Date : 2024-04-20

স্বপ্নের কোনও সীমা হয় না। ফুটপাতে বসেই পাইলট হওয়ার স্বপ্ন দেখে ছোট্ট সৌভিক

শাহিনা ইয়াসমিন,সাংবাদিক :- আকাশে ওড়ার জন্য শুধু ডানা থাকলে হয় না। সাহস থাকা দরকার। সেই সাহস নিয়ে ওড়ার ক্ষমতা রাখে এই শহরের এক ছোট্ট বালক। ফুটপাতে বসে পাইলট হওয়ার অদম্য ইচ্ছা তাকে তার লক্ষ্যে পৌঁছে দেবে, সেই আশায় অটল সে।

প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি বৈজ্ঞানিক এপিজে আব্দুল কালামের ভাষায়- স্বপ্ন সেটা নয়, যা মানুষ ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে দেখে। স্বপ্ন সেটাই যা পূরণের প্রত্যাশা মানুষকে ঘুমাতে দেয় না। এমনিতে খোলা চোখেই পাইলট হওয়ার স্বপ্ন দেখে ন’বছরের সৌভিক দাস। তবে কোনও পাকা বাড়িতে নয়, সে স্বপ্ন দেখে ফুটপাতে বসেই। পার্কসার্কাসের ডন বস্কো স্কুলের কাছে ফুটপাতেই সৌভিকের দিন গুজরান।

বেলা ১১ টা থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত পার্কসার্কাসের ফুটপাতে তাকে দেখতে পাবেন। ফুটপাতে বসেই তার পড়াশোনা। বর্তমানে ডন বস্কো স্কুলের ডে শিফ্টে ক্লাস ফোরে পড়ে। বিকেল তিনটে থেকে সন্ধে সাতটা পর্যন্ত স্কুল। পড়াশোনায় খুব ভালো, হাতের লেখা দুর্দান্ত।

পথচলতি মানুষরা সৌভিককে দেখে কেউ খাবার, অর্থ, খাতা পেনসিল দিয়ে সাহায্য করে। পার্কসার্কাসে রেললাইনের ধারে মা ও দিদা বেবিরানি দাসের সঙ্গে ঝুপড়িতে বাস সৌভিকের। বাবা নেই। মা লোকের বাড়িতে কাজ করেন। সৌভিক অতসত বোঝে না। বইয়ের পাতায় ওয়ার্ডবুকের গল্পে তার রঙিন দুনিয়া। আর দুচোখে বিস্ময়। সে শুধু জানতে চায় আর পড়তে চায়। বইয়ের পাতাতেয় তার যত আনন্দ। ছোট ছোট চোখে একটাই বড় স্বপ্ন- পাইলট হওয়া।

গ্রীষ্মের এই গরমে রোদের হাত থেকে বাঁচতে ভাঙা ছাতার আড়লে বসে পড়াশোনা ছোট্ট সৌভিকের। সৌভিককে মানুষের মতো মানুষ করার লড়াই সৌভিকের দিদার। তাইতো নাতিকে নিয়ে রোজ চলে আসেন এই ফুটপাতে। একদিকে দারিদ্র অন্যদিকে সৌভিকের স্বপ্ন। এই দুইকে কাঁধে নিয়ে লড়াই দিদা ও নাতির। কারণ শিক্ষাই পারে সব অন্ধকারকে মুছে ফেলতে।