Date : 2024-04-29

করোনা অতিমারী কাটিয়ে ছন্দে ফিরল পুরীর রথযাত্রা

মাম্পি রায়, সাংবাদিক : করোনা অতিমারী কাটিয়ে ছন্দে ফিরল পুরীর রথযাত্রা। প্রত্যেকবারই লক্ষ লক্ষ ভক্তের সমাগমে টান পড়ে পুরীর রথের রশিতে। তাতে চড়েই মাসির বাড়ি রওনা দেন জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা। করোনাভাইরাস সংক্রমণের জেরে সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশে গত দুবছর খানিকটা ফিকে হয়েছিল পুরীর রথযাত্রা উৎসব। সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে ভক্তদের জমায়েতও বন্ধ রাখা হয়েছিল। শুধুমাত্র সেবায়েত এবং কিছু ভক্ত উপস্থিতিতে হয়েছিল রথযাত্রা উৎসব। দুবছর পর পুরনো ভক্তসমাগমের ছবি ফিরল পুরীর রথযাত্রায়। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের কথা মাথায় রেখে কড়া পদক্ষেপ করেছে নবীন পট্টনায়েকের সরকার। প্রশাসন সূত্রে খবর, সম্পূর্ণ টিকাকরণ না হলে পুরীতে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না কাউকে। সেজন্য রেলস্টেশন, বিমানবন্দর, বাস টার্মিনাসে বিশেষ কাউন্টার খোলা হয়েছে। সেখানেই প্রত্যেক যাত্রীর টিকাকরণের শংসাপত্র পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। টিকাকরণ সম্পূর্ণ না হলে, তাঁদের তৎক্ষণাৎ টিকা দেওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের ইতিহাস
পুরাণ অনুযায়ী, সত্যযুগ থেকে চলে আসছে পুরীর রথযাত্রা
বিষ্ণু মন্দির গড়ার স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন ওড়িশার রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন
তবে মন্দির কেমন হবে সে সম্পর্কে ধারণা ছিল না রাজার
সেজন্য ব্রহ্মার আরাধনা শুরু করেন ইন্দ্রদ্যুম্ন
ব্রহ্মার আদেশে বাঁকেমুখ থেকে মূর্তি তৈরির জন্য নিমকাঠ পেয়েছিলেন রাজা
মূর্তি তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয় বিশ্বকর্মাকে
নিজের পরিচয় গোপন রেখে রাজা ইন্দ্রদ্যুম্নর কাছে গিয়েছিলেন বিশ্বকর্মা
শর্ত ছিল, মূর্তি তৈরির কাজ সম্পূর্ণ না হওয়া, পর্যন্ত রুদ্ধদ্বার খোলা যাবে না
সপ্তাহ, মাস, বছর পেরিয়ে যাওয়ায় অধৈর্য্য হয়ে সেই দরজা খুলে ফেলেন রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন
অসম্পূর্ণ রয়ে যায় বিগ্রহ তৈরির কাজ
বিষ্ণুর জগন্নাথদেব অবতারকেই পুজোর নির্দেশ দেন ব্রহ্মা
তিনি আরও বলেন, সারা বিশ্ব থেকে সেই বিগ্রহ দেখতে ছুটে আসবেন ভক্তরা
সেই নির্দেশ মেনে জগন্নাথের পুজো শুরু করেন রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন
রথযাত্রার দিন সকালে মঙ্গলারতি সহ বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠানের পর রথে তোলা হয় জগন্নাথ বলরাম ও সুভদ্রার বিগ্রহ। শোভাযাত্রার মাধ্যমে এই তিন বিগ্রহকে মন্দিরের বাইরে আনার প্রক্রিয়াকে বলা হয় পহন্ডি। তারপর শুরু হয় বিগ্রহের রথে আরোহণের পর্ব। এরপর সোনার ঝাঁটা দিয়ে রাস্তা পরিস্কার করেন রাজা। ছেড়াপহরা নামে পরিচিত এই প্রক্রিয়া। তারপর মাসির বাড়ির উদ্দেশে এগিয়ে যায় জগন্নাথ বলরাম ও শুভদ্রার রথ।