Date : 2024-04-29

মঙ্গলে মন্দিরে মস্তক মুণ্ডন ! আশিস দাস বললেন “প্রায়শ্চিত্ত করছি।”

সঞ্জু সুর, রিপোর্টার : ত্রিপুরার বিজেপি বিধায়ক আশিস দাস তাঁর মাথার সব চুল ছেঁটে ফেললেন। আর সেই মস্তক মুণ্ডন কে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার বিকালের কালীঘাট মন্দির চত্বরে হ‌ইহ‌ই কান্ড। এমনিতে প্রতিদিনই প্রচুর ভক্ত কালীঘাট মন্দির চত্বরে মুণ্ডিত মস্তক হন। মূলতঃ কোনো বিষয়ে মানত থাকলে কালীঘাটে মায়ের মন্দিরে এসে মাথা মুড়ানো একদমই স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু সেটা যখন এক বিজেপি বিধায়কের হয় তখন কৌতুহল হয় বৈকি। ত্রিপুরার ‘সুরমা’ বিধানসভার এই বিজেপি বিধায়ক অবশ্য সেই কৌতুহল মেটালেন একটু পরেই।

“বিজেপিতে যোগ দিয়ে আমি অন্যায় করেছি, পাপ করেছি। তাই প্রায়শ্চিত্ত করার জন্য‌ই মাথা মুড়ালাম।” আশিস দাসের এই কথায় কিছুটা কৌতুহল তো মিটলো। কিন্তু তিনি কি তাহলে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিচ্ছেন ? এই প্রশ্নের অবশ্য সরাসরি উত্তর তিনি দেন নি। বরং তিনি বললেন, “২০১৮ সালে আমার মতো অগনিত মানুষ অজান্তে ভুল করেছিল। ত্রিপুরা রাজ্যের মধ্যে একটা অরাজকতা চলছে। এর জন্য বিপ্লব দেব কে সম্পূর্ণ দায়ী করা ঠিক হবে না।” এরপরেই বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের দিকে তোপ দেগে আশিস দাসের বক্তব্য “কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সমস্যার সমাধান না করে তা বাড়িয়ে দিয়েছেন।”

তবে আশিস দাসের কলকাতায় আগমন, মস্তক মুণ্ডন করা বা বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে তুলোধোনা করা নিয়ে ত্রিপুরা বিজেপি খুব একটা ভাবিত নয়। ত্রিপুরা বিজেপির এক নেতা জানালেন পরের বিধানসভা নির্বাচনে আশিস দাস টিকিট পাবে কি না সন্দেহ। তাই এখন থেকে দর বাড়ানোর খেলায় নেমেছে। আশিস দাসের মামা আদ্যন্ত কমিউনিস্ট। আশিস দাস নিজেও একটা সময় সেই পার্টিটাই করতো। পরে মামার সাথে বনিবনা না হ‌ওয়ায় কংগ্রেসে চলে যান তিনি। পরে আবার ধলাই জেলার আর‌এস‌এস এর ফাদার ফিগার অনাদি সরকারের হাত ধরে বিজেপিতে আসেন তিনি। এমনিতে আশিস দাসের বিধানসভা কেন্দ্র ধলাই জেলার ‘সুরমা’ এসসি সংরক্ষিত আসন। আর আশিস দাসকে যিনি বিজেপিতে নিয়ে এসেছেন সেই অনাদি সরকার কেই পরের নির্বাচনে টিকিট দিতে পারে বিজেপি। সেক্ষেত্রে অবশ্য সুরমা কেন্দ্র কে অসংরক্ষিত আসন করে পাশের ‘কমলপুর’ বিধানসভা কেন্দ্র কে সংরক্ষিত আসন হিসাবে সরকার ঘোষণা করতেই পারে। এইসব বিভিন্ন কারণে দলে নিজের জায়গা আর তেমন সুরক্ষিত নয় মনে করেই আশিস দাস এইসব কথা বলছেন বলেই বক্তব্য বিজেপির ওই নেতার। তবে বিজেপি যে কথাই বলুক না কেন, শাসক দলের বিধায়ক দল ছেড়ে অন্য দলে যোগ দিলে তা যে পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপিকে যথেষ্ট বিড়ম্বনায় ফেলবে তা বলাই যায়।