Date : 2024-04-25

নজিরবিহীন ঘটনা সুন্দরবনে। বাঘের হানায় আক্রান্ত মৎস্যজীবীর চক্ষুদান।

ওয়েব ডেস্ক : সম্ভবত ভারতবর্ষে প্রথম এবং সুন্দরবনে প্রথমই। বাঘের আক্রমনে মৃত্যু হওয়া মৎস্যজীবীর চক্ষুদান করলো তার পরিবার। নজিরবিহীন এই কাজ করল সুন্দরবনের এক মত্সজীবী শংকর সরদারের পরিবার।

মত্সজীবী শংকর সর্দারের বাড়ি সুন্দরবনের কুলতলি ব্লকের দেউনবাড়ির কাঁটামারি এলাকায়। সোমবারে সুন্দরবনের চিতুরি জঙ্গলে কাঁকড়া সংগ্রহ করতে গিয়ে বাঘের আক্রমনের শিকার হন তিনি। প্রথমে তাকে ভর্তি করা হয় তাদের নিকটবর্তী কুলতলি হাসপাতালে এবং পরে তাকে নিয়ে আসা হয় এসএসকেএম-এ। ট্রমা কেয়ারে চলে তার চিকিত্সা। চিকিত্সকরা তাদের যথা সম্ভব চেষ্টা করে কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। মঙ্গলবার দুপুরেই মৃত্যুর সঙ্গে তার লড়াই শেষ হয়ে যায়। তারপরই তার পরিবার সীদ্ধান্ত নেন তার চক্ষুদান করার।

সুন্দরবনের বহু মত্সজীবী বাঘের আক্রমনে আক্রান্ত হয়ে কলকাতার বিভিন্ন হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। কিন্তু তার পরিবারের লোকজনেরা কোনো দিনই চক্ষুদানের কথা ভাবেননি। শংকর সর্দারের পরিবারকে সেই কথা ভাবিয়েছে জনগণের পাঠশালার কর্ণধার। তিনি কলকাতা পুলিশের কর্মী সমরেশ চক্রবর্তী। তার কথায় আপ্লুত হয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে তার চক্ষুদানের কথা ভাবেন তার পরিবারের লোকেরা।

জনগনের পাঠশালার কর্ণধার সমরেশ চক্রবর্তী বলেন, বাঘের আক্রমনে মৃতের চক্ষুদান এই প্রথম। সম্ভবত ভারতবর্ষের কোথাও এই ঘটনার নজির নেই। পরিবারকে অনেক বোঝানোর পর তার পরিবার চক্ষুদানে সম্মত হন। সুন্দরবনের ইতিহাসে এটা একটা নজির। শংকরের দুটি চোখ থেকে দুজন অন্ধ মানুষ কর্ণিয়া পাবেন। তাদের অন্ধত্ব ঘুচবে।

এই প্রশঙ্গে নিহত মত্সজীবীর শ্বশুর রামপ্রসাদ বাগানি বলেন, আমার জামাইকেতো আর কখনও ফিরে পাবোনা। কিন্তু তার এই চক্ষুদানের মাধ্যমে যদি কোনো মানুষের উপকার হয় তাই এই কাজ করলাম আমরা। সুন্দরবনের মত্সজীবীরা বঞ্চিত থাকলেও তাদের সমাজের প্রতি কিছু দায়িত্ব কর্তব্য থাকে সেটা প্রমাণ করলাম।