Date : 2024-04-23

সিএম গ্রিভান্স সেল এর সাফল্য। তিন বছরে সমাধান ৯৯.৮৭ শতাংশ গ্রিভান্স

সঞ্জু সুর, রিপোর্টার:– ২০১৯ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে তৈরি হয়েছিলো সিএম গ্রিভান্স সেল। মূলতঃ সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের কাজে অনিয়ম আটকাতে ও সরকারি কাজ নিয়ে সাধারণ মানুষের অভিযোগের দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে এই সেল তৈরি করা হয়। সম্প্রতি সেই সেল এর কাজের যে পরিসংখ্যান সামনে এসেছে তাতে দেখা যাচ্ছে এই ক’বছরে মোট যত অভিযোগ জমা পড়েছে তার মাত্র ০.১৩ শতাংশ অভিযোগের কোনো নিষ্পত্তি এখনো করা সম্ভব হয় নি। এবং সেই অভিযোগও সাত আট দিনের বেশি নয়।

সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুযায়ী সিএম গ্রিভান্স সেলে মোট জমা পড়া অভিযোগের সংখ্যা ১০,৮৮,২০৬ টি। যার মধ্যে খতিয়ে দেখে অভিযোগের নিষ্পত্তি করা হয়েছে ১০,৮৬,৫২৩ টি। অর্থাৎ ৯৯.৮৭ শতাংশ অভিযোগের নিষ্পত্তি ইতিমধ্যেই করা হয়েছে। মোট অভিযোগের মধ্যে রাজ্য সরকারের নির্দিষ্ট ৫২ টি দফতরের বিরুদ্ধে অভিযোগের সংখ্যা ৯,৩০,৫৪৬ টি। ২২ টি জেলায় জেলার কাজের ক্ষেত্রে অভিযোগ জমা পড়েছে ১,২২,৪৬২ টি। কলকাতা কর্পোরেশনের কিছু কাজ নিয়েও সিএম গ্রিভান্স সেলে অভিযোগ জমা পড়েছে। তার সংখ্যা অবশ্য ৩,২২৪ টি। এছাড়া ৭ টি কমিশনারেট ও ২৮ টি পুলিশ জেলা নিয়েও অভিযোগ জমা পড়েছে এই সেলে।

সরকারের বিভিন্ন দফতরের কাজ নিয়ে মোট যত অভিযোগ জমা পড়েছে তার মধ্যে শুধু ‘বাংলা আবাস যোজনা’ নিয়ে যে পরিমান অভিযোগ জমা পড়েছে তাতে যথেষ্ট চিন্তিত নবান্ন। মোট ১,১৫,৭৬৯ টি অভিযোগ শুধুমাত্র ‘বাংলা আবাস যোজনা’ নিয়ে। মূলতঃ সরকারের ধার্য্য করা সম্পূর্ণ অর্থ উপভোক্তারা পান নি বলেই অভিযোগ জমা পড়েছে। এখানেই চিন্তিত নবান্ন। কারণ এখন রাজ্য সরকার বিভিন্ন প্রকল্পে যে আর্থিক সাহায্য করে থাকে তা সরাসরি উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তা সত্ত্বেও সম্পূর্ণ অর্থ না পাওয়ার অভিযোগ যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েই দেখছেন নবান্নের শীর্ষ কর্তারা।

এমনকি কয়েকদিন আগে নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি বলেছিলেন “সরকার বিভিন্ন প্রকল্পে যাদের সাহায্য করছে, সেখান থেকে কোনো লাড্ডু খাওয়া যাবে না।” মুখ্যমন্ত্রীর ইঙ্গিত ছিল পরিষ্কার। মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক কর্তাদের‌ও এই বিষয়ে সতর্ক হ‌ওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। ‘বাংলার আবাস যোজনা’-য় মূলতঃ গ্রামাঞ্চলে বাড়ি তৈরির জন্য অর্থ সাহায্য করা হয়। ২০২৩ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচন, যা সম্পূর্ণভাবে গ্রামাঞ্চল কেন্দ্রিক। সেদিক থেকে দেখলে গ্রামাঞ্চল থেকে আসা এই অভিযোগের গুরুত্ব সরকারি দলের কাছে অনেক বেশি। এদিকে নবান্ন সূত্রে খবর ইতিমধ্যেই মুখ্যসচিব সংশ্লিষ্ট সব দফতরের আধিকারিকদের বিষয়টি অবহিত করেছেন। যদিও সরকারের শীর্ষ আধিকারিকরা অনেক বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন অভিযোগের নিষ্পত্তির শতাংশের হার কে।

যে দশটি প্রকল্পের ক্ষেত্রে সর্বাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে তার তালিকা নিম্নরূপ।

১) ‘বাংলা আবাস যোজনা’-১,১৫,৭৬৯
২) ‘খাদ্যসাথি’-২০,৫৯১
৩) ‘স্বাস্থ্য সাথি’-৮,০৪০
৪) ‘কন্যাশ্রী’-৫,৩২৬
৫) ‘একশো দিনের কাজ’-৪,৯৬০
৬) ‘মানবিক’-৪,১৬৪
৭) ‘রুপশ্রী’-২,৫৭৪
৮) ‘কৃষক বন্ধু’-২,৫৫৪
৯) ‘যুবশ্রী’-২,৪১৮
১০) ‘স্বামী বিবেকানন্দ মেরিট স্কলারশিপ’-১,৪৫১