সঞ্জু সুর, সাংবাদিক : স্বাস্থ্য সাথী কার্ড নিয়ে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার নবান্ন সভাঘরে স্বাস্থ্য বিষয়ক বৈঠকে নিজের ক্ষোভের কথা জানান তিনি। স্বাস্থ্য সাথী কার্ড অনেক হাসপাতাল মান্যতা দিচ্ছে না। তেমন হলে সেই সব হাসপাতালের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলেও হুঁশিয়ারি মুখ্যমন্ত্রীর।
সূত্রের খবর, এদিনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী পরিষ্কার জানান স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো কোনো হাসপাতাল গড়িমসি করছে। এটা হতে দেওয়া যাবে না। রাজ্য সরকার গরীব মানুষের চিকিৎসার কথা ভেবে এই কার্ড করেছে। এই কার্ডে চিকিৎসার খরচের দায়ভার তো রাজ্য নিজের কাঁধে নিয়েছে। তাহলে কেন স্বাস্থ্য সাথী কার্ড কে অবহেলা করা হবে। মুখ্যমন্ত্রীর পরিষ্কার নির্দেশ, যারা এটা করবে প্রয়োজনে খতিয়ে দেখে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। মুখ্যমন্ত্রীর মতে, “যারা স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে চিকিৎসা করাবে না, প্রয়োজনে তাদের (হাসপাতালগুলোর) স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে।” এছাড়াও স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে বাইরের রাজ্যে চিকিৎসা করাতে গেলে নিতে হবে বিশেষ অনুমতি। এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে আমাদের রাজ্যে চিকিৎসা না করিয়ে অন্য রাজ্যে করালে আমাদের এখানকার টাকা অন্য রাজ্যে চলে যায়। আমি চাইবো আমাদের এখানকার টাকা এখানেই থাকুক। শুধুমাত্র বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে বাইরের রাজ্যে চিকিৎসা করানোর জন্য যাওয়া যেতে পারে। এই বিষয়টা দেখার জন্য মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি করা হয়েছে।” প্রসঙ্গত গত কয়েক বছরে এই খাতে প্রায় ৩৬ কোটি টাকা বাইরের রাজ্যে চলে গিয়েছে।
এছাড়া বুধবারের বৈঠকে একগুচ্ছ নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেগুলো হলো :
১) রাজ্য পুলিশ, কলকাতা পুলিশ, জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ রক্তদান শিবির করার উপর জোর দিতে হবে। সেই সঙ্গে ক্লাব গুলোকেও রক্তদান শিবির করার জন্য উৎসাহ দিতে হবে।
২) মালদহ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, জলপাইগুড়ি ও ঝাড়গ্রাম জেলায় কোভিড টিকাকরণের হার এখনো ৯০ শতাংশের নিচে। এটা বাড়াতে হবে।
৩) রাজ্যে কোভিড মোকাবিলার পরিকাঠামো এখন যথেষ্ট ভালো। নতুন করে কোভিড (চতুর্থ ঢেউ) সংক্রমণ বাড়লেও তা মোকাবিলা করা সমস্যার হবে না।
৪) জেলার হাসপাতাল থেকে রেফার করার প্রবণতা কমাতে হবে। অ-কোভিড রোগীদের চিকিৎসায় কোনো গাফিলতি করা যাবে না।
৫) সু-স্বাস্থ্য কেন্দ্র গুলোর পরিষেবা ভালো হয়েছে। এই সব স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোর পরিকাঠামো আরো ভালো করতে হবে।
৬) হাসপাতালগুলোতে সারপ্রাইজ ভিজিট করতে হবে।
৭) ডেঙ্গু প্রতিরোধে এখন থেকেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।