Date : 2024-04-24

কেন্দ্র টাকা দেওয়া বন্ধ করলেও প্রকল্প বন্ধ হবে না। সাফ জানালেন মুখ্যমন্ত্রী।

সঞ্জু সুর, সাংবাদিক : বিগত ছয় মাস ধরে একশো দিনের কাজের টাকা দিচ্ছে না কেন্দ্র। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ‘বাংলার বাড়ি’, ‘বাংলা সড়ক যোজনা’ সহ আরো বেশ কিছু কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা দেওয়া। তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর বারবার এই অভিযোগ করে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে কেন্দ্র টাকা না দিলেও বন্ধ হবে না কোনো প্রকল্পের কাজ। বুধবার দুর্গাপুরের সৃজনী প্রেক্ষাগৃহে দুই বর্ধমান জেলার প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠকে আরো একবার নিশ্চিত করে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

কেন্দ্র একশো দিনের কাজের টাকা না দিলেও নিজেদের অন্যান্য দফতরের থেকে টাকা বাঁচিয়ে একশো দিনের কাজের বেতনের ব্যবস্থা করছে রাজ্য। এবার বাংলার বাড়ি প্রকল্পের কাজ যাতে আটকে না যায় তার জন্য নতুন এক পন্থা বের করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুর্গাপুরের মঞ্চ থেকে তিনি সমস্ত জেলার জেলাশাসক, সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক দের এবং তার সঙ্গে সঙ্গে জেলা পরিষদের সভাধিপতি ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিদের জানিয়ে দিলেন যে বাংলার গ্রামে যে রাস্তা তৈরি হয় সেই রাস্তার টাকা জেলা পরিষদের নিজস্ব তহবিল থেকেই করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাস্তা তৈরি করার জন্য যে ৪০ শতাংশ টাকা পঞ্চায়েত গুলোকে দেওয়া হয়, সেই টাকা তিনি বাংলার বাড়ি তৈরীর জন্য ব্যবহার করবেন। আর জেলা পরিষদ বা পঞ্চায়েত গুলো তাদের তহবিলের ৫০ শতাংশ টাকা রাস্তা তৈরির জন্য ব্যয় করবে। জেলাশাসকদের পাশাপাশি জেলা পরিষদের সভাধিপতি ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিদের বিষয়টি বুঝে নেওয়ার জন্য বলেন মুখ্যমন্ত্রী। ২০২৩ এ পঞ্চায়েত নির্বাচন। সেই নির্বাচনে যাতে তাঁর দলের প্রতিনিধিরা জয়লাভ করেন তার জন্য পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধিদের কাজ বুঝিয়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন,”জেলা পরিষদ ও পঞ্চায়েতের প্রতিনিধিদের বলছি, কাজগুলো ঝটপট করুন। রাস্তা তৈরি না হলে কিন্তু কেউ ভোট দেবে না। যদি দরকার হয় নিজে মাথায় করে ইঁট বইবেন। আপনি না পারলে আমায় ডাকবেন।” মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, “ইলেকশন কখন ডিক্লেয়ার হয়ে যাবে বুঝতে পারবেন না। কাজ না হলে কিন্তু ইলেকশনে ললিপপ পাবেন।” তবে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ বন্ধ না করা হলেও আর্থিক সমস্যা থাকায় নতুন করে ‘বাংলার বাড়ি’ যোজনা প্রকল্পে আবেদন গ্রহণ করা বন্ধ করা হল বলেই জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মতে, আগে যে আবেদনগুলো জমা পড়েছে সেগুলোর কাজ আগে শেষ হোক, তারপর না হয় নতুন বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করা যাবে। মুখ্যসচিবের কাছ থেকে জেনে নিয়ে তিনি বলেন, “আমরা এই বছর দশ লক্ষ নতুন বাড়ি তৈরি করবো। পাঁচ বছরে পঞ্চাশ লক্ষ বাড়ি তৈরি হয়ে যাবে।” বাংলার বাড়ি হোক বা বাংলা সড়ক যোজনা অথবা একশো দিনের কাজের মজুরী প্রদান, গ্রাম বাংলার অর্থনীতির সঙ্গে সরাসরি জড়িত প্রকল্পগুলোর বিষয়ে আগামি পঞ্চায়েত নির্বাচন পর্যন্ত যে কোনোরকম আপস করা হবে না, মুখ্যমন্ত্রীর কথায় তা একপ্রকার নিশ্চিত।