Date : 2024-05-01

সিভিল সার্ভিসের প্রস্তুতি। মুখ্যমন্ত্রীর প্রচেষ্টায় রাজ্যজুড়ে স্ক্রিনিং টেস্ট দিলেন কয়েক হাজার ছাত্রছাত্রী।

সঞ্জু সুর, সাংবাদিক : দেশের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক চাকুরিতে বরাবর‌ই পিছিয়ে আমাদের রাজ্যের ছেলেমেয়েরা। যোগ্য প্রশিক্ষণের অভাব ও উৎসাহ, দুটো বিষয়ে অজ্ঞতা‌ই এর মূল কারণ বলে মনে করেন অনেকে। আইএ‌এস বা আইপিএস পদে বাংলাভাষী বা ভূমিপুত্রদের সংখ্যা বেশি না হ‌ওয়া নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনেকবার দুঃখ প্রকাশ করেছেন। কেন বাংলার ছেলে মেয়েরা এই ধরনের প্রেস্টিজিয়াস চাকরিকে ভবিষৎ বলে মনে করে না তা নিয়ে নিজের খেদ ও ব্যক্ত করেছেন তিনি। পাশাপাশি বাংলার ছেলেমেয়েদের এই বিষয়ে উৎসাহ দিতে ২০১৪ সালে একটা স্বপ্ন দেখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মূলতঃ রাজ্যের ছেলেমেয়েদের সর্বভারতীয় ইউপিএসসি(UPSC) পরীক্ষার জন্য উৎসাহিত করা ও সফল হ‌ওয়ার জন্য ওই বছরেই তিনি চালু করেছিলেন সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর সিভিল সার্ভিস স্টাডি সেন্টার।

সেই বছর থেকেই শুরু হয় প্রশিক্ষণের কাজ। ফল পাওয়া যায় অচিরেই। সল্টলেকে অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে প্রশিক্ষণ নিয়ে শুভম শুক্লা, তমালি সাহা বা ময়ুরী মুখার্জী সহ এই ক’বছরে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজন সর্বভারতীয় স্তরে চাকরিতে যোগ দিয়েছেন। এই সাফল্যে উৎসাহিত মুখ্যমন্ত্রী কিছুদিন আগে বাঁকুড়ায় জেলা প্রশাসনিক বৈঠক চলাকালীন মুখ্যসচিব কে নির্দেশ দিয়েছিলেন শুধু কলকাতা নয়, এবার জেলার ছেলেমেয়েদের জন্যেও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। সেই মোতাবেক কিছুদিন আগেই রাজ্যের প্রতিটা জেলায় সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর সিভিল সার্ভিস স্টাডি সেন্টারের উদ্বোধন‌ও করেছেন তিনি। রবিবার ৭ আগষ্ট রাজ্যের সবকটি জেলার সেইসব স্টাডি সেন্টারগুলোতে একযোগে পরীক্ষা নেওয়া হল।

মূলতঃ জেলার ছাত্র-ছাত্রী, যারা ইউপিএসসি পরীক্ষায় বসতে আগ্রহী তাদের জন্য এই স্ক্রিনিং টেস্ট নেওয়া হল। সূত্রের খবর, রাজ্য জুড়ে প্রায় আট হাজার ছাত্র-ছাত্রী প্রাথমিকভাবে আবেদন করেছিলো। ঝাড়াই বাছাই করার পর তাদের অ্যাডমিট কার্ড পাঠানো হয়। মোট ১৫০ নম্বরের পরীক্ষা যার মধ্যে ১০০ নম্বর হল লিখিত পরীক্ষা ও ৫০ নম্বর হল ইন্টারভিউ। লিখিত পরীক্ষায় যারা পাশ করবেন তাদের ইন্টারভিউয়ে ডাকা হবে। প্রতিটি জেলায় যোগ্য ৫০ জন ছাত্র-ছাত্রীকে আগামি দশ থেকে বারো মাস প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। রবিবার হ‌ওয়া এই পরীক্ষায় কয়েকটি জেলার পরিসংখ্যান। মূর্শিদাবাদ জেলায় ৩৮৯ জন যোগ্য আবেদনকারীর মধ্যে পরীক্ষায় বসেন ২৯৮ জন, মালদহ জেলায় ৭৭৪ জন আবেদনকারীর মধ্যে পরীক্ষায় বসেন ৫৩৯ জন, আলিপুরদুয়ার জেলায় ১৬৯ জন রবিবারের পরীক্ষায় বসেন, এই জেলায় যোগ্য আবেদনকারীর সংখ্যা ছিল ২৫৬ জন। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় ১১৫ জন আবেদন করেন তবে রবিবার ৮৬ জন পরীক্ষা দিতে এসেছিলেন। ঝাড়গ্রাম জেলায় ১১৪ জন আবেদন করেন যার মধ্যে রবিবার স্ক্রিনিং টেস্ট দেন ৮৯ জন। বাঁকুড়া জেলার ক্ষেত্রে ২৮৮ জন যোগ্য আবেদনকারীর মধ্যে ২১৩ জন, হুগলী জেলার ১৮২ জন যোগ্য আবেদনকারীর মধ্যে ১২১ জন, হাওড়া জেলায় ৩৭৬ জন আবেদনকারীর মধ্যে রবিবারের পরীক্ষায় বসেন ২৫৮ জন। এই লিখিত পরীক্ষায় যারা পাশ করবেন তাদের ইন্টারভিউতে ডাকা হবে।