Date : 2024-03-29

কাজে ঢিলেমি। ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী। ক্ষোভ মেটাতে তৎপর নবান্ন

সঞ্জু সুর, সাংবাদিক : গত দুই সপ্তাহে চারটি জেলার প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রতিটি বৈঠকেই তিনি চূড়ান্ত ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রশাসনিক কাজের ঢিলেমি নিয়ে। মুখ্যমন্ত্রীর এই ক্ষোভ প্রশমনে তৎপর নবান্নের শীর্ষ কর্তারা। সাত তারিখ বৈঠক ডাকলেন মুখ্যসচিব।

“ওয়ার্ক ইন প্রোগ্রেস জিনিস টা কি ? খায়, না মাথায় দেয় !” ঠিক এই ভাষাতেই জেলা সফরে নিজের ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষোভের কারণ কি ছিলো সেটাও জেলার প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠকের ভরা মঞ্চে জানিয়েছিলেন তিনি। হাতে একটা তালিকা নিয়ে নাম ধরে ধরে, প্রকল্প ধরে ধরে তিনি বলেন, “এইসব কাজ এত বছর ধরে পরে আছে। জানতে চাইলেই বলা হয় ওয়ার্ক ইন প্রোগ্রেস।”
নবান্ন সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রীর এই ক্ষোভ প্রশমনের ব্যবস্থার জন্য‌ই আগামি সাত জুন বিকাল চারটায় রাজ্যের সব জেলার জেলাশাসক ও বিভিন্ন জেলার দ্বায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত মুখ্য সচিব, প্রধান সচিব পদমর্যাদার আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করবেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। বৈঠকের আলোচ্য সূচিতে লেখা হয়েছে
১) গত ১১ বছরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে সমস্ত প্রকল্পের শিলান্যাস করেছেন বা যেসব পরিকল্পনার কথা ঘোষনা করেছেন তার বর্তমান স্টেটাস রিপোর্ট কি তা রেডি রাখতে হবে।
২) মুখ্যমন্ত্রী গ্রিভান্স সেলে আসা অভিযোগ জেলায় পাঠানো হলে অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে তা নিষ্পত্তি করতে হবে।
পাশাপাশি
৩) বিভিন্ন দপ্তরের কাজের সুফল উপভোক্তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য বাংলা সহায়তা কেন্দ্র গুলোকে আরো বেশি কার্যকর ও জনপ্রিয় করে তুলতে হবে।

এর পাশাপাশি একটা প্রোফর্মা তৈরি করা হয়েছে যেখানে সরকারের প্রতিটা দফতরের প্রতিটা প্রকল্পের বিষয়ে লেখা রয়েছে। সেই তালিকা ধরে ধরে ফিলাপ করতে হবে, লিখতে হবে কোন কাজ কি অবস্থায় রয়েছে। কত শতাংশ কাজ হয়েছে। কাজ শেষ হলে সেটা যেমন লিখতে হবে তেমনি কাজ শেষ না হলে তার কারণ কি সেটাও উল্লেখ করতে হবে ফর্ম্যাটে।

মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষোভ প্রকাশ ও মুখ্যসচিবের বৈঠক ডাকা প্রসঙ্গে অতিরিক্ত মুখ্য সচিব পদমর্যাদার এক আধিকারিক জানালেন, “এটা রুটিন বৈঠক। তবে হ্যাঁ, মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষোভ প্রকাশের যথেষ্ট কারণ রয়েছে। শিলান্যাস হ‌ওয়ার ছয় বছর বা আট বছর পরেও কাজ শেষ না হলে মুখ্যমন্ত্রীর তো রাগ হবেই।” একটি প্রধান দফতরের সঙ্গে যুক্ত থাকা আরেক আমলার মত, “প্রশাসনিক দীর্ঘসূত্রতা অনেক সময় সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। ফলে যে উদ্দেশ্যে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী কোনো একটি প্রকল্পের শিলান্যাস করেছিলেন, সময়ে সেই কাজ শেষ না হ‌ওয়ার ফলে শুধু যে সেই উদ্দেশ্য ব্যহত হয় তা নয়, কাজের ব্যয় বরাদ্দ‌ও ক্রমশঃ বাড়তে থাকে। এইটাই আটকাতে চাইছেন মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী।”