Date : 2024-03-28

পাপ করলো বিজেপি, কষ্ট করবে জনগন ? টুইটে কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি মুখ্যমন্ত্রীর

সঞ্জু সুর, সাংবাদিক : বিক্ষোভের নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টার বিরুদ্ধে এবার কঠোর পদক্ষেপের পথে প্রশাসন। সেই লক্ষেই ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করার পাশাপাশি হাওড়ার বেশকিছু এলাকায় জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা।

পয়গম্বর সন্মন্ধে দিল্লি বিজেপির বহিস্কৃত মুখপাত্র নূপুর শর্মার মন্তব্য নিয়ে উত্তাল দেশ। তার রেশ আছড়ে পড়েছে আমাদের রাজ্যেও। গত বৃহস্পতিবার থেকে বিশেষ করে হাওড়ার বিভিন্ন জায়গায় রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বিক্ষোভকারিরা। দীর্ঘক্ষণ রাস্তা অবরোধের খবর পাওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলন করে বিক্ষোভকারীদের প্রতি বার্তা দেন। তিনি আবেদন করেছিলেন যাতে রাস্তা আটকে এইভাবে বিক্ষোভ না দেখানো হয়।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “যারা নবীকে নিয়ে মন্তব্য করেছেন তাদের স্থান হ‌ওয়া উচিত তিহাড় জেল।” সেই সঙ্গে তার আরও মন্তব্য, “দিল্লির ঘটনা নিয়ে কেন শান্ত বাংলাকে অশান্ত করা হচ্ছে।” কিছুটা ক্ষোভ প্রকাশ করেই বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “দিল্লিতে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান। প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করুন। থানায় থানায় এফআইআর করুন ওদের নামে। কিন্তু রাস্তা আটকে কোনো আন্দোলন করবেন না।” কিছুটা হুঁশিয়ারির সুরেই মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন এইসব আন্দোলন আমি পুলিশ দিয়ে টেনেহিঁচড়ে বন্ধ করে দিতে পারি। কিন্তু সেটা আমি করবো না। মুখ্যমন্ত্রীর সাংবাদিক সম্মেলনের পরেও সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত অবরোধ চলতে থাকে অঙ্কুরহাটি এলাকায়। তারপরেও বিক্ষিপ্তভাবে সলপ সহ কয়েকটি জায়গায় অবরোধ করে বিক্ষোভকারীরা। বৃহস্পতিবারের ঘটনার পর শুক্রবারেও দফায় দফায় হাওড়ার বিভিন্ন জায়গায় অবরোধ করেন বিক্ষোকারীরা। রাস্তায় আটকে পড়েন হাজার হাজার মানুষ। এর‌ই মধ্যে হিংসাত্বক চেহারা নেয় বিক্ষোভ। থানা ভাঙচুর থেকে শুরু করে বাড়ি দোকান জ্বালিয়ে দিয়ে ব্যক্তিগত সম্পত্তির ক্ষতিসাধন করে বিক্ষোভকারীরা।

বৃহস্পতিবারের পর শুক্রবারেও পুলিশ যথেষ্ট সংযত ভুমিকা পালন করে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেও যেভাবে বিশৃঙ্খল ও হিংসাশ্রয়ী আন্দোলন করা হচ্ছে তাতে যথেষ্ট ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং। শনিবার সকালে তিনি একটি কড়া টুইট করেন।

টুইটে মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, “আগেও বলেছি, দুদিন ধরে হাওড়ার জনজীবন স্তব্ধ করে হিংসাত্মক ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। এর পিছনে কিছু রাজনৈতিক দল আছে এবং তারা দাঙ্গা করাতে চায়-কিন্তু এসব বরদাস্ত করা হবে না এবং এসবের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা হবে। পাপ করল বিজেপি, কষ্ট করবে জনগণ?”

মুখ্যমন্ত্রীর এই টুইট বার্তাতেই পরিষ্কার, রাস্তা অবরোধ করা, বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি করা, বিরোধ বিক্ষোভের নামে হিংসার আশ্রয় নেওয়া হলে পুলিশ প্রশাসন এবার কিন্তু বলপ্রয়োগের রাস্তায় হাঁটবে। প্রসঙ্গত ইতিমধ্যেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে হাওড়া জেলার বেশ কিছু অংশে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যা আগামী ১৩ জুন ভোর ছয়টা পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। পাশাপাশি অবাঞ্ছিত জমায়েত এড়াতে উলুবেড়িয়া সাব ডিভিশন সহ গ্রামীণ ও শহর হাওড়ার বেশকিছু থানা এলাকায় ১৫ জুন পর্যন্ত জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা।