অর্থ কোনো বাঁধা হয়ে না দাঁড়ায়। তাই এত আগে থেকে বাজেট তৈরীর নির্দেশ বলেই মনে করছেন নবান্নের আধিকারিকরা।