Date : 2024-04-25

দেউচার জটিলতা কাটাতে উদ্যোগ মুখ্যমন্ত্রীর। নবান্নে বৈঠক আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধির সঙ্গে।

সঞ্জু সুর, সাংবাদিক : দেউচা পাচামি কয়লা প্রকল্প রাজ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। এই প্রকল্পের ঘোষণার পর থেকে প্রকল্পের বিরোধীতায় নামে বেশকিছু সংগঠন। বুধবার নবান্নে তাদের‌ই প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বীরভূমের মহম্মদবাজার ব্লকের দেউচা পাচামিতে প্রস্তাবিত কয়লা প্রকল্পের এলাকায় প্রায় ৪,৫০০ টি পরিবার রয়েছে। দেউচা পাচামি, হরিণসিঙ্গা, দেওয়ানগঞ্জ প্রভৃতি এলাকায় ছড়িয়ে রয়েছে এই পরিবারগুলো। এরমধ্যে ১৯০৮ টি পরিবার ইতিমধ্যেই প্রকল্পের বিষয়ে তাদের সম্মতির কথা জানিয়েছে রাজ্য সরকারকে। এই ১৯০৮ টি পরিবারের মধ্যে দেওয়ানগঞ্জ-হরিণসিঙ্গা এলাকায় রয়েছে ৭৫৭ টি পরিবার। দেউচা পাচামিতে রয়েছে ১০১৪ টি পরিবার আর প্রকল্পের সীমানা এলাকার ১১৭ টি পরিবার‌ও তাদের সম্মতি জানিয়ে দিয়েছে বলে দাবি প্রশাসনের। রাজ্য সরকারের প্রস্তাবিত ক্ষতিপূরণ প্যাকেজ তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য বলেই তারা জানিয়েছেন। কিন্তু বাধ সেঁধেছে বাকি পরিবারগুলো। এলাকার ৩৬ টি গ্রাম নিয়ে তৈরি মহাসভা এখনো ক্ষতিপূরণ নিয়ে এলাকা ছাড়তে রাজি নয়। তারা ধর্ণা চালিয়ে যাচ্ছে। বুধবার এই মহাসভার প্রায় কুড়িজন প্রতিনিধি নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন।
‘দেউচা পাচামি কয়লা প্রকল্প উদ্যোগ বিরোধী কমিটি’-র প্রধান কুনাল দেব নবান্নে না আসলেও টেলিফোনে তিনি জানান,”মুখ্যমন্ত্রী যে উদ্যোগ নিয়েছেন, তা সদর্থক। এতদিনে এই প্রথম সরাসরি গ্রামের মানুষের সঙ্গে তিনি কথা বলছেন। আমরা এটাই চাইছিলাম।” কুনাল দেব আরও বলেন, “আমাদের যা বলার তা মুখ্যমন্ত্রী কে জানিয়েছি। মুখ্যমন্ত্রী যা বলেছেন সেটা নিয়ে আমরা মহাসভায় আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবো ধর্ণা তুলবো কিনা।” “আমাদের একটা দাবি আছে। এই আন্দোলন করতে গিয়ে আমাদের যাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে, সেগুলো তুলে নিতে হবে। আর প্রকল্পের ঠিক বাইরে যে গ্রামগুলো রয়েছে সেখানকার আদিবাসীদের‌ও সম্পূর্ণ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।” দাবি কুনাল দেবের। এদিকে নবান্ন সূত্রে খবর, বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আন্দোলনকারীদের কাছে জানতে চান তারা প্রকল্প চান কি চান না সেটা পরিষ্কার করে জানাক। জানা যাচ্ছে মুখ্যমন্ত্রী প্রতিনিধিদলকে জানিয়ে দেন আপনারা প্রকল্প না চাইলে আপনাদের এলাকা বাদ দিয়ে রাজ্য সরকারের হাতে থাকা এলাকাতেই প্রকল্প করা হবে। আর সেক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণে যে চাকরি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে সেই বিষয়েও সরকার পুনরায় ভাবনাচিন্তা করবে। বৈঠক সূত্রে খবর আন্দোলনকারীরা মুখ্যমন্ত্রীকে জানান তারা এলাকায় ফিরে গিয়ে মহাসভার সঙ্গে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেবেন।
বিশ্ব বাংলা বানিজ্য সম্মেলনের আগে দেউচা পাচামির সমস্যা মেটাতে মুখ্যমন্ত্রীর এই উদ্যোগ কতটা ফলপ্রসূ হবে তা সময়‌ই বলবে।