Date : 2024-04-23

তীব্র দাবদাহ। আট দফা পরামর্শ কৃষি দফতর ও জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের

সঞ্জু সুর, সাংবাদিক : কালবৈশাখী নেই। বৃষ্টি নেই। নেই তীব্র দাবদাহ থেকে আপাতত পরিত্রাণের কোনো উপায়। নাজেহাল অবস্থা রাজ্যবাসীর। বৃষ্টির আকালে নাজেহাল অবস্থা কৃষকদের‌ও। এই অবস্থায় কৃষকদের জন্য আট দফা পরামর্শ দিলো রাজ্যের কৃষি দফতর। পাশাপাশি পানীয় জলের যাতে কোনো সংকট না হয় তার জন্য আট দফা নির্দেশিকা জারি করলো জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর।

চড়চড়িয়ে বাড়ছে গরম। প্রতিদিন নিজের রেকর্ড নিজেই ভাঙছে তাপমাত্রা। পাল্লা দিয়ে বিশ্বাঘাতকতা করছে বৃষ্টিও। চাষের জমি ফুটিফাটা। মাথায় হাত কৃষকদের। মাঠের ফসল মাঠেই পুড়ে খাঁক হ‌ওয়ার যোগাড়। ইতিমধ্যেই রাজ্যের কৃষি অধিকর্তা জেলা কৃষি আধিকারিকদের সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা সেরেছেন। তারপরেই কৃষকদের জন্য আট দফা পরামর্শ জারি করেছে রাজ্যের কৃষি দফতর। এই সময় ফসল বাঁচাতে কি করতে হবে বা কি করা যাবে না তা মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এই বিষয়ে রাজ্যের বিধায়ক তথা মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার বলেন, “আমাদের মূল ফসল এখন বোরো ধান। তার কোনো অসুবিধা নেই। যদি কোনো সাইক্লোনিক স্ট্রম না আসে তাহলে ভালো ফসল ঘরে উঠবে। তবে কিছু ফল ও সবজি চাষের ক্ষেত্রে জল না থাকলে জল দিতে হবে। তাছাড়া আর কোনো উপায় নেই।”
কৃষকদের আট দফা পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি যদি তাদের আরো কিছু জানার প্রয়োজন হয় তাহলে নিকটবর্তী কৃষি অফিসে যোগাযোগের পরামর্শ‌ও দেওয়া হয়েছে।

এদিকে রাজ্যের বারোটি জেলায় তীব্র দাবদাহের প্রভাব দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর। যে জেলাগুলোর কথা জানিয়েছে কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর সেই জেলাগুলো হলো পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগণা, বীরভূম, মালদহ, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা। দাবদাহের ফলে এই জেলাগুলোতে যাতে কোনোরকম জলকষ্ট না হয় সে কথা মাথায় রেখে জরুরি কালীন ভিত্তিতে আট দফা বিভাগীয় নির্দেশিকা জারি করেছে রাজ্যের জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর‌ও। যদি কোনো জেলার কোনো ব্লকে জলকষ্ট দেখা দেওয়ার ন্যুনতম সম্ভাবনা থাকে তাহলে তৎক্ষণাৎ সেই জেলার জেলাশাসকের পরামর্শ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমানে পানীয় জলের গাড়ি মজুত রাখতে হবে। মজুত রাখতে হবে পর্যাপ্ত পানীয় জলের পাউচ। পানীয় জলে যাতে কোনো দূষণ না হয় তার জন্য ক্লোরিন এর ব্যবস্থা রাখার কথাও বলা হয়েছে বিভাগীয় মেমো তে। যেসব স্কুল, অঙ্গন‌ওয়াড়ি কেন্দ্র, হাসপাতাল বা সরকারি অফিসে পানীয় জলের যোগানের দায়িত্বে রয়েছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর, সেখানে জল সরবরাহের সময় বাড়াতে হবে এবং যতদিন না এই তাপপ্রবাহ কমছে ততদিন প্রতিদিনের রিপোর্ট মেইল করে দফতরের হেড অফিসে জানাতে হবে বলেও নির্দেশিকায় উল্লেখ করা হয়েছে।

এদিকে তাপপ্রবাহ মোকাবিলায় করনীয় বিষয় নিয়ে এদিন‌ই বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের পক্ষ থেকেও সব জেলার জেলাশাসকদের আলাদা করে নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। সব মিলিয়ে বলা যায়, রাজ্যের এই নজিরবিহীন অবস্থায় সরকারের প্রতিটি দফতর‌ই তাদের মতো করে রাজ্যবাসীর পাশে থেকে বিভিন্ন পরামর্শ ও নির্দেশিকা জারি করেছে। পাশাপাশি বুধবার মুখ্যমন্ত্রীর পৌরহিত্যে যে বৈঠক হ‌ওয়ার কথা সেই বৈঠকেও এই বিষয়ে কিছু সিদ্ধান্ত হতে পারে বলেই মনে করছেন নবান্নের আধিকারিকরা।