Date : 2024-04-27

স্বপ্ন দেখতে দৃষ্টি লাগে না। মাম্পি দে দৃষ্টিহীন হওয়া সত্ত্বেও স্বপ্ন দেখার অধিকার রাখে।

শাহিনা ইয়াসমিন, রিপোর্টার : কোনও কিছুর অভাবই জীবনের সাফল্যের পথে বাধা নয়। স্বপ্নের অভাবই জীবনে সাফল্য অর্জনে প্রধান বাধা। ওয়ার্ল্ড ডিসনির কথায়, যদি তুমি স্বপ্ন দেখতে জানো, তবে তুমি তা পূরণ করতেও পারবে। আর ঠিক সেই কাজটাই করে দেখিয়েছে উত্তর কলকাতার মাম্পি দে। নারী দিবসে তার স্বপ্ন পূরণের ইচ্ছাকে কুর্নিশ আরপ্লাস নিউজের।
হেলেন কিলারের বিখ্যাত উক্তি- দৃষ্টিহীনতার থেকেও দুঃখজনক, দৃষ্টিমানদের দৃষ্টিহীনতা।

চোখ দিয়ে আমরা বিশ্বকে দেখি। যদি চোখের আলো অন্ধকারে ঢাকা পড়ে। তা হলে কি সব স্বপ্নের ইতি। না। স্বপ্ন দেখার জন্য দৃষ্টির প্রয়োজন হয় না। তার জন্য লাগে ইচ্ছাশক্তি। সেই ইচ্ছা শক্তি দিয়ে স্বপ্ন দেখা ছাড়েনি উত্তর কলকাতার হাতিবাগানের মাম্পি দে। সে জন্মগত দৃষ্টিহীন। মাম্পির স্বপ্ন শিক্ষিকা হওয়ার। কারোর উপর বোঝা হয়ে নয়। নিজের লড়াই লড়ার মতো ক্ষমতা রাখে সে। বাংলায় মাস্টার্স করার পর স্পেশাল বিএড করছেন সে। কোনও দৃষ্টিহীন স্কুলে নয় জেনারেল স্কুল-কলেজে পড়াশোনা করেছে। রেকর্ড শুনে ও ব্রেইলের মাধ্যমে পড়াশোনা করেছেন মাম্পি। কমার্স ও সায়ন্স নিয়ে পড়ার ইচ্ছা ছিল মাম্পির। দৃষ্টিহীনতার কারণে পছন্দ মতো বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করা হয়নি তার। স্কুল হোক বা কলেজে বন্ধুদের কাছ থেকে সর্বদা সাহায্য পেয়েছে মাম্পি।

বড় শিক্ষিকা হওয়ার স্বপ্ন দেখার যে অদম্য ইচ্ছা তা চালানোর জন্য অর্থের প্রয়োজন। তাই বাড়িতে টিউশন পড়ানোর পাশাপাশি অঙ্গনওয়ারির কর্মীও মাম্পি। তাঁর কাছে পথ চলার রাস্তাটা কঠিন হলেও ভয় পায় না মাম্পি। কারণ তার সঙ্গে তার মা আছে। মা-ই তার জীবনের অনুপ্রেরণা বলে জানান মাম্পি দে।
প্রত্যেক নারীর নিজের জন্য কিছু করা উচিত। স্বপ্ন দেখা উচিত। নিজস্ব একটা জগত প্রত্যেকটা মেয়ের থাকা দরকার। নারী দিবস উপলক্ষ্যে নারীদের বার্তা দিলেন মাম্পি।
দয়ার পাত্র হয়ে থাকতে চায় না। নিজের পায়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে চায়। তাঁর স্বপ্নই তাঁকে বাঁচিয়ে রেখেছে। মাম্পি শিখিয়েছে দৃষ্টিহীন হলেও স্বপ্ন দেখার অধিকার সকলের।