Date : 2024-04-26

মা তুঝে সালাম -জাতীয় পতাকাকে সম্মান দিতে সর্বদা প্রস্তুত প্রিয়রঞ্জন সরকার। ১৪ বছর ধরে জাতীয় পতাকা কুড়োচ্ছেন হাওড়ার এই যুবক।

শাহিনা ইয়াসমিন, সাংবাদিকঃ ভারতমাতার সম্মান বাঁচাতে প্রাণ দিতে পিছপা হন না দেশের জওয়ানরা। তেমনি এক ভারত সন্তান আছেন যিনি ভারতমাতার অসম্মান সহ্য করতে পারেন না। সীমান্তে লড়াই তিনি করেন না। তবে পথে ঘাটে নর্দমায় দেশের জাতীয় পতাকা পড়ে থাকতে দেখলে ঝাঁপিয়ে পড়েন তার সম্মান বাঁচাতে।
সাধারণতন্ত্র দিবস এবং স্বাধীনতা দিবস উদযাপন শেষ হওয়ার পরে রাস্তা ঘাটে কখনো মাঠে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায় দেশের জাতীয় পতাকা। হাজারো মানুষের পায়ের তলায় গাড়ির তলায় পিষ্ট হয় ভারতীয় পতাকা। সেই সব ভুলুন্ঠিত জাতীয় পতাকা তুলে রাখেন ৩৫ বছর বয়সী এক যুবক। নাম প্রিয়রঞ্জন সরকার।

হাওড়া বালির নিশ্চিন্দা এলাকার বাসিন্দা। ওই যুবক এলাকায় মোনু নামেই পরিচিত। রাস্তা, ঝোপেঝাড়ে বা নর্দমায় যেখানেই জাতীয় পতাকা পড়ে থাকতে দেখেন তা সযত্নে তুলে রাখেন নিজের ব্যাগে। জুতো খুলে সম্মানের সহিত সেই সব পড়ে থাকা জাতীয় পতাকা তুলে রাখেন। ১৪ বছর ধরে জাতীয় পতাকা কুড়োচ্ছেন হাওড়ার বাসিন্দা প্রিয়রঞ্জনবাবু। তাঁকে অনুপ্রাণিত করেছেন তাঁর মা। সালটা ২০০৮। তখন সে বেশ ছোট। রাস্তায় জাতীয় পতাকা পড়ে থাকতে দেখেন, তাঁর মা সেই জাতীয় পতাকা নমস্কার করে রাস্তা থেকে তুলে রাখেন। সেই দিন থেকেই প্রিয়রঞ্জনবাবু এই কাজটি করে যাচ্ছেন ভারতমাতাকে সম্মান জানাতে।

এই সব জাতীয় পতাকা সংগ্রহ করে তাঁর বাড়ির ট্রাঙ্কে তুলে রাখেন প্রিয়রঞ্জনবাবু। ভারতমাতার ছবি ও জাতীয় পতাকা লাগানো ট্রাঙ্কের গায়ে। ২০০৮ সাল শুরু করে থেকে আজ পর্যন্ত প্রায় ৬০ হাজারের উপরে জাতীয় পতাকা সংগ্রহ করেছেন তিনি। এই কাজে বর্তমানে তাঁকে সাহায্য করেন পাড়ার ক্লাব সদস্যরাও। এই কাজের জন্য তাঁকে কটুক্তিও কম শুনতে হয়নি। জাতীয় পতাকা সকল নাগরিকের কাছে মাতৃতুল্য। তাঁর অপমান মানে মায়ের অপমান। এই মর্মে বিশ্বাসী প্রিয়রঞ্জন। তাঁর জন্মগত বাক সমস্যা থাকলেও তিনি নিজেকে কারোর থেকে কম মনে করেন না। তাঁর কাজই তার হয়ে কথা বলে। সেখানেই জিত্ প্রিয়রঞ্জনবাবুর।