Date : 2024-04-27

BJP Nabanna Abhiyan : ইউরিনে বের হচ্ছে ব্লাড। দ্বিতীয় হুগলি সেতুতে বন্ধ গাড়ি চলাচল। মুসকিল আসান পুলিশ!

সঞ্জু সুর, সাংবাদিক ঃ বিজেপির নবান্ন অভিযানের দিন একদিকে যেমন কড়া পুলিশের পুলিশগিরি দেখা গেল নবান্ন সহ হাওড়া, সাঁতরাগাছি বা কলেজ স্ট্রিট চত্বরে, ঠিক তেমনি মানবিক পুলিশের পুলিশগিরিও দেখা গেল নবান্ন চত্বরে। গাড়ি না পেয়ে অসহায় রোগী প্রসেনজিৎ হোক বা স্কুলের পুলকার না পাওয়া সৌমিলি, তৃষ্ণার মুসকিল আসান হলেন সেই পুলিশ‌ই।

ইউরিন ইনফেকশন এর কারণে ব্লাড বের হচ্ছে। তাই গার্ডেনরীচ রেল‌ওয়ে হাসপাতালে যাওয়ার জন্য হাওড়ার দেউলটির বাড়ি থেকে সেই সকালে বের হয়েছিলেন প্রসেনজিৎ দাস। সঙ্গী আরো দুইজন। নিরুপদ্রবেই পৌঁছেছিলেন সাঁতরাগাছি। কিন্তু তারপর থেকেই শুরু সমস্যা। প্রথম তো কোনো বাস নেই, সব বন্ধ। নিজেরা যে আলাদা গাড়ি ভাড়া করে যাবেন, নেই সেই উপায়ও।

প্রসেনজিৎ দাস

অনেক বেশি টাকা দিয়ে একটা টোটো ভাড়া করে কোনোমতে এসে পৌঁছালেন নবান্নের কাছে। কিন্তু বিজেপির নবান্ন অভিযানের কারণে সেখানে তখন পুলিশে পুলিশে ছয়লাপ। মাছি গলার জো নেই। আর টোটো নিয়ে ব্রিজের ওপারে যাবেনই বা কিভাবে, কাউকেই তো হেঁটেও যেতে দেওয়া হচ্ছে না। বিদ্যাসাগর সেতুতে যান চলাচল তখন সম্পূর্ণ বন্ধ।

পুলিশের এক বড় কর্তা অবশ্য সব শুনে ও কাগজ দেখে অনুমতি দিলেন সেতু পারাপারের, তবে হেঁটেই পার করতে হবে সেতু। ফলে হাঁটা শুরু। বেলা সাড়ে বারোটা নাগাদ সেতুর নবান্নের দিক থেকে হাঁটা দিলেন প্রসেনজিৎ সহ তিনজন। আগে ওপারে যেতে হবে, তারপর নাহয় একটা গাড়ির ব্যবস্থা করে গার্ডেনরীচ হাসপাতাল। তবে অসুস্থ প্রসেনজিৎ এর সহায় হলেন টোল প্লাজার কাছে থাকা পুলিশ কর্মিরা। তার কাছে সব শুনে নিজেদের গাড়িতেই প্রসেনজিৎ কে গার্ডেনরিচ হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করে পুলিশ।

প্রসেনজিৎ এর আত্মীয়

এদিকে এমন কষ্টকর অবস্থার মধ্যে না পড়লেও কিছুটা অসহায় অবস্থায় পড়েছিলো সেন্ট থমাস গার্লস স্কুলের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী তৃষ্ণা দাস। এদিন লিটারেচার পরীক্ষা ছিলো তার। তাই বাধ্য হয়ে স্কুলে যাওয়া। কিন্তু ফেরার সময় দেখে ব্রিজে যান চলাচল বন্ধ। তবে হেস্টিংস এর সামনে পুলিশ কাকুদের অনুরোধ করায় তারাই নিজেদের গাড়িতে তৃষ্ণা ও তার মা’কে টোল প্লাজা পর্যন্ত পৌঁছে দেন।

তৃষ্ণা দাস ও তার মা

ঠিক এমনই গল্প শান্তনু সামন্তর। মেয়ে সৌমিলি সামন্ত কলকাতার লরেটো হাউসের ক্লাস সিক্সের ছাত্রী। আজ ছিলো হিন্দি পরীক্ষা। সকালে স্কুলের পুলকারে স্কুলে পৌঁছায় সে। কিন্তু ফেরার পথে স্কুলের পুলকার তাঁকে টোল প্লাজা পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার ছাড়পত্র পায়।

ফলে বাবা শান্তনু সামন্ত সৌমিলিকে নিয়ে টোল প্লাজা থেকে হেঁটেই বাড়ি পথে। সৌমিলির কথায় রাস্তায় ঝামেলা কিছু দেখিনি তবে গাড়ি নেই একদম আর প্রচুর পুলিশ রয়েছে রাস্তায়।