Date : 2024-04-25

আদালতের নির্দেশের পরেও বেআইনি নির্মাণ না ভাঙ্গায় হাইকোর্টের তীব্র ভৎসনা

ষষ্ঠী চট্টোপাধ্যায়, রিপোর্টার : ” ২ বছর আপনারা কি ঘুমিয়ে ছিলেন,গত ২ বছরের আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়িত করতে পারলেন না কেন?এটা দুভাগ্যজন যে আবেদনকারীকে আদালতের নির্দেশের পরও বিচার দিতে পারেন নি।” আদালত অবমাননা মামলায় মন্তব্য প্রধান বিচারপতিরপ্রকাশ শ্রীবাস্ত ও বিচারপতি রাজর্ষি ভারদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চের।

প্রসঙ্গত,২০১৬ সালে পূর্ব মেদিনীপুরের দায়িত্বে ছিলেন বর্তমান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। স্থানীয় পঞ্চায়েতের অভিযোগ তার নির্দেশেই চলত স্থানীয় পঞ্চায়েত গুলি।বৃহস্পতিবার সেই সময়ের পঞ্চায়েতের কাজের জন্য ভৎসিত হতে হলো বর্তমান প্রশাসনকে।ভৎসনার মুখে পড়তে হলো পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা প্রশাসনকে।
আবেদনকারীর পক্ষের আইনজীবী আদালতে জানান মহিশাদল পঞ্চায়েত এলাকায় নয়নজুলির ওপর বেআইনি একটি ৩ তলা বাড়ি তৈরি করে স্থানীয় পঞ্চায়েত। স্থানীয় বাসিন্দা প্রদীপ দাস সহ বাসিন্দারা অভিযোগ করেন ওই বাড়ি তৈরির ফলে এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে এবং যাতায়াতেরও অসুবিধা হচ্ছে সাধারণ মানুষের। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ খতিয়ে দেখে এসডিও ২০১৬ সালের ২৩ মে পঞ্চায়েত কে নির্দেশ দেয় অবিলম্বে বাড়িটি ভেঙে ফেলার।
সেই সময় এসডিও এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল মাহিশাদল পঞ্চায়েত সমিতি।ওই বছর ২২ অক্টোবর বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এসডিওর নির্দেশ বহাল রেখে ছিলেন।সেই নির্দেশকে ফের চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ২০২০ সালের ১৭ জানুয়ারি বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি কৌশিক চন্দর ডিভিশন আবেদন জানায়।ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিলেন ৩ মাসের মধ্যে স্থানীয় প্রশাসন কে পঞ্চায়েত সমিতি বেআইনি বাড়িটি ভেঙে ফেলতে হবে।
কিন্তু সেই নির্দেশ আজও বাস্তবায়িত না হওয়ায় আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করেন স্থানীয় বাসিন্দা প্রদীপ দাস।
বৃহস্পতিবার মামলার শুনানি চলাকালে আইনজীবী দিলীপ কুমার সিনহা আদালতে জানান, আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও ২ বছর হয়ে গেলেও প্রশাসনের উদাসীনতার কারণে আদালতের নির্দেশে আজও কার্যকর হয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি। তাই অতিসত্ত্বর আদালত অবমাননার রুল জারি করুক সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে।
সরকারি আইনজীবী সওয়ালে আবেদন করেন, ২ সপ্তাহ সময়ের জন্য। সেই সময় প্রধান বিচারপতির সরকারি আইনজীবী র উদ্দেশ্য বলেন, ” ২ বছর আপনারা কি ঘুমিয়ে ছিলেন। ২ বছরের আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়িত করতে পারলেন না কেন? আবেদনকারীকে আদালতের নির্দেশের পরও বিচার দিতে পারেন নি। এখন সময় চাইছেন?”
১ সপ্তাহের মধ্যে আদালতের নির্দেশ মত পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসকে ওই বাড়িটি ভেঙে ফেলতে হবে। ২৭ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী শুনানির দিন নির্দেশ বাস্তবায়নের রিপোর্ট আদালতে জমা করতে হবে।