Date : 2024-04-25

Mamata Banerjee’s Oath taking : মমতার শপথ গ্রহণে জটিলতা অব্যাহত। অনুমতি ঝুলিয়ে রাখলেন রাজ্যপাল।

সঞ্জু সুর, রিপোর্টার :বৃহস্পতিবার কি আদৌ বিধায়ক পদে শপথ নিতে পারবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? বিধানসভা থেকে পাওয়া চিঠির (শপথ গ্রহণ সংক্রান্ত)বিষয় নিয়ে সোমবার সন্ধ্যায় টুইট করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। তারপরেই এই শপথ গ্রহণ নিয়ে একটা বড়সড় প্রশ্ন সামনে চলে এলো। টুইটে যে বার্তা রাজ্যপালের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে তা হলো, রাজ্যের এই তিন কেন্দ্রের নির্বাচনের ফলাফল যতক্ষণ না কমিশন গেজেট নোটিফিকেশন করে জানাচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি তাঁর সিদ্ধান্ত জানাতে পারছেন না। তবে সেই সঙ্গে তিনি (রাজ্যপাল) এটাও জানিয়েছেন, যে সিদ্ধান্ত‌ই তিনি নেবেন তা অবশ্যই সংবিধানের ১৮৮ ধারা মোতাবেক হবে।

ভবানীপুরের উপনির্বাচনে বিপুল জয় পেয়েছেন তিনি। এবার পালা বিধায়ক হিসাবে শপথ নেওয়ার। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার ৭ অক্টোবর শপথ নিতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী। আপাতভাবে ওই দিনেই তাঁর শপথ হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু সেই শপথ নিয়েই তৈরি হয়েছে জটিলতা। সৌজন্যে রাজভবন।

জগদীপ ধনখড় রাজ্যপাল হিসাবে শপথ নেওয়ার অব্যবহিত পর থেকেই শুরু হয়েছিলো রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত। সেই সংঘাত কখনো চরম আকার ধারন করেছে, তো কখনো চলে গিয়েছে একটু পিছনের সারিতে। সাম্প্রতিক সময়ে সেই সংঘাতে যুক্ত হয়েছিলো রাজ্যপাল-বিধানসভার মধ্যকার সংঘাতে। এবার বিধায়ক হিসাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শপথ গ্রহণ কে কেন্দ্র করে নতুন এক সংঘাতে জড়িয়েছে বিধানসভা ও রাজভবন। সূত্রের খবর, কিছুদিন আগে রাজভবন থেকে এক চিঠি পৌঁছায় বিধানসভায়। যে চিঠিতে বলা হয় বিধায়কদের শপথ বাক্য পাঠ করানোর ক্ষেত্রে রাজ্যপাল সংবিধানের ১৮৮ ধারায় যে ক্ষমতা বিধানসভার অধ্যক্ষকে দিয়েছিলেন, তা তিনি ফেরৎ নিচ্ছেন। এই চিঠি পাওয়ার পরেই নড়েচড়ে বসেন বিধানসভার আধিকারিকরা। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা এক, কিন্তু লোকসভা থেকে বিধানসভা, প্রতিটা ক্ষেত্রেই প্রথাগতভাবে অধ্যক্ষ‌ই সাংসদ বা বিধায়কদের শপথ বাক্য পাঠ করান। শুধুমাত্র মন্ত্রীদের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি বা রাজ্যপাল শপথ বাক্য পাঠ করিয়ে থাকেন। রাজ্যপালের এই চিঠিতে সাংবিধানিক কোনো জটিলতা নেই। তিনি যে দাবি করেছেন, জটিলতা নেই তাতেও। কিন্তু এতদিন ধরে চলে আসা একটা প্রচলিত রীতির বিরুদ্ধে গিয়ে হঠাৎ করে কেন রাজ্যপাল এই সংঘাতে জড়াতে গেলেন তা বোধগম্য হচ্ছে না বিধানসভার অধ্যক্ষ থেকে শুরু করে পরিষদীয় মন্ত্রীর। রবিবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয়লাভের পর থেকেই জল্পনা শুরু হয় কবে তিনি বিধায়ক হিসাবে শপথ নেবেন।

রবিবার রাতেই জানা যায় তৃণমূল নেত্রী দুর্গাপুজো শুরুর আগেই শপথ নেওয়ার কাজটা সেরে রাখতে চাইছেন। ৬ তারিখ মহালয়া। তারপরের দিন ৭ তারিখ তিনি শপথ নিতে চান বলেই বার্তা আসে বিধানসভায়। শুরু হয় প্রস্তুতি। কিন্তু তারমধ্যে রাজভবনের এই চিঠিতে কিছুটা ঘেঁটে ঘঁ অবস্থা হয় বিধানসভার সচিবালয়ের। একদিকে অধ্যক্ষ চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধায়ক হিসাবে বিধানসভাতেই শপথ নিন। যেভাবে ২০১১ বা ২০১৬ সালে বিধায়ক হিসাবে তিনি বিধানসভাতেই শপথ নিয়েছিলেন। উল্টোদিকে, গোঁ ধরে থাকা রাজভবন। বিধানসভা সূত্রের খবর, সোমবার বেশকিছু বৈঠক ও আলাপ আলোচনা করার পর রাজভবনে চিঠি দিয়ে অনুরোধ করা হয় রাজ্যপাল চাইলে তিনিই শপথ বাক্য পাঠ করাবেন। তবে সেই সঙ্গে এটাও তাঁকে অনুরোধ করা হয় যে বিধানসভার প্রচলিত রীতির কথা মাথায় রেখে এই শপথ বাক্য পাঠ করানোর কাজটা বিধানসভাতেই হোক। কিন্তু শেষমেশ রাজভবন যে কমিশনের গেজেট নোটিফিকেশন এর তত্ত্বের কথা বলেছেন, তাতে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান পিছিয়ে শুক্রবারেও হতে পারে। কিন্তু সেটাও রাজভবনে হবে না কি বিধানসভায়, সেই জটিলতাও কিন্তু এখনো রয়েই গেল।