Date : 2024-03-29

জিটিএ বোর্ড চালাতে অর্থ সহ একগুচ্ছ দাবি। নবান্নের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক সারলেন অনীত থাপা।

সঞ্জু সুর, সাংবাদিক ঃ সদ্য গত সপ্তাহে জিটিএ-র চিফ এক্সিকিউটিভ পদে শপথ নিয়েছেন অনীত থাপা। তারপর‌ই শুক্রবার নবান্নে বৈঠক করলেন সরকারের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে। বৈঠকে সুষ্ঠুভাবে বোর্ড চালাতে বেশকিছু দাবিদাওয়া জানিয়েছেন তিনি।

গত ১৪ জুলাই দার্জিলিং এর ভানু ভবনে রাজ্যপালের উপস্থিতিতে জিটিএ চিফ এক্সিকিউটিভ পদে শপথ নেন বিজিপিএ নেতা অনীত থাপা। তার আগের দিন অর্থাৎ ১৩ তারিখ দার্জিলিং চৌরাস্তায় এক অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন জিটিএ-র চিফ এক্সিকিউটিভ যিনি হবেন তিনি যেন পাহাড়ের উন্নয়নের বিষয় নিয়ে মুখ্যসচিবের সঙ্গে দেখা করেন। সেই মতোই এদিন নবান্নে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী, স্বরাষ্ট্র সচিব বি পি গোপালিকা, অর্থ সচিব মনোজ পন্থ ও দার্জিলিং এর জেলাশাসক তথা জিটিএ-র প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি এস পোনামবালাম এর উপস্থিতিতে বৈঠক হয়।

সূত্রের খবর বৈঠকে বেশ কিছু দাবিদাওয়া জানিয়েছেন অনীত থাপা। গত পাঁচ বছর কোনো জিটিএ বোর্ড ছিলো না। এখন নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন বোর্ড গঠিত হয়েছে। আগামি পাঁচ বছর এই বোর্ডকে কাজ করতে হবে। ফলে বোর্ড চালানোর জন্য অর্থের প্রয়োজন। রাজ্য সরকার‌ও সেই অর্থ দিতে প্রস্তুত। তবে বোর্ড পরিচালনার অর্থ বরাদ্দের পাশাপাশি অনীত থাপা যে দাবিগুলো করেছেন সেই সম্পর্কে সমস্ত দিক বিবেচনা করে মুখ্যমন্ত্রীর অনুমোদন সাপেক্ষে‌ই সরকার সিদ্ধান্ত নেবে বলে নবান্ন সূত্রে খবর। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক অর্থ ছাড়া আর কি কি দাবি জানিয়েছেন অনীত থাপা।

১) জিটিএ-র অধীনে গ্রুপ বি, সি ও ডি কর্মি নিয়োগের জন্য জিটিএ আইনের ৫৪(২) ধারা অনুযায়ী ‘সাব‌অর্ডিনেট সার্ভিস সিলেকশন বোর্ড’ গঠন করতে হবে। এছাড়া গ্রুপ বি, সি ও ডি এর ক্ষেত্রে নিয়োগ সংক্রান্ত নীতি তৈরিতে জোর।

২) জিটিএ এলাকায় একটি ‘পর্যটন উন্নয়ন কর্পোরেশন’ তৈরি করতে হবে। পাশাপাশি রোহিনী ট্যুরিজিম কমপ্লেক্স থেকে কার্শিয়ং এর গিদ্দাপাহাড় পর্যন্ত যে রোপ‌ওয়ে নির্মান কাজ চলছে তারজন্য অতিরিক্ত প্রায় পাঁচ কোটি টাকা দাবি করা হয়েছে। এই টাকা মূলতঃ জিএসটি মেটানোর জন্য নির্মানকারী সংস্থাকে দিতে হবে কারণ যখন ২০১৪ সালে নির্মান চুক্তি হয়েছিলো তখন জিএসটি ছিলো না।

৩) জিটিএ এলাকার জন্য পৃথক স্কুল সার্ভিস কমিশন গঠন।

৪) প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের অনুমোদন।

৫) সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতর কে সম্পূর্ণভাবে জিটিএ-র কাছে হস্তান্তর।

৬) পঞ্চায়েত নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত পঞ্চায়েতের বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা যাতে পাহাড়ের মানুষ পান তার জন্য একজন ডেডিকেটেড অফিসার নিয়োগ। ১১২ টা গ্রাম পঞ্চায়েত ও ৯ টি পঞ্চায়েত সমিতির কাজের জন্য অফিসার নিয়োগ।

৭) জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের জলস্বপ্ন প্রকল্পের কাজ জিটিএ কে হস্তান্তর।

৮) দিল্লিতে গোর্খা ওয়েলফেয়ার সেন্টার স্থাপন।

৯) জিটিএ-র চুক্তিভিত্তিক কর্মিদের স্থায়ী করণ।

১০) ২০০৮ এর এপ্রিল থেকে ২০১১ জুলাই পর্যন্ত তৎকালীন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার ডাকা অসহযোগ আন্দোলনের ফলে যারা বিদ্যুতের বিল জমা দিতে পারেন নি তাদের বিদ্যুতের বিল বকেয়া থাকায় প্রায় ২৩৫ কোটি টাকা জরিমানা ধার্য্য করা হয়েছে। পাহাড়ের প্রায় ১ লক্ষ ৩৫ হাজার ৫০০ জন উপভোক্তাকে এই জরিমানা ধার্য্য করা হয়েছে। সহানুভূতির সঙ্গে বিচার করে এককালীন কিছু জরিমানা নিয়ে এই বিষয়টি মিটিয়ে ফেলার আবেদন করা হয়েছে।

১১) জিটিএ-র অন্তর্ভুক্ত দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলায় ‘বাংলা আবাস যোজনা’য় বাড়ি তৈরির দিকে নজর দিতে হবে বলে দাবি করা হয়েছে।‌