Date : 2024-04-27

আবার একে পশ্চিমবঙ্গ। মোদীর রাজ্য বারো, পনেরোয়।

সঞ্জু সুর, রিপোর্টার : প্রধানমন্ত্রীর রাজ্যকে আবার পিছনের সারিতে ফেলে সারা দেশে প্রথম স্থানে উঠে এলো পশ্চিমবঙ্গ। গ্রামীণ বাড়িতে পানীয় জলের সংযোগ পৌঁছে দেওয়ার কাজে পশ্চিমবঙ্গ যেখানে এক নম্বর স্থানে, সেখানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য গুজরাট রয়েছে ১৫ তম স্থানে।।

কেন্দ্রীয় সরকারের জল জীবন মিশনের আওতায় সারা দেশে বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে প্রতিটা বাড়িতে নলবাহিত পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার কাজ করছে প্রতিটি রাজ্য সরকার। আমাদের রাজ্যে অবশ্য “জলস্বপ্ন” প্রকল্পের মাধ্যমেই সেই কাজ করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছেন ২০২৪ এর মধ্যে আমাদের রাজ্যের প্রতিটা গ্রামীণ বাড়িতে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রীর সেই ঘোষণাকে বাস্তবায়িত করতে নিরন্তর কাজ করে চলেছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর।

দফতরের মন্ত্রী পুলক রায়-এর নেতৃত্বে প্রতিদিন নির্দিষ্ট টার্গেট সামনে রেখে পানীয় জলের সংযোগের কাজ চলছে। অতি সম্প্রতি হাওড়ার এক প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের মন্ত্রী পুলক রায়কে এই বিষয়টির দিকে অধিক গুরুত্ব দিতে নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে দফতরের সচিব সুরেন্দ্র গুপ্তাকেও মুখ্যমন্ত্রী বলেন যে প্রতিটা বাড়িতে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার বিষয়ে একটা মিশন নিয়ে যেন সবাই কাজ করে। সেই কাজ‌ই করে চলেছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর।
শুধু নভেম্বর মাসেই ২,৪০,৯৪৩ টি নতুন সংযোগ দিয়ে সারা দেশে প্রথম স্থান অধিকার করাটা তার‌ই নিদর্শন। যে সময়ে পশ্চিমবঙ্গ এতগুলো বাড়িতে নতুন করে পানীয় জল পৌঁছে দিয়েছে, ঠিক সেই সময়ে বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশের যোগী সরকার মাত্র ৩২,৯৯৪ টি গ্রামীণ বাড়িতে পানীয় জলের সংযোগ পৌঁছে দিয়ে তালিকায় ১২ তম স্থানে রয়েছে। আর প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর রাজ্য গুজরাট তো রয়েছে আরো পিছনে। এই একমাসে ২১,৮৪৪ টি বাড়িতে পৌঁছাতে পেরেছে তারা। আর বিজেপি শাসিত আরেকটি রাজ্য ত্রিপুরা তো সাকুল্যে মাত্র ৮,২৮৬ টি সংযোগের ব্যবস্থা করতে পেরেছে এই নভেম্বর মাস জুড়ে।
তালিকায় প্রথম তিন স্থানে থাকা রাজ্যগুলো এরকম –
পশ্চিমবঙ্গ – ২,৪০,৯৪৩
তামিলনাড়ু – ১,৯৫,০০৭
কর্নাটক – ১,৭৪,৬০১

গত ছয় মাসের নিরিখে এক দুই দফা বাদ দিয়ে প্রতিবার‌ই প্রথম স্থানে থেকেছে পশ্চিমবঙ্গ। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের মন্ত্রী পুলক রায়ের বক্তব্য, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘জলস্বপ্ন’ নিয়ে যে স্বপ্ন দেখেছেন, তা সফল করাই আমার একমাত্র লক্ষ্য। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো ২০২৪ এর আগেই এরাজ্যের প্রতিটা গ্রামীণ বাড়িতে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার কাজ করছেন দফতরের সচিব, ইঞ্জিনিয়ার থেকে শুরু করে প্রতিটা কর্মি।” এখানেই না থেমে পরের মাসে নিজেদেরই ছাপিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা এখন‌ই ঠিক করে ফেলেছেন মন্ত্রী পুলক রায়। তাঁর মতে, ডিসেম্বর মাসে তাঁদের লক্ষ্য ৩,১০,০০০ বাড়িতে পানীয় জলের সংযোগ পৌঁছে দেওয়া। পুরুলিয়া, বাঁকুড়ার মতো খরা প্রবণ জেলাগুলোতেও কাজ চলছে জোর কদমে। পুরুলিয়াতে যেমন “জাইকা”-র আর্থিক সহায়তায় চলছে জল প্রকল্পের কাজ, তেমনি বাঁকুড়ায় “এডিবি”-র টাকায় আরো একটি জলপ্রকল্পের কাজ চলছে। সেগুলো শেষ হয়ে গেলে ওই অঞ্চলের মানুষের একটা দীর্ঘদিনের আশা পূরণ হবে বলেই মনে করছেন জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের মন্ত্রী পুলক রায়। প্রসঙ্গতঃ আগস্ট মাসে নতুন সংযোগ দেওয়া হয়েছিলো ২,৩৯,২৫৬ টি বাড়িতে। সেপ্টেম্বর মাসে সেই সংখ্যা ছিলো ২,৩৭,৩৬৮ টি। তবে অক্টোবর মাসে উৎসবের মরসুমে বেশ কিছুটা কম নতুন সংযোগ দেওয়া হয়। সংখ্যা টি ১,৯০,৪৩৩।