Date : 2024-04-25

পরাধীনতার শেকল ভেঙে পূর্ণ স্বাধীনতার পথে বার্বাডোস

মাম্পি রায়, নিউজ ডেস্ক : ব্রিটিশ রাজবংশের শেকল ছেড়ে সাধারণ রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে চলেছে ক্যারিবিয়ান দ্বীপ বার্বাডোস। প্রায় ৩০০ বছর পর স্বাধীন হতে চলেছে দেশটি। মঙ্গলবার বিশ্বের নতুন সাধারণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে চলেছে বার্বাডোস। স্বাধীনতার পরও পরাধীনতার শেকল ভেঙে পুরোপুরি বেরিয়ে আসতে পারেনি তারা। কারণ দেশবাসীর উপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছেন ব্রিটেনের রানি। এবার ব্রিটিশ রাজবংশের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা পাওয়ার পথে ২ লক্ষ ৮৫ হাজার বাসিন্দার দেশ বার্বাডোস।

পূর্ণ স্বাধীনতা উপলক্ষ্যে সোমবার সন্ধে থেকে শুরু হবে সরকারি অনুষ্ঠান। মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে দেশের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেবেন সান্ড্রা মাসন। বর্তমানে তিনি ব্রিটেনের রাজ পরিবারের প্রতিনিধি হিসেবে বার্বাডোসের দেখাশোনা করেন। তাঁর হাতে দায়িত্বভার তুলে দেবেন ব্রিটেনের রাজ পরিবারের বংশধর প্রিন্স চার্লস। কুচকাওয়াজের মাধ্যমে দায়িত্ব হস্তান্তর করা হবে।

রয়টার্সের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, এলিজাবেথ এখনও বার্বাডোস সহ ১৬টি দেশের রানি।  সেই তালিকায় রয়েছে যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা জামাইকার মতো দেশও।  রানির নাম ছেঁটে ফেলাটা আত্মবিশ্বাসের প্রতীক হিসেবেই দেখছে বার্বাডোস। স্বাধীনতার এই ক্ষণ বার্বাডোজের পাশাপাশি ক্যারিবিয় অঞ্চল সহ একাধিক এলাকাতেও ঐতিহাসিক হতে চলেছে। রয়টার্সের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, স্বাধীন ঘোষণার ৫৫ বছর পর, প্রজাতন্ত্রে রূপান্তরিত হচ্ছে বার্বাডোস।

১৬২৫ সালে একটি ইংরেজ জাহাজ প্রথম দ্বীপটির দখল নেয়। আঠারো শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত ব্রিটেনের রাজ পরিবারের দাস ছিল বার্বাডোস। ১৮৩৬ সালে সেই দাসত্ব প্রথা লুপ্ত হলেও স্বাধীনতা আসেনি। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অংশ হিসেবেই ছিল দেশটি। বহু সংগ্রামের পর ১৯৩৬ সালে স্বাধীনতা ফেরে ক্যারিবিয়ান দ্বীপটিতে। যদিও এরপরও রাজতন্ত্র কায়েম ছিল সেদেশে। সরাসরি না হলেও বকলমে দেশের সমস্ত নিয়ন্ত্রণ ছিল ব্রিটেনের রাজপরিবার ও তাদের প্রতিনিধির হাতেই। এবার সেই প্রথারই অবসান ঘটতে চলেছে। রাজতন্ত্রের বদলে সাধারণতন্ত্র কায়েম হবে বার্বাডোসে।

যদিও এই স্বাধীনতা নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে  বার্বাডোসের বাসিন্দাদের মধ্যে। ব্রিজটাউনের মৎস্য ব্যবসায়ী বছর ৫০-এর শ্যারন বেলামি থমসন জানান, ছোটবেলায় রানীর সফরের খবর শুনে খুবই আনন্দিত হতেন। ধীরে ধীরে তিনি বুঝতে পেরেছেন, এই দেশে রানির অবদান সত্যি অনেক। বার্বাডোসের প্রেসিডেন্টের আসনে একজন মহিয়াকে পেলে খুব ভাল লাগবে বলেও জানান তিনি।