শাহিনা ইয়াসমিন, সাংবাদিক: আলোক মালায় সেজে উঠছে সারা ভারতবর্ষ। ইতিমধ্যেই বহু মানুষ সোনার দোকানে ভিড় জমিয়েছেন, সোনা কিংবা রুপো কিনবেন বলে। কেউ বা মাতবেন শ্যামা মায়ের আরাধনায় আবার কেউ বা লক্ষ্মী – গণেশের বন্দনায়। দীপাবলির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে ধনতেরাস। যাকে বলা হয় ধন-ত্রয়োদশী কিংবা ধন্বন্তরি ত্রয়োদশী। এই দিন থেকেই টানা ৫ দিনব্যাপী শুরু হয় দীপাবলি উৎসব। মূলত অবাঙালি ঘরে ধনতেরাসের বহুল প্রচলন থাকলেও বর্তমানে বহু বাঙালি এই উৎসবে মেতে ওঠেন। দীপাবলিতে নিষ্ঠা ভরে লক্ষ্মী-গণেশের পুজোর আয়োজন করেন। আবার অনেকে সম্পদের দেবতা কুবেরকেও আরাধনা করেন। কিন্তু মানুষ ধনতেরাসে এত উদগ্রীব হয়ে কেন সোনা-রুপো কেনেন? কেনই বা ধনতেরাসের সময় ভিড় বাড়ে গহনার দোকানগুলিতে? এর পিছনে রয়েছে বেশ কয়েকটি কারণ।
•সোনা-রুপোকে মা লক্ষ্মীর সঙ্গে তুলনা করা হয়। লোককথা এবং একাধিক পুরাণ কাহিনী অনুযায়ী, ধনতেরাসের শুভ লগ্নে মূল্যবান ধাতু বাড়িতে আনলে সংসারের শ্রীবৃদ্ধি ঘটে।
•পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী, দুর্বাসা মুনির অভিশাপে লক্ষ্মীহীন হয়ে গিয়েছিল স্বর্গলোক। লক্ষ্মী দেবীকে ফিরিয়ে আনতে রাক্ষসদের সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছিল দেবতাদের। যেদিন দেবী লক্ষ্মী ফিরে আসেন সেদিন ছিল ধনতেরাস। তাই মনে করা হয়, ধনতেরাসে দেবী লক্ষ্মী মর্ত্যলোকে ফিরে আসেন এবং সবার গৃহে অধিষ্ঠান করেন।
•ধনতেরাস সোনা কেনার রীতি নিয়ে একটি কাহিনী প্রচলিত আছে। জানা যায় যমরাজের হাত থেকে হিমরাজার ছেলেকে বাঁচাতে অভিনব উপায় বার করেন তার স্ত্রী। তিনি যমরাজকে বোকা বানাতে ঘরের চারিদিকে সোনা, রুপো, নানান ধনরত্ন, প্রদীপের আলো আর বাসনপত্রে ভরিয়ে রেখেছিলেন। এসব কিছুর মিলেমিশে তৈরি হয় এক উজ্জ্বল আলো। ওই আলোয় চোখ ধাঁধিয়ে যায় যমরাজের। স্বাভাবিকভাবেই তিনি দিকভ্রষ্ট হয়ে লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হন। অপরদিকে মৃত্যুর মুখ থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন হিমরাজার ছেলে।