Date : 2024-04-25

মানত রক্ষায় শুক্রবার সিঙ্গুরে মুখ্যমন্ত্রী। কি মানত ছিলো, জানালেন নিজেই।

সঞ্জু সুর, সাংবাদিক : এরাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের ক্ষমতায় আসার পিছনে অন্যতম অনুঘটকের কাজ করেছিলো সিঙ্গুরের জমি আন্দোলন। যে আন্দোলন তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে ঠিক কতটা রাজনৈতিক মাইলেজ দিয়েছিলো তা আজ সকলের জানা। শুক্র বেলায় সেই সিঙ্গুরে আবার যাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার যাচ্ছেন নিজের করা মানত রক্ষায়।

২০০৭ সাল। সিঙ্গুরে টাটা মোটরসের কারখানা তৈরি নিয়ে অনিচ্ছুক কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে পৌঁছে গিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিছুতেই অনিচ্ছুক কৃষকদের জমি টাটাদের হাতে তুলে দেওয়া যাবে না। এই দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন তিনি। সেখানেই অনশন শুরু করেন যা চলেছিলো ২৬ দিন। সেই অনশন শুরুর দিকেই তৎকালীন বিরোধী নেত্রী একটা মানত করেছিলেন সন্তোষী মায়ের কাছে, যা এতদিন প্রায় কেউই জানতো না।

বৃহস্পতিবার ভবানীপুরের কাঁসারিপাড়ায় শীতলা পুজোর উদ্বোধনে এসে সেই কথা প্রথম জনসমক্ষে আনলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, “সিঙ্গুরে কৃষকদের জমি ফেরতের আন্দোলনের সময়ে আমি দীর্ঘ ২৬ দিন অনশন করেছিলাম। শুরুর দিন আমি সন্তষী মায়ের ব্রত করেছিলাম। আর মনে মনে বলেছিলাম, মা, যদি কৃষকদের জয় হয় আমি তোমার একটা ছোট্ট মন্দির গড়ে দেব।” কৃষকদের জয় হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ২০১৬ সালে অনিচ্ছুক কৃষকদের জমিও ফেরত দেওয়া হয়েছে।

এবার নিজের করা মানত রক্ষার পালা। তাই শুক্রবার সিঙ্গুর সফরে মুখ্যমন্ত্রী। সিঙ্গুরের বাজেমেলিয়া হাসপাতালের পাশে সন্তোষীমায়ের মন্দির তৈরির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। শুক্রবার সেখানেই যাবেন মুখ্যমন্ত্রী। এই প্রসঙ্গে এদিন মমতা বলেন, “কাল আমি সন্তোষীমায়ের মুখটা দেখতে যাব।” বৃহস্পতিবার শীতলা পুজোর উদ্বোধন, শুক্রবার সন্তোষী মা দর্শন। আগামি পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে কি তাহলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নরম হিন্দুত্বের পথে হাঁটতে চাইছেন ? প্রশ্ন ওঠার আগেই তার উত্তর‌ও নিজেই দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

ভবানীপুরে দাঁড়িয়ে তিনি বললেন, “এখানে মন্দির যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে মসজিদ, রয়েছে গুরুদ্বোয়ারা। আমি রোজা ভাঙাতে যেমন যাই, তেমনি গুরুদ্বোয়ারাতেও যাই।” তিনি যে সবসময়েই সর্বধর্ম সমন্বয়ে বিশ্বাস করেন তা এর আগেও তিনি অনেকবার বলেছেন এবং কার্যক্ষেত্রে সেটা করেও দেখান। ফলে এরমধ্যে রাজনীতি খুঁজতে যাওয়া অনর্থক বলেই মত রাজনৈতিক তথ্যাভিজ্ঞ মহলের।