Date : 2024-04-27

Kolkata Municipal Election 2021 : তৃণমূলে তিন কাঁটা ! দলের টিকিট না পেয়ে নির্দল হলেন তনিমা, রতন, সচ্চিদানন্দ

সঞ্জু সুর, রিপোর্টার : কলকাতা পুরসভা নির্বাচনের টিকিট নিয়ে একদিকে যখন তুলকালাম চলছে বিজেপির অন্দরে তখন অতটা না হলেও ক্ষোভের আঁচ কিছুটা ছুঁয়েছে ঘাসফুল শিবিরকে। আর সেটা হয়েছে খোদ দলনেত্রীর বিধানসভা কেন্দ্রেই। ক্ষোভের আঁচ পৌঁছেছে সদ্য প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বিধানসভা কেন্দ্রেও। একযোগে তিন দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্দল প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তিন তিনজন প্রাক্তণ তৃণমূল কাউন্সিলর।

তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি কলকাতা পুরসভার ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডে। এই ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর রতন মালাকার কে এবার আর টিকিট দেয় নি দল। তার বদলে টিকিট দেওয়া হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়কে। দীর্ঘ কয়েক দফা ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের কাউন্সিলর থাকার পর এবার টিকিট না পেয়ে হতাশ রতন মালাকার সোজা নির্দল হিসাবেই মনোনয়ন জমা দিয়ে দিয়েছেন ওই ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডে। আর প্লাস নিউজকে তিনি জানালেন, মনোনয়ন প্রত্যাহারের কোনো সম্ভাবনা নেই।

এদিকে ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত আরো একটি ওয়ার্ডেও দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্দল হিসাবে দাঁড়িয়ে গিয়েছেন তৃণমূলের‌ই আরেক প্রাক্তণ কাউন্সিলর সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়। আগের পৌরবোর্ডে (২০১০-২০১৫) সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়কেই চেয়ারম্যান করেছিলো দল। সেই ‘মনুয়া’দা এবার ৭২ নম্বর ওয়ার্ডে নির্দল প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। খোদ দলের রাজ্য সভাপতির ভাই ও এই ৭২ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর সন্দীপ রঞ্জন বক্সির বিরুদ্ধে দলের‌ই প্রাক্তণ কাউন্সিলর মনোনয়ন জমা দেওয়ায় অস্বস্তি ছড়িয়েছে দলের নেতা কর্মিদের মধ্যে।

অস্বস্তি ছড়িয়েছে ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডেও। মঙ্গলবার‌ই আর প্লাস নিউজে আমরা জানিয়েছিলাম দলের ঘোষিত প্রার্থী তনিমা চট্টোপাধ্যায় কে বদল করে বিদায়ী কাউন্সিলর সুদর্শনা মুখোপাধ্যায়কেই আবার টিকিট দিতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। সেই খবরেই শিলমোহর পড়েছে। বুধবার তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটেই ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন সুদর্শনা। এদিকে প্রথম যাকে প্রার্থী করা হয়েছিলো সেই প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বোন তনিমা চট্টোপাধ্যায় দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে ওই ওয়ার্ড থেকেই নির্দল প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। ফলে ৭২ ও ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডের মতো ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডেও গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। প্রসঙ্গতঃ কিছুদিন আগে দক্ষিণ কলকাতা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের এক বিজয়া সম্মীলনীতে দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি একপ্রকার সতর্ক করেই বলেছিলেন, টিকিট না পেয়ে বিরোধীতা করলে রাজনীতিগতভাবে একঘরে হয়ে পরতে হবে। তাই যারা টিকিট পাবেন না তারা যেন দলের সিদ্ধান্ত মেনে নেন। কিন্তু এই তিন ক্ষেত্রে সেটা হয় নি। এদিকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষদিন আগামি ৪ ডিসেম্বর। তার আগে দলের শীর্ষ নেতারা এই বিক্ষুব্ধ তিন প্রার্থীর মানভঞ্জন করে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে পারে কিনা সেটাই দেখার। নচেৎ গোঁজ প্রার্থী নিয়েই ভোটে যেতে হবে ৬৮, ৭২ ও ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডের ঘাসফুল প্রার্থীদের, যেটা তৃণমূল কংগ্রেসের জন্য যথেষ্ট অস্বস্তিকর হবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।