Date : 2024-04-26

“বিনিয়োগের গন্তব্য বাংলা।” দুই দিনের বানিজ্য সম্মেলনের শেষে বললেন মুখ্যমন্ত্রী।

সঞ্জু সুর, রিপোর্টার:-গত পাঁচ বারের বিনিয়োগের প্রস্তাব কে ছাপিয়ে গেল ষষ্ঠ দফার বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিট। সর্বাধিক লগ্নির প্রস্তাব এসেছে বলে জানালেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। এদিকে কোভিড পরিস্থিতিতে এবছর এই সন্মেলন করা নিয়ে সংশয় ছিলো প্রশাসনের অন্দরেই।

কোভিড পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক হয় নি। বরঞ্চ নতুন করে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে দিল্লি সহ বেশকিছু জায়গায়। এমন অবস্থায় বানিজ্য সম্মেলন করা যাবে কিনা তা নিয়ে সন্দিহান ছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব থেকে শুরু করে শিল্প দফতরের আধিকারিকরা। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটু অন্য রকম ভেবেছিলেন। মূলতঃ তাঁর নির্দেশেই দুই দিনের বানিজ্য সম্মেলন আয়োজন করা হয়। শেষ দিনের মঞ্চে সেকথা জানালেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “মুখ্যসচিব থেকে শুরু করে পার্থ দা(শিল্প মন্ত্রী), অমিত দা (মুখ্যমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা),শিল্প সচিব সবাই বলছিল এই সময় কিভাবে সন্মেলন করা যাবে। আমি তখন বললাম, এখন কোভিড সিচুয়েশন অনেকটাই কম। লেট আস ডু ইট নাও।” মুখ্যমন্ত্রীর এই উৎসাহ দেখে শেষ পর্যন্ত বিজিবিএস আয়োজনের কাজ শুরু করে নবান্ন। এদিন তথ্য পরিসংখ্যান দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান এই সন্মেলন আয়োজন করা হয়েছিলো বলেই এত বছরের মধ্যে সর্বাধিক বিনিয়োগের প্রস্তাব এসেছে এই বছরেই। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “দুই দিনের এই বানিজ্য সম্মেলনে মোট ৩,৪২,৩৭৫ কোটি টাকার বিনিয়োগের প্রস্তাব এসেছে। যা সর্বাধিক।” মোট ১৩৭ টি মৌ (MoU) সাক্ষর হয়েছে বলেও জানান তিনি। শিল্পপতিদের আশ্বস্ত করে তাঁদের বাংলায় বিনিয়োগে আমন্ত্রণ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আপনি যদি স্টেবিলিটি চান, তাহলে সেই স্টেবিলিটি বাংলায় রয়েছে। আপনারা এখানে আসুন, বাংলার জন্য ভাবুন, বাংলায় বিনিয়োগ করুন। বাংলা আপনাকে প্রতিদান দেবে, এটা আমি নিশ্চিত করেই বলছি।”
সর্বাধিক বিনিয়োগ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দাবি প্রসঙ্গে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার সঙ্গে বাস্তবের কোন মিল আছে ? আদানির সঙ্গে ওনার বন্ধুত্বের বাড়তি কারণ আছে, সেটা আমরা বুঝি। আদানি এখন তেমন কথাই বলবেন যাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খুশি হন এবং মোদি সাহেব খুশি হন। এই যে ছয়টা সম্মেলন হলো, উনি বরং ছয়টা কারখানার নাম বলুন যার গেট উনি উদ্বোধন করেছেন। পশ্চিম বাংলার মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে।”

এই বিষয়ে বিজেপি নেতা দিলিপ ঘোষ বলেন, “কত টাকা বিনিয়োগ হয়েছে ! কটা কারখানা হয়েছে! কত লোক চাকরি পেয়েছে! প্রতি বার সেই একই লোকের আসেন, সেই একই কথা বলেন। এক‌ই প্রতিশ্রুতি দেন। বাস্তবে তার কোনো প্রয়োগ হয় না। এবার আরো বেশি বড় কথা বলেছেন, বেশি বড় ঢপ দিয়েছেন। কেবল প্রতিশ্রুতির বন্যা।”
তবে বিরোধীরা যাই বলুক না কেন এবারের বানিজ্য সন্মেলন যথেষ্ট সফল হয়েছে বলেই মনে করছেন নবান্নের কর্তারা। এদিকে এই সাফল্যে উৎসাহিত মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন ২০২৩ সালের বিশ্ববঙ্গ বানিজ্য সম্মেলন হবে তিনদিনের। আগামি বছর ফেব্রুয়ারি মাসের ১-৩ তারিখ পর্যন্ত এই সন্মেলন হবে।