Date : 2024-03-29

হাতির হানা আটকাবে মৌমাছি। তাই মধু চাষে উৎসাহ প্রশাসনের

সঞ্জু সুর, সাংবাদিক ঃ জঙ্গল থেকে প্রায়‌ই বেরিয়ে আসে হাতির পাল। ক্ষতিগ্রস্থ হয় চাষাবাদ। ঘটে প্রাণ হানির ঘটনাও। উত্তরবঙ্গের ‘বক্সা’, ‘জলদাপাড়া’ জাতীয় উদ্যানের আশপাশের এলাকার এ এক নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা। এবার তা আটকাতে অভিনব পথে হাঁটতে চলেছে জেলা প্রশাসন।

আলিপুরদুয়ার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ‘বক্সা’ ও ‘জলদাপাড়া’ জাতীয় উদ্যানের আশেপাশে থাকা বেশ কিছু গ্রামের মানুষ কে মধু চাষে উৎসাহিত করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে আলিপুরদুয়ার জেলার নুরপুর গ্রামে ২৭ লক্ষ টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ফালাকাটা ব্লকে ৪৮ লক্ষ, মাদারিহাটে ৪৭ লক্ষ ও কুমারগ্রাম ব্লকে ৩০ লক্ষ টাকা সহ মোট প্রায় দুই কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

এলাকার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে গ্রামবাসীদের হাতে মৌমাছি পালন ও মধু চাষের যন্ত্রপাতি তুলে দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে মৌমাছি প্রতিপালনের জন্য এক হাজারটি বাক্স গ্রামবাসীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তাদের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেই হাতে কলমে মৌমাছি পালনের পদ্ধতি শিখিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু হাতি আটকাতে মৌমাছি কি করবে ?

জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, জঙ্গলের অভিজ্ঞতায় দেখা গিয়েছে যে এলাকায় মৌমাছি মৌচাক বাঁধে, হাতির পাল সেই এলাকা এড়িয়ে চলে। মৌমাছির গুনগুন শব্দ হাতির পালকে অস্বস্তিতে ফেলে। সেই কারণেই মৌমাছি প্রতিপালনে জোড় দেওয়া হচ্ছে। এদিকে জেলা প্রশাসনের পক্ষে জেলাশাসক সুরেন্দ্রকুমার মীনা বলেন, “হাতির হানার ভয়ে একদিকে যেমন গ্রামবাসী গভীর জঙ্গলে যেতে পারেন না, তেমনি জঙ্গল লাগোয়া এলাকার চাষবাস ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অনেক সময় মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত ঘটে।

তাই হাতির পালকে লোকালয় বা গ্রামে ঢোকা থেকে আটকানোর জন্য এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।” জেলাশাসক আরও জানান, “এতে একদিকে যেমন গ্রামবাসীরা অতিরিক্ত আয়ের মুখ দেখবেন, তেমনি প্রাকৃতিক মধুর উৎপাদন ও বাড়বে।” সমগ্র আলিপুরদুয়ার জেলার প্রায় দুই হাজারের বেশি পরিবার এই চাষে যুক্ত হয়েছে। জেলা প্রশাসনের আশা এইভাবে মৌমাছি প্রতিপালনে এই বছর প্রায় ১০ হাজার কেজি মধু পাওয়া যাবে। সুন্দরবনে যে মধু উৎপাদন হয়, যার নাম ‘সুন্দরী’, ঠিক তেমনি উত্তরবঙ্গের এই মধুও খুব শীঘ্রই তার নিজস্ব ব্রান্ড ও নাম নিয়ে বাজারে আসতে চলেছে বলেই খবর।