Date : 2024-04-26

২১শে জুলাই সমাবেশের নামে কোনো টাকা তোলা যাবে না। প্রস্তুতি সভায় কড়া হুঁশিয়ারি অভিষেকের

সঞ্জু সুর, সাংবাদিক : করোনার কারণে দু’বছর বন্ধ থাকার পরে এবছর ফের রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস ২১ জুলাই তাদের বাৎসরিক শহীদ তর্পণ দিবস পালন করবে ধর্মতলায়। ওই সভার নাম করে কার‌ও কাছ থেকে কোনো টাকা তোলা যাবে না বলে শুক্রবার তৃণমূল ভবনে এক প্রস্তুতি বৈঠকে কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকে অভিষেক বলেন, কার‌ও বিরুদ্ধে যদি এমন অভিযোগ ওঠে তাহলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে তাকে দল থেকে বহিস্কার করা হবে।

সপ্তাহ দুয়েক আগে হলদিয়ায় তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের এক সমাবেশে অভিষেক বলেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস করতে হলে কোনো ঠিকাদারি করা যাবে না। অভিষেকের বার্তা ছিলো স্পষ্ট। দলের কিছু নেতা কর্মির বিরুদ্ধে যেভাবে বেআইনিভাবে টাকা রোজগারের অভিযোগ উঠছে, তাতে রাশ টানতে চাইছেন তিনি। শুক্রবার তৃণমূল ভবনের বৈঠকেও এক‌ই লক্ষে তাঁর হুঁশিয়ারি ২১ জুলাইয়ের নামে কোনো টাকা তোলা যাবে না। অভিষেকের নির্দেশ, শহীদ তর্পণ দিবসের অনুষ্ঠানের জন্য জেলায় জেলায় যেসব প্রস্তুতি সভা, সমিতি, মিটিং, মিছিল বা পোষ্টার, ব্যানার লাগানো হবে তারজন্য কেন্দ্রীয়ভাবে দলের পক্ষ থেকে সমস্ত ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। টাকা তোলার বিষয়ে কড়া অবস্থান নেওয়ার পাশাপাশি এদিনের বৈঠকে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

শহীদ দিবসকে ঐতিহাসিক রূপ দিতে এবার দক্ষিণবঙ্গের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গ ও জঙ্গলমহলের দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হবে বলে ঠিক করা হয়েছে। বৈঠক শেষে তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, “অন্যান্যবার কলকাতা এবং সংলগ্ন জেলা গুলি থেকে লোক আনার ওপর জোর দেওয়া হলেও এবছর উত্তরবঙ্গের মানুষের যোগদানের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে জঙ্গলমহলের দিকেও। উত্তরবঙ্গের জেলাগুলো থেকে যাতে এবছর বেশি মানুষ সমাবেশে যোগ দেন তা নিশ্চিত করতে জেলা নেতৃত্বকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” উত্তরবঙ্গের দিকে কেন হঠাৎ বিশেষ জোর দেওয়া হল এই প্রশ্নের উত্তরে পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি উত্তরবঙ্গের মানুষের আস্থা ক্রমশঃ বাড়ছে। তিনি যখন‌ই উত্তরবঙ্গে যান তখনই তাঁর ভাষণ শোনার জন্য মানুষ উপস্থিত হন। তাই এবার শহীদ তর্পণ দিবসে তাদের নিয়ে আসার উপর জোর দেওয়া হয়েছে।” উত্তরবঙ্গের প্রতি এই বাড়তি নজর আসলে ২০২৩ এর পঞ্চায়েত নির্বাচন তথা বিশেষ করে ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনের দিকে লক্ষ্য রেখেই বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। কারণ ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচন থেকে শুরু করে ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গে কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস তেমন ভালো ফল করতে পারে নি। যদিও তৃণমূল কংগ্রেসের উত্তরবঙ্গের নেতাদের মতে সাম্প্রতিক পুরসভা নির্বাচনে কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস আশাতীত ভালো ফল করেছে। ফলে আগামিদিনে তারা দক্ষিণের মতো উত্তরেও ভালো ফল করবে। এদিন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারন সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সভাপতি সুব্রত বক্সি, ফিরহাদ হাকিমের উপস্থিতিতে এই বৈঠকে তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতিরা ও বিভিন্ন শাখা সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।