Date : 2024-03-19

রাজ্যে তৃতীয় বন্দর। তাজপুরের জন্য ডাকা হলো গ্লোবাল টেন্ডার

সঞ্জু সুর, রিপোর্টার : কলকাতা ও হলদিয়া বন্দরের পর আরো একটি বন্দর পেতে চলেছে রাজ্য। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তাজপুরে গ্রীণফিল্ড বন্দর তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তাজপুরে গভীর সমুদ্র বন্দর তৈরির জন্য সোমবার‌ই গ্লোবাল টেন্ডার ডেকেছে রাজ্য সরকার। ফলে অবশেষে দীর্ঘ টানাপড়েন এ ইতি পড়তে চলেছে।

এক হাজার একর জমির উপর গড়ে উঠবে তাজপুর বন্দর। তবে এর জন্য কোনো জমি অধিগ্রহণ করতে হবে না রাজ্য সরকারকে। রাজ্যের হাতেই রয়েছে সেই জমি। জমির ইয়ারমার্ক ইতিমধ্যে করে ফেলেছে সরকার।তাজপুর বন্দর তৈরির জন্য যে গ্লোবাল টেন্ডার ডাকা হয়েছে তার আবেদন জমা দিতে হবে ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে। সেই আবেদন খতিয়ে দেখে নির্মাণকারী সংস্থাকে বরাত দেওয়া হবে। ১৬,০০০ কোটি টাকার এই প্রকল্পে প্রথম পর্যায়ের জন্য ১০ হাজার কোটি টাকা এবং দ্বিতীয় পর্যায়ের জন্য ছয় হাজার কোটি টাকা খরচ ধরা হয়েছে। প্রত্যক্ষ ভাবে ১০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। প্রথম পর্যায়ে ছটি বার্থ ও পরের পর্যায়ে আরো নটি বার্থ তৈরি হবে এই বন্দরে। পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) মডেলে তৈরি এই বন্দর নির্মানকারী সংস্থাকে ৯৯ বছরের জন্য লিজ দেওয়া হবে। এই বন্দরের সঙ্গে নিকটতম হাইওয়ের রোড কানেক্টিভিটি ও রেলপথের যোগাযোগের ব্যবস্থা করবে রাজ্য। ৩৫০ মিটার প্রস্থ ও প্রায় ১৬ মিটার নাব্যতা থাকায় তাজপুর একটি গভীর সমুদ্র বন্দর হিসাবে কাজ করতে পারবে।

২০১৯ সালে প্রথম এই বন্দর তৈরির কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সময় ঠিক হয়েছিলো কেন্দ্র রাজ্য যৌথ উদ্যোগে এই বন্দর তৈরি করা হবে। এমনকি রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে নিজেদের অধিকাংশ শেয়ার ও কেন্দ্র কে দিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু কেন্দ্র সরকারের টালবাহানায় শেষ পর্যন্ত ২০২০ সালের শেষের দিকে রাজ্য সরকার নিজেই এই বন্দর তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়। প্রসঙ্গত কলকাতা পোর্ট নদী বন্দর হ‌ওয়ায় ও তার ক্যাচমেন্ট এরিয়ার নাব্যতা কম হ‌ওয়ায় বড় আকারের জাহাজ এখানে প্রবেশ করতে পারে না। ফলে ব্যবসায়ীদের কাছে ক্রমশঃ গ্রহণযোগ্যতা কমছে কলকাতা বন্দরের। অন্যদিকে হলদিয়া বন্দর বলা হলেও এটা মূলত কলকাতা বন্দরের দূরবর্তী ডক হিসাবেই কাজ করে। ১২ টা বার্থ থাকলেও নাব্যতা মাত্র ৬/৮ মিটার। ফলে বড় ধরনের কার্গো শিপ হলদিয়া বন্দরেও ঢুকতে পারে না। সেই তুলনায় তাজপুর বন্দরের নাব্যতা (১৬ মিটার) অনেকটা বেশি। এইসব কারণে তাজপুর বন্দর তৈরি হয়ে গেলে তা দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় সমুদ্র বানিজ্যে বিশেষ জায়গা করে নিতে পারবে বলেই আশাবাদী নবান্নের শীর্ষ মহল। কিছুদিন আগে পানাগড়ে একটি শিল্প সংস্থার অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই জানিয়েছিলেন তাঁরা (সরকার) নিজেরাই এই (তাজপুর) বন্দর তৈরির কাজ করবে। সোমবার গ্লোবাল টেন্ডার ডাকার মাধ্যমে সেই কাজ‌ই শুরু হলো বলে মনে করা হচ্ছে।